মজুত আলু বিলিয়ে দিল সামসি হিমঘর
ময়সীমা পার হওয়ার পরেও চাষিরা মজুত আলু না-নেওয়ায় দু’হাজার বস্তা আলু বিলিয়ে দিলেন হিমঘর কর্তৃপক্ষ। মালদহের সামসি হিমঘরে রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে। হিমঘর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের কথা জেনে এ দিন ভিড় করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের হাতে মজুত আলুর বস্তা তুলে দেওয়া হয়। কয়েক দিন ধরে প্রচার চালানোর পরও চাষিরা আলু নিতে না আসায় ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
হিমঘর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজারে পুরানো আলুর চাহিদা নেই। আলু নেওয়ার জন্য বস্তা প্রতি হিমঘর কর্তৃপক্ষকে যে টাকা দিতে হবে, আলু বিক্রি করেও তা ওঠার সম্ভাবনা নেই জেনে চাষিরা আগ্রহ দেখাননি। ১৫ দিন সময়সীমা বাড়ানোর পরও চাষিরা তা নিতে না আসার শুক্রবার ওই মজুত আলু বেচতে নিলামও ডাকা হয়। বস্তা প্রতি ১০ টাকা দাম দিয়েও ওই আলু কেনার জন্য ব্যবসায়ী পাওয়া যায়নি। এর পরেই হিমঘর খালি করার সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। চাঁচলের মহকুমাশাসক পলাশ সেনগুপ্ত বলেন, “দাম না-পেয়ে চাষিরা আলু না-নেওয়ায় হিমঘর কর্তৃপক্ষ তা বিলিয়ে দিয়েছেন বলে শুনেছি। যথার্থ নিয়ম মেনে তা করা হয়েছে কী না খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।” চাঁচল মহকুমা কৃষি আধিকারিক অরূপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের বলা হচ্ছে উৎপাদন বাড়াতে হবে। সে ভাবে কৃষকদের মধ্যে প্রচারও করছি। কিন্তু উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে না-পেরে বিলিয়ে দিতে হলে কৃষির উপরে তার খারাপ প্রভাব পড়বে। সুষ্ঠু বিপণনের অভাবেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”
হিমঘর থেকে বিলিয়ে দেওয়া হচ্ছে আলু। রবিবার সামসিতে। ছবি: বাপি মজুমদার
মালদহ সমবায় হিমঘরের সামসি শাখায় ২ লক্ষ বস্তা আলু মজুত রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। মরসুমে আলু ওঠার পর বেশি দাম পাওয়ার আশায় তা হিমঘরে মজুত রাখেন চাষিরা। নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত আলু রাখার জন্য ৫০ কেজির বস্তা প্রতি ভাড়া দিতে হয় ৫৭ টাকা। পাশাপাশি আলু রাখায় বহু চাষিই বস্তা পিছু ১০০ টাকা করে ঋণ নিয়েছিলেন। বাজারে নতুন আলু ওঠার পর পুরানো আলু আর কেউ কিনতে চাইছেন না। দাম পাবেন বলে আশায় থেকেও তা না মেলায় শেষ পর্যন্ত ৮৭ জন চাষি তাদের মজুত দু’হাজার বস্তা আলু আর নিতে আসেননি। কেননা আলু ছাড়াতে তাদের বস্তার ভাড়ার পাশাপাশি ঋণের টাকাও শোধ করতে হত।
হিমঘরের ভাইস চেয়ারম্যান অনুপ জয়সওয়াল বলেন, “দাম পাবেন না জেনে চাষিরা ওই আলু নিতে আসেননি। চাষিদের তো ক্ষতি হলই। পাশাপাশি ভাড়া ও ঋণের টাকা না মেলায় হিমঘর কর্তৃপক্ষকেও বিরাট ক্ষতির মুখে পড়তে হল। হিমঘর খালি করতে বাধ্য হয়েই মজুত আলু বিলিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়।” যে সমস্ত চাষি আলু ফেরত নেননি, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন রতুয়ার বাকনা এলাকার শেখ নইমুদ্দিন। তিনি বলেন, “হিমঘর থেকে আলু ফেরত নিয়ে কী করব? নতুন আলু বাজারে চলে এসেছে। পুরানো আলু কেনার লোকই নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.