৩০ শ্রাবণ ১৪১৯ বুধবার ১৫ অগস্ট ২০১২


চিকেনের চিকনাই

একই পদ এক এক জনের হাতে এক এক রকম। শুধু যে হাত বদলের কারণে স্বাদ বদল হয়, তা ঠিক নয়, পাল্টায় রেসিপির কারণেও।
উপকরণ ও প্রণালীতে সামান্য ‘চেঞ্জ’ মানেই রান্নাটাও গেল কিছুটা বদলে। একই দই ইলিশ, কুমড়োর ছক্কা অথচ রাঙা পিসিমা আর মেজ মাসির
দু’ বাড়িতে দু’রকম স্বাদ। আবার কখনও রান্নার প্রতি গভীর ‘প্যাশন’ থেকেও নতুন নতুন ‘মেনু’ উদ্ভাবিত হয়। গৃহিনীর কাছে রান্নাঘরটা আসলে এক মজার
‘ল্যাবরেটরি’। যদিও পুরুষরাও এই ব্যাপারে এক্কেবারে পিছিয়ে নেই। রান্না সংক্রান্ত আপনার সমস্ত ‘এক্সপেরিমেন্ট’ ‘শেয়ার’ করার জন্য ‘আপনার রান্নাঘর’।


  ম্যাঞ্চেস্টার, ব্রিটেন থেকে শ্রীমতি পারমিতা সোম
চিকেন ভর্তা

উপকরণ


বোনলেস চিকেন: ৫০০ গ্রাম পেঁয়াজ: ২/৩ মাঝারি মাপের কুচো করে কাটা টোম্যাটো: ১টা কুচি করে কাটা
কাঁচালঙ্কা: ২-৩টি কুচি লেবুর রস: ১ চামচ আদা বাটা: ১ চামচ রসুন বাটা: ১ চামচ কাজু বাটা: ১ চামচ
ফ্রেশ ক্রিম: ২ চামচ হলুদ গুঁড়ো: ১/২ চামচ জিরে গুঁড়ো: ১ চামচ চিনি ও নুন: স্বাদ মতো গরম মশলা গুঁড়ো: ১ চামচ
ডিম সেদ্ধ: ৩ টা তন্দুরি মশলা: ১ চামচ তেল: ২ চামচ জল: দরকার মতো ভাজা কাজু ও ধনে পাতা কুচানো: পরিবেশনের জন্য


প্রণালী

চিকেনে লেবুর রস ও নুন মাখিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে দিন।
কড়াইতে তেল গরম করে পেঁয়াজটা ভেজে নিতে হবে।
পেঁয়াজটা ভাজা হয়ে এলে কাঁচালঙ্কা, আদা ও রসুন বাটা দিয়ে কিছু ক্ষণ নাড়তে হবে।
এর পর এতে টোম্যাটো কুচি, হলুদ গুঁড়ো, জিরের গুঁড়ো ও তন্দুরি
মশলা মিশিয়ে কষতে হবে। যত ক্ষণ না মশলা থেকে তেল আলাদা হয়ে যায়।
এ বার এর ভিতর চিকেন দিয়ে খুব ভাল করে নাড়িয়ে মশলার সঙ্গে মেশাতে হবে।
তার পর কাজু বাটা ও ক্রিম মিশিয়ে ৭-৮ মিনিট রান্না করতে হবে।
পরিমান মতো জল দিয়ে ঝোল ঘন হওয়া অবধি ফোটাতে হবে।
সেদ্ধ ডিম লম্বা ফালি করে কেটে মেশান।
ডিমের কুসুমগুলো ঘন ঝোলের সঙ্গে মিশিয়ে দিন।
কেননা ডিমের কুসুম ঝোলের অতিরিক্ত জল টেনে নেয়।
পরিবেশনের আগে ভাজা কাজু ও কুচোনো ধনে পাতা ছড়িয়েদিন।
রুটি, নান বা ফ্রায়েড রাইসের সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন।


হুগলির চুঁচুড়ার মেয়ে। শ্বশুরবাড়ি ওই জেলারই চন্দননগরে। স্বামীর চাকরি সূত্রে দিল্লি, আমেরিকা ঘুরে এখন ব্রিটেনের ম্যাঞ্চেস্টারের বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকেই হাতের কাজ, আঁকা ও সেলাইয়ের নেশা। দেশ-বিদেশ ঘুরতে ঘুরতে রান্না শেখা। একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে নিজের গ্রুপ আছে। ছোট্ট ২ বছরের মেয়ে আনিয়া ও স্বামীকে নিয়ে তাঁর সংসার।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শ্রীমতি শিল্পী প্রামানিক
হোয়াইট হেলদি চিকেন

উপকরণ

চিকেন: ৮০০ গ্রাম ইয়োগার্ট: ২০০ গ্রাম গোল মরিচ: ২ চা-চামচ নুন: স্বাদ মতো
চিনি: ১/২ চা-চামচ গোটা গরম মশলা তেজপাতা ১টি কাঁচালঙ্কা: ২-৩টি আদা-রসুন বাটা ১ চা-চামচ


প্রণালী


প্রথমে ভাল করে মাংসটাকে ধুয়ে নিতে হবে।
এ বার তার সঙ্গে ইয়োগার্ট, আদা, রসুন বাটা,
গোল মরিচ, চিনি মিশিয়ে রেখে দিন প্রায় ৫-৬ ঘণ্টা।
একটি নন্ স্টিক প্যান নিয়ে তাতে তেল গরম করে নিন।
গরম তেলে তেজপাতা ও গরম মশলা দিন।
২-৩ মিনিট পর এর ভিতর ম্যারিনেট করা মাংসটাকে দিয়ে দিন।
মাংসে নুন দিয়ে মিনিট ২০ ঢিমে আঁচে রান্না করুন।
সাজানোর জন্য ২-৩টে কাঁচালঙ্কা দিয়ে দিন।
গরম ভাত বা পরোটার সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন।


