সেচ হবে ১১ হাজার হেক্টরে
অবশেষে জল ছাড়া হল তিস্তার বাঁ হাতি ক্যানালে
কাজ শুরু হওয়ার দু’দশকেরও বেশি সময় পরে জল ছাড়া হল তিস্তার বাঁ-হাতি ক্যানালে। ২৫ বছর আগে ওই ক্যানাল তৈরির কাজ শুরু হলেও নানা জটিলতা আর বির্তকে কাজ থমকে ছিল। জলও ছাড়া যায়নি ওই ক্যানালে। রবিবার সেখানে প্রথম জল ছাড়া হল। রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া এ দিন গজলডোবায় তিস্তা ব্যারাজ থেকে বোতাম টেপার সঙ্গে সঙ্গে লকগেট খুলে জল গড়াতে শুরু করে বাঁ-হাতি খালে। জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার, ক্রান্তি, মণ্ডলঘাটের কিছু এলাকা মিলিয়ে আপাতত প্রায় ১১ হাজার হেক্টর কৃষি জমিতে এই ক্যানালের মাধ্যমে সেচের জল দেওয়া সম্ভব হবে বলে সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে।
বাঁ-হাতি খালে জল ছাড়াকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে দাবি করেছেন সেচমন্ত্রী। শনিবারই জলপাইগুড়িতে চলে এসেছিলেন মানসবাবু। এ দিন তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় আমাকে বলেছেন, তিস্তা সেচ প্রকল্পকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে। তিনি বলেছেন, টাকার অভাব হবে না। প্রকল্পের কাজে গতি আনতে মাঝেমধ্যে আধিকারিকদেরও বকুনি দিতে হয়। তবে সকলেই মন দিয়ে কাজ করছেন। যার ফসল অতি দ্রুত বাঁ-হাতি খালের কাজ শেষ করে দেওয়া।” তিস্তা ক্যানালের কাজে জমি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে এদিন মানসবাবু জানিয়েছেন। এ দিনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই তিনি সাধারণ বাসিন্দাদের ক্যানাল তৈরির কাজে সাহায্যের আবেদন জানান।
জল-উচ্ছ্বাস: গজলডোবাতে তিস্তা বাঁ হাতি খালে জল ছাড়ার অনুষ্ঠানে
সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। রবিবার দীপঙ্কর ঘটকের তোলা ছবি।
তিস্তার এই বাঁ-হাতি খালের মাধ্যমে তিস্তা ও জলঢাকা, দুই নদীর সংযুক্তি ঘটানো হয়েছে। গজলডোবা এলাকায় তিস্তা ব্যারেজ থেকে শুরু হয়ে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা পেরিয়ে খালটি ময়নাগুড়ির পানবাড়ি এলাকায় জলঢাকা নদীতে মিশেছে। খালের দু’ধারে কৃষিজমিতে সেচের ব্যবস্থার জন্যই ১৯৮৬ সালে বাঁ-হাতি খালটি তৈরির কাজ শুরু হয়। এ বার জল ছাড়ার কাজ শুরু হওয়ায় মালবাজারের ১৮টি গ্রাম এবং ময়নাগুড়ির দু’টি গ্রামে সেচের জল পৌঁছবে। এর ফলে উপকৃত হবেন কয়েক হাজার কৃষক। তাঁদের অনেকেই এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। গজলডোবার চাষি দীনবন্ধু বর্মনের কথায়, “আমরা অনেক দিন ধরেই এই খালে জল ছাড়ার দাবি করছিলাম। অবশেষে তা চালু হল। আমার মতো অনেক চাষিই এর ফলে উপকৃত হবে।” প্রশাসনের দাবি, পরে বাঁ-হাতি খালের মাধ্যমে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের সাতটি গ্রামেও সেচের জল দেওয়া যাবে বলে প্রশাসনের দাবি। তখন এই খালের থেকে প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে জল দেওয়া সম্ভব হবে।
রায়গঞ্জ-কাণ্ড থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে কংগ্রেস-তৃণমূল চাপানউতোর যতই তীব্র হোক, অন্তত এই অনুষ্ঠানে তার ছায়া পড়েনি। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের উত্তরবঙ্গ কোর কমিটির আহ্বায়ক গৌতম দেবের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন সেচমন্ত্রী। বলেছেন, “গৌতম অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। তিস্তা প্রকল্পের কাজেও সহযোগিতা করেছেন।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জানান, মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের পরিকাঠামো উন্নয়নে আন্তরিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেচমন্ত্রীও তিস্তা প্রকল্প নিয়ে উদ্যোগী হয়েছেন। গৌতমবাবুর কথায়, “উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার কৃষি, অর্থনীতি, পরিকাঠামো উন্নয়নে নিরন্তর চেষ্টা চালাচ্ছি। রেল বাজেট আসছে। উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের জন্য রেলমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলব।”
এ দিনের অনুষ্ঠানে রাজ্যের সেচসচিব অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, সেচ ও ক্রেতা সুরক্ষা দুই দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্যামল মণ্ডল ও সুনীল তিরকে, শিলিগুড়ির মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত, জলপাইগুড়ির পুরপ্রধান মোহন বসু, সাংসদ মহেন্দ্র রায়, বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়, শঙ্কর মালাকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.