সুশান্তর পৈতৃক বাড়ির কাছে মাটি খুঁড়ে হাড় ও খুলি
বেআইনি অস্ত্রের পর এ বার মড়ার খুলি আর হাড়গোড়। ফের নিশানায় সিপিএম।
গড়বেতার সিপিএম বিধায়ক সুশান্ত ঘোষের পৈতৃক বাড়ির গ্রামের কাছেই মাটি খুঁড়ে খুলি-হাড়গোড় উদ্ধার ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় শনিবার। গড়বেতা ৩ ব্লকের উড়াসাই গ্রাম পঞ্চায়েতের মল্লিকডাঙা গ্রামের দাসেরবাঁধে পাওয়া যায় ওই হাড়গোড়। মল্লিকডাঙার পাশের গ্রাম বেনাচাপড়া। দূরত্ব প্রায় ১ কিলোমিটার। সেখানেই সুশান্তবাবুর আদি বাড়ি। স্বভাবতই এই ঘটনায় জড়িয়ে যায় সিপিএমের এই দাপুটে নেতার নাম। রটে যায়, সুশান্তবাবুর বাড়ির কাছেই মিলেছে নরকঙ্কাল। যদিও সুশান্তবাবু নিজে চন্দ্রকোনা রোডে থাকেন। আর গ্রামের বাড়িতে থাকেন তাঁর মা ও ভাইয়ের পরিবার। এ দিন তাঁর ভাই এলাকায় ছিলেন না। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন দুপুরে আলমপুরের বাসিন্দা স্থানীয় সিপিএম নেতা মদন সাঁতরার উপর চড়াও হয় গ্রামের লোকজন। অভিযোগ, মদন সিপিএমের ‘সশস্ত্র শিবিরে’ যুক্ত ছিলেন। মদনই দাসেরবাঁধে খালের ধারে একটা জায়গা দেখিয়ে দেন। সেখানে মাটি খুঁড়ে হাড়গোড় মেলে। প্রথমে গ্রামের লোকই মাটি খুঁড়তে শুরু করেন। পরে যৌথ বাহিনী আসে। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠি বলেন, “৩টি মাথার খুলি ও কিছু হাড়গোড় পাওয়া গিয়েছে। কী ভাবে এ সব ওখানে এল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের স্থানীয় বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোর বক্তব্য, “ক্ষমতায় থাকাকালীন সিপিএম বহু লোককে খুন করে দেহ লোপাট করেছে। আমরা চাই গোটা ঘটনার তদন্ত করে দেখুক পুলিশ।” আর সিপিএমের চন্দ্রকোনা রোড জোনাল সম্পাদক সনাতন মাঝির প্রতিক্রিয়া, “মল্লিকডাঙায় কিছু হাড়গোড় পাওয়া গিয়েছে বলে শুনেছি। বিস্তারিত না জেনে কিছু বলতে পারব না।” বহু বার চেষ্টা করেও সুশান্তবাবুকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
দেহাবশেষ উদ্ধার হয়েছে ঝাড়গ্রামেও। মাওবাদী সন্দেহে ধৃত সঞ্জিত পাতরকে জেরা করে এ দিন নহরিয়ার জঙ্গলে মাটি খুঁড়ে দেহাবশেষ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দেহাবশেষ পাটাশিমুল অঞ্চলের লোহাজালিয়ার চাষি সুকুমার পড়িয়ারি ও রাধাগোবিন্দপুরের মুদি দোকানি শুভব্রত পড়িয়ারির বলে জানিয়েছে সঞ্জিত। গত বছর অক্টোবরে নিখোঁজ হন সুকুমারবাবু ও তাঁর সম্পর্কিত ভাইপো শুভব্রত। সে সময় দু’জনকে দলীয় সমর্থক বলে দাবি করেছিল সিপিএম। তবে তাঁদের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছিল, কেউই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। এ দিন ঝাড়গ্রাম হাসপাতালের পুলিশ মর্গে সুকুমারবাবুর দেহাবশেষ শনাক্ত করেন পরিজনেরা। তবে শুভব্রতের বাড়ির লোক তা শনাক্ত করতে পারেননি। ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার (অপারেশন) মুকেশ কুমার বলেন, “প্রয়োজনে ডিএনএ পরীক্ষা করানো হবে।”
পাশাপাশি অস্ত্র উদ্ধারও চলছে। শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের আনন্দপুরের মোহনপুর থেকে ৭টি বন্দুক ও কিছু কার্তুজ উদ্ধার হয় মাটি খুঁড়ে। কেশপুরের দামোদরচকে মিলেছে একটি বন্দুক। মণিদহে সিপিএম কর্মী গোপাল মাইতিরবাড়ি সংলগ্ন এলাকা থেকে দু’টি বন্দুক উদ্ধার হয়েছে। শুক্রবারই গড়বেতার সিপিএম নেতা তপন ঘোষের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। এক সিপিএম কর্মীর বাড়ির উঠোন থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের পরেই উত্তেজিত জনতা তপনবাবুর বাড়িতে হামলা চালায়। ওই ঘটনায় ৬ জনের নামে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন তপনবাবুর বাবা নির্মল ঘোষ। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

উদ্ধার হওয়া হাড়গোড়। নিজস্ব চিত্র

শনিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত হুগলি এবং পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ যৌথ অভিযান চালায় দুই জেলার সীমানা লাগোয়া গ্রামগুলিতে। হুগলির গোঘাট এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের চমকাইতলা-সহ বিভিন্ন গ্রামে বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে তল্লাশি চলে। গোঘাটের শান্তিপুর-সহ নানা জায়গায় সিপিএম কার্যালয়ের তালা ভেঙে তল্লাশি চলে। কর্ণপুরে সিপিএমের প্রাক্তন জোনাল সম্পাদক অভয় ঘোষের বাড়ির তালা ভেঙে তল্লাশি চালায় পুলিশ। সেখানে কিছু পাওয়া না গেলেও গোঘাটের তিলাটি গ্রামে পরিত্যক্ত জায়গায় একটি পাইপগান, একটি মাস্কেট ও ৩ রাউন্ড গুলি পাওয়া গিয়েছে।
বাঁকুড়ার ইন্দাসে গরিশুন্ডা গ্রামে সিপিএম কর্মীর বাড়ি থেকে একটি ছ’ঘরা পিস্তল উদ্ধার করেছে পুলিশ। তপন দাস ওই কর্মী পলাতক। এ দিন সকালে বিষ্ণুপুর থানার চৌবেতা গ্রামে বিষ্ণুপুর-মেদিনীপুর রাস্তার পাশের মাঠে একটি ওয়ান শটার বন্দুক পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে পুলিশ এসে তা উদ্ধার করে। এ দিন দুপুরে বর্ধমানের কেতুগ্রামের আমগোড়িয়ায় একটি দোকানের ভিতর থেকে দু’টি হাত কামান, ১৫টি হাত কামানের গুলি ও ১৪টি বোমা উদ্ধার হয়েছে।

First Page Medinipur Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.