নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, সংগঠনের কাজ থেকে পিছু হটবে না পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন। রবিবার সংগঠনের শিলিগুড়ি মহকুমার সাংগঠনিক নির্বাচনের পরে একটি প্রকাশ্য সমাবেশ করে এমনটাই বুঝিয়ে দিলেন তাঁরা। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক বিজিতাশ্ব রাউত বলেন, “মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের কথা আমরা খবরের কাগজের মারফৎ জেনেছি। আমরা ওই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাব। রাজ্য জুড়ে সই সংগ্রহ অভিযান চলছে। পুলিশের অভাব, অভিযোগের সুরাহা করতেই এই সংগঠন। এটা কোনও রাজনৈতিক সংগঠন নয়। আশা করি মুখ্যমন্ত্রী আমাদের আবেদন মানবেন।” রাজ্য সরকার তাদের দাবি না মানলে সংগঠন বিরোধিতার পথে হাঁটবে কী না তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিজিতাশ্ববাবু। এদিনের সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের নাম থাকলেও তিনি সেখানে যাননি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “আমাদের দলের কিছু নিয়ম রয়েছে। একজন মন্ত্রী হিসেবে আমি এই ধরনের কোনও অনুষ্ঠানে যোগদান করতে পারি না। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমি যাইনি। সম্মতি ছাড়াই আমার নাম পোস্টারে ছাপানো হয়েছে।” |
কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক শঙ্কর মালাকার সভায় যান। তিনি পুলিশের ইউনিয়নের পক্ষে সওয়াল করেন। শঙ্করবাবু বলেন, “এটা কোনও রাজনীতিক সংগঠন নয়। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন পুলিশের মধ্যে সমাজ সেবামূলক কাজ করে। ১৯২০ সালের এই সংগঠনের তরফে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাই আমি গিয়েছে।” জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, পুলিশের রাজনীতিকরণ রুখতে রাজ্য সরকার উদ্যোগ নেন। সম্প্রতি পুলিশে ইউনিয়ন করা যাবে না বলে রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়। ওই সিদ্ধান্ত জানার পরও এ দিন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ অ্যাসোসিয়শনের তরফে শিলিগুড়ি থানায় প্রকাশ্য সভা করা হয়। সেই সভার প্রধান অতিথি হিসেবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ির উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যের নাম রাখা হয়। জেলা পুলিশ সুপার আনন্দ কুমার, শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জাভালগির নাম অতিথি হিসিবে পোস্টারে ছাাপনো হয়। এ দিন অবশ্য শঙ্করবাবু ছাড়া কেউ ওই অনুষ্ঠানে যাননি। রুদ্রবাবু বলেন, “আমি কলকাতায় আছি। ওই সংগঠনের তরফে আমন্ত্রণ রাখতে। আমি যেতে পারিনি।” দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার আনন্দ কুমার অন্য অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকায় তিনি সেখানে যেতে পারেননি বলে জানিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ অ্যাসোসিয়শনের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যে তাদের ৩৫ হাজারের উপরে সদস্য রয়েছে। নিচুতলার পুলিশ কর্মীদের অভাব-অভিযোগ নিয়ে মূলত তারা সরব। শূন্যপদ পূরণ, মেডিক্যাল, রেশন ব্যবস্থা এবং প্রমোশনের বিষয় নিয়ে তাঁরা সরকারের কাছে নানা দাবি করেছেন। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সংবিধান মেনে তাঁরা সংগঠনের কাজ করছেন বলে সংগঠনের সম্পাদক দাবি করেন। সেদিকে লক্ষ রেখে রাজ্যের সর্বত্র নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। নির্বাচনের ছয় সদস্যের শিলিগুড়ি মহকুমা গঠিত হয়। সম্পাদক বলেন, “পুলিশ যদি কোনও ভুল বা দোষ করে থাকে তাহলে রাজ্য সরকার ব্যবস্থা নেবে। কেউই আইনের উর্ধ্বে নয়। কিন্তু প্রায় একশো বছরের একটি সংগঠন না থাকলে পুলিশ কর্মীদের অভাব-অভিযোগ নিয়ে কারা সরব হবেন। সে কথাই আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। তাঁর কাছে কিছুটা সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।” |