|
|
|
|
বদ্রিরা বুঝিয়ে দিল রিজার্ভ বেঞ্চও তৈরি |
অশোক মলহোত্র |
টিভিতে ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচটা দেখার পর সবার আগে একটা কথা মনে হচ্ছে। ক্যারিবিয়ান সফরে সিনিয়রদের না যাওয়া নিয়ে মিডিয়ায় এই যে এত হইচই হল, তার বোধহয় কোনও দরকার ছিল না। আমাদের রিজার্ভ বেঞ্চ তো বেশ তৈরিই। কী ব্যাটিংয়ে, কী বোলিংয়ে। |
|
বদ্রিনাথের লড়াই। শপোর্ট অফ স্পেনে। -এপি |
অনেকে হয়তো বাড়াবাড়ি বলে মনে করবেন, কিন্তু আমি একটা ভবিষ্যদ্বাণী এখনই করে রাখতে পারি। টি-টোয়েন্টি ম্যাচটা যেমন হেলায় ১৬ রানে জিতে নিল রায়নার ভারত, ঠিক তেমনই ওয়ান ডে সিরিজটাও জিতবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনেক দিন ধরেই আর মহাশক্তিধরদের মধ্যে পড়ে না। আর শনিবার যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দেখলাম, তাতে খারাপই লাগছে। একে প্রতিভার অভাব। তার মধ্যে বোর্ডের সঙ্গে গেইলদের মতো প্রধান ক্রিকেটারদের ঝামেলা বেঁধে যাওয়ায়, টিমটা আরও ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছে। এই ক্যারিবিয়ানদের ক্ষমতা নেই ভারতের তরুণ দলেরও মহড়া নেওয়ার।
দু-তিনটে উদাহরণ দিলেই ব্যাপারটা বোঝা যাবে। ক্যারিবিয়ান উইকেটের আর সেই পুরনো দিনের গতি নেই। তার উপর এ দিন কুইন্স পার্ক ওভালের উইকেট দেখলাম বেশ স্লো। বল থেমে-থেমে আসছে। ওরা বোধহয় এ ধরনের পিচ বানিয়ে রেখে ভারতকে একটা ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। সাফল্য যে একেবারে পায়নি, বলা যাবে না। শুরুতে কোহলি-রায়নারা উইকেটের চরিত্র আন্দাজ করতে পারল না। পরপর কয়েকটা উইকেটও চলে গেল। আট ওভারের মধ্যে ৫৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়েছিল ভারতের। |
|
শেষ বেলার লড়াই। পোর্ট অফ স্পেনে হরভজন। -এপি |
যে কোনও টি-টোয়েন্টি ম্যাচে যা বেশ সঙ্কটজনক পরিস্থিতি। হাতে ওভার কমে আসছে, বল ঠিকঠাক মারা যাচ্ছে না। অনভিজ্ঞ দলের এই অবস্থায় হাবুডুবু খাওয়ার কথা। আর এখানেই আমি বাহবা দেব রায়নার টিমকে। সবার আগে বলতে হবে বদ্রিনাথের কথা। যত দিন যাচ্ছে, ও যেন ‘ক্রাইসিস ম্যান’ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলার সময় দেখেছি, এ দিনও একই জিনিস দেখলাম। চার উইকেট পড়ে গিয়েছে। কিন্তু কোনও হেলদোল নেই। বরং স্ট্রাইক রোটেট করে গেল। যা এই উইকেটে ভীষণ দরকার। একটা ভাল পার্টনারশিপের প্রয়োজন ছিল ভারতের। রোহিত শর্মাকে (২৬) নিয়ে সেটাও বদ্রি দিয়ে গেল দলকে। ৩৭ বলে ৪৩ করে যখন আউট হল, ভারত ততক্ষণে একটা ভদ্রস্থ স্কোরের দিকে এগোচ্ছে। আর ওর ইনিংসের জন্যই কিন্তু শেষ দিকে ইউসুফ-হরভজনদের থেকে অতগুলো ছক্কা আমরা দেখতে পেলাম। শেষ পাঁচ ওভারে সত্তরের উপর রান উঠল।