স্বামীর কাজের সুবাদে মার্কিন মুলুকেই বসবাস। গান গাইতে ভীষণ ভাল লাগে। নতুন নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার নাম শুনলেই ‘জিভে জল’ আসে। বেড়ানোর পাশাপাশি রান্না করাতেও যথেষ্ট উত্সাহ। শ্বশুরবাড়ি কলকাতার সল্টলেকে। বিয়ের পর শ্বাশুড়ির কাছেই রান্নার হাতেখড়ি।

লন্ডন থেকে শ্রীমতি শম্পা বন্দ্যোপাধ্যায়
চিকেন তন্দুরি

উপকরণ


চিকেন লেগ-থাই টুকরো: ৮০০ গ্রাম কাশ্মীরি রেড চিলি পাউডার: ২ চা-চামচ লেবুর রস: ৩ টেবল-চামচ নুন: আন্দাজ মতো টক দই: ১ কাপ
আদা বাটা: ২ টেবল-চামচ রসুন বাটা: ২ টেবল-চামচ ধনে গুঁড়ো: আড়াই চা-চামচ জিরে গুঁড়ো: আড়াই চা-চামচ গরম মশলা গুঁড়ো: ১ টেবল-চামচ
হলুদ: দেড় চা-চামচ লঙ্কা গুঁড়ো: আন্দাজ মতো গোলমরিচ গুঁড়ো: আন্দাজ মতো লাল রং: ইচ্ছে হলে কসুরি মেথি গুঁড়ো: ১ চা-চামচ

প্রণালী

প্রথমে দই কাপড়ে বেঁধে জল ঝরাতে হবে।
চিকেনের টুকরোগুলো ধুয়ে শুকনো করে মুছে
নিয়ে গা-টা ছুরি দিয়ে চিরে চিরে দিতে হবে।
এ বার নুন, কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো আর লেবুর রস
মিশিয়ে চিকেনে ভাল করে মাখিয়ে আধ ঘণ্টা রাখতে হবে।
এ বার কড়াইতে তেল দিয়ে সব মশলা ভাল করে কষতে হবে।
ওই কষা মশলা মাংসে মাখিয়ে ৩-৪ ঘন্টা ফ্রিজে রেখে দিতে হবে।
তার পর ফ্রিজ থেকে বের করে ২০০-২২০ ডিগ্রি
সেন্টিগ্রেট তাপমাত্রায় ২০-৩০ মিনিট রাখতে হবে।
মাঝে মাঝে উল্টে দিতে হবে আর তেল স্প্রে করতে হবে।
যাঁদের গ্রিল নেই তাঁরা ননস্টিক তাওয়াতে অল্প তেলে ফ্রাই করতে পারেন।
উপর থেকে লেবুর রস আর চাট মশলা ছড়িয়ে শসা পেঁয়াজ দিয়ে পরিবেশন করুন।


হাওড়া জেলার আন্দুলে বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি। উচ্চশিক্ষার বিষয় ছিল সঙ্গীত। ছবি আঁকতে, ফটো তুলতে, গল্পের বই পড়তে ভাল লাগে। নানা ধরনের রান্না নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতেও বেশ লাগে। স্বামীর চাকরি সূত্রে এখন লন্ডনে বাস। কর্তা নিজে খেতে আর অতিথিদের নিমন্ত্রণ করে খাওয়াতে খুব ভালবাসেন। তাই রান্নাটা কখন যেন নেশায় পরিণত হয়েছে।



আর মাত্র মাস দুয়েক। তার পর বাঙালির সেই বাত্সরিক মহোত্সবের মুহূর্ত এসে হাজির হবে। এখন অপেক্ষার দিন
একটা একটা করে কমে যাওয়ার পালা। মা দুগ্গার আগমনীর দিনগুলির জন্য কত্ত পরিকল্পনা মাথায় ঘুর ঘুর করেছে। তার সঙ্গেই
ওই ক’টা দিন ‘হেঁসেল’ নিজের হাতে সাজিয়ে তুলতে চলছে ‘রেসিপি’র সুলুক সন্ধান। পাশাপাশি নিজের উদ্ভাবনী ‘পদ’ও আর
একটু সাজিয়ে গুছিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। সেই সব কিছুই অন্য গৃহিনীদের সঙ্গে ‘শেয়ার’ করতে ‘রেসিপি’ পাঠিয়ে দিন। পছন্দের
রেসিপি প্রকাশিত হবে এই পাতায়। তার পর আপনাদের পাঠানো অসামান্য সব ‘রেসিপি’ দিয়েই সাজিয়ে তুলুন পুজোয় ‘আপনার রান্নাঘর’।

লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ: ৩০ সেপ্টেম্বর
বিষয়ের জায়গায় অবশ্যই লিখুন: ‘পুজো স্পেশ্যাল’

লেখা পাঠানোর ঠিকানা
হাওয়াবদল, আপনার রান্নাঘর
আনন্দবাজার পত্রিকা, ইন্টারনেট সংস্করণ
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট
কলকাতা ৭০০০০১

ই-মেল করুন haoabadal@abp.in অথবা haoabadal@gmail.com

সংক্ষিপ্ত পরিচিতির সঙ্গে আপনার ও ‘ডিশ’-এর ছবি পাঠানো বাধ্যতামূলক।


রোজের আনন্দবাজার এ বারের সংখ্যা সংবাদের হাওয়াবদল আপনার রান্নাঘর স্বাদবদল চিঠি পুরনো সংস্করণ