|
|
|
|
ঢাকার চড়া দামে আটকাচ্ছে ইলিশ, চিঠি দিলেন মমতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কূটনীতির টেবিলে আবার ইলিশ।
বাংলাদেশ সরকার দেশের বাজারে ইলিশের জোগান ঠিক রাখার জন্য বেশ চড়া দরেই ন্যূনতম রফতানি মূল্য বেঁধে দিয়েছে। আর এ দেশের মাছ আমদানিকারক সংস্থাগুলোর যুক্তি, বাংলাদেশের নির্ধারিত দামে পদ্মার ইলিশ কিনে খুচরো বাজারে তা বিক্রি করা সম্ভব নয়। যে টুকু আনা যাচ্ছে, তাতে এ রাজ্যের খুচরো বাজারে ইলিশের দাম প্রতি কেজি ৬০০ টাকায় গিয়ে ঠেকছে। সমস্যা যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের বাংলাদেশ সফরের সময় তিস্তা জল বণ্টন চুক্তির পাশাপাশি ইলিশও আলোচ্য হয়ে উঠতে পারে।
রাজ্য জুড়ে ইলিশের তীব্র আকালের কথা জানতে পেরে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঢাকা সফরে ইলিশের অত্যধিক রফতানি মূল্য নিয়ে তিনি যাতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেন, সে জন্য মমতা অনুরোধ জানিয়েছেন। ইউপিএ জোটসঙ্গী তৃণমূলের নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর এই আবেদন প্রধানমন্ত্রীর দফতর যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে বলে জানা গিয়েছে।
রাজ্যের ‘হিলসা ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি অতুল চন্দ্র দাস বলেন, “রাজ্যের মানুষের চাহিদা মেটাতে প্রতি দিন ৫০ টনের মতো ইলিশের দরকার। সেখানে বাংলাদেশ সরকার যে দাম ঠিক করে দিয়েছে, সেই দরে ইলিশ আমদানি করতে গেলে বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে ব্যবসায়ীরা। তাই ইলিশ আমদানি এক প্রকার বন্ধই।”
শেখ হাসিনার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাল। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা দায়িত্ব নেওয়ার পর তাঁকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান হাসিনা। তার পরে তাঁকে ঢাকায় যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে দূত হিসাবে পাঠিয়েছেন নিজের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টাকেও। এই অবস্থায় মমতার অনুরোধ শেখ হাসিনা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবেন বলে আমদানিকারীদের আশা। তাঁরা ইলিশ আমদানির সমস্যা বোঝাতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করবেন।
২০০৯ সালে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার দল আওয়ামি লিগ ক্ষমতায় এলে আশায় বুক বেঁধেছিল এ রাজ্যের ইলিশ আমদানিকারক সংস্থাগুলি। আমদানিকারীদের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় গিয়ে বাংলাদেশ সরকারের নির্দিষ্ট মন্ত্রকের সঙ্গে দেখা করে ইলিশের রফতানি মূল্য কমানোর বিষয়ে আলোচনাও করেন। বিষয়টি জানানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়কেও। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। গত প্রায় তিন বছর ধরে ইলিশের চড়া রফতানি মূল্যের কারণে পদ্মার ইলিশ প্রায় অধরা হয়ে গিয়েছে এ রাজ্যে।
বাংলাদেশ সরকারের যুক্তি, দেশের বাজারেই ইলিশের দাম চড়া। তাই বাংলাদেশের মানুষের কথা ভেবে রফতানির উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে রফতানি মূল্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের নির্ধারিত দামে এক কেজির একটি ইলিশের ন্যূনতম রফতানি মূল্য ৬ ডলার। দেড় কেজি ওজনের রফতানি মূল্য ৮ ডলার। তার বেশি ওজন হলে রফতানি মূল্য হবে ১২ ডলার। অর্থাৎ ভারতীয় টাকায় এক কেজি ওজনের একটি ইলিশের দাম পড়ছে ২৬৪ টাকা (সোমবারের হিসাবে এক ডলারের দাম ৪৪ টাকা ধরে)। তার সঙ্গে অন্য আনুষঙ্গিক মূল্য ধরলে আমদানির খরচ আরও বাড়বে।
ফলে পদ্মার ইলিশ দেদার খেতে এ পার বাঙালির ভরসা আপাতত মনমোহনের কূটনীতি! |
|
|
|
|
|