এই উইকেটে ১৫৯ তাড়া করতে গেলে একটা গেইল দরকার ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। বোর্ড কেন ওর সঙ্গে ঝামেলা করছে জানি না। কিন্তু এটা খুব পরিষ্কার, গোটা ওয়েস্ট ইন্ডিজে ওর দরের প্রতিভা আর নেই! আমি যখন আট বছর আগে ভারতীয় ‘এ’ দলের ম্যানেজার হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গিয়েছিলাম, তখনই দেখেছি ক্রিকেট নিয়ে উৎসাহ কেমন কমে আসছে। প্রতিভার অভাব। আর বলতেই হচ্ছে, এই ক্যারবিয়ান টিমটার কোনও ভবিষ্যত নেই। |
|
যত দিন গেইল, পোলার্ড, বা ডোয়েন ব্রাভোরা না দলে ফিরছে, ওদের পক্ষে জেতা মুশকিল। ডোয়েন ব্র্যাভোর মধ্যে তবু প্রতিভা আছে, কিন্তু লারার সঙ্গে তুলনা টানার আগে ওর শেখা উচিত লারা কী ভাবে অফস্পিনটা খেলত। আজ তো দেখলাম, হরভজন-অশ্বিনদের স্পিনের হদিশই পেল না ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আট ওভার যেতে না যেতেই আস্কিংরেট ১১ ছুঁয়ে ফেলল। ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ, বোলিং মাঝারি। ফিল্ডিংয়েও রায়নাদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে এই ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বরং খারাপই লাগল, ভিভ রিচার্ডসকে দিয়ে প্রথম বল খেলানোর ব্যাপারটা দেখে। নিছকই ক্রিকেট-বাজার ধরার ছক। কিন্তু যে দলে মশলা-ই নেই, সেখানে ভিভকে দিয়েও বিজ্ঞাপন করিয়ে কী লাভ?
|
ভারত |
পার্থিব ক স্যামুয়েলস বো স্যামি ২৬
শিখর ক ফ্লেচার বো স্যামি ৫
কোহলি ক হায়াত বো স্যামি ১৪
বদ্রিনাথ ক ফ্লেচার বো বিশু ৪৩
রায়না ক বার্নওয়েল বো স্যামি ২
রোহিত বো বার্নওয়েল ২৬
ইউসুফ ন.আ. ১৫
হরভজন ন.আ. ১৫
অতিরিক্ত ১৩
মোট (২০ ওভারে) ১৫৯-৬
পতন: ১৩, ৪৮, ৪৮, ৫৬, ১২৭, ১৩৪।
বোলিং: রামপল ৪-০-৩৮-০, রাসেল ২-০-২৬-০, স্যামি ৪-০-১৬-৪,
নার্স ৪-০-২৩-০, বিশু ৪-০-৩১-১, বার্নওয়েল ২-০-২৪-১।
|
ওয়েস্ট ইন্ডিজ |
ফ্লেচার বো মুনাফ ১১
সিমন্স ক কোহলি বো অশ্বিন ৯
ব্র্যাভো বো হরভজন ৪১
স্যামুয়েলস ক পার্থিব বো হরভজন ২৭
হায়াত ন.আ. ১৪
স্যামি ক কোহলি বো প্রবীণ ০
বার্নওয়েল ন.আ. ৩৪
অতিরিক্ত ৭
মোট (২০ ওভারে) ১৪৩-৫।
পতন: ২২, ২২, ৮৮, ৯২, ৯৩।
বোলিং: প্রবীণ ৪-১-২৭-১, হরভজন ৪-০-২৫-২,
অশ্বিন ৪-০-৩০-১, মুনাফ ৪-০-৩৫-১, ইউসুফ ৪-০-২২-০। |
|
|
|
|
|
|
|