নাচে-গানে প্রথম দিনই জমে উঠল মুকুটমণিপুর মেলা
মুকুটমণিপুর মেলা শুরু হল। রবিবার থেকে কংসাবতী জলাধার লাগোয়া এলাকায় এই মেলা বসেছে। শোভাযাত্রায় আদিবাসী মহিলা ও পুরুষ এবং রণপা শিল্পীরা ধামসা-মাদলের সঙ্গে নাচতে নাচতে জলাধার থেকে মেলা প্রাঙ্গনে আসেন। ছিল স্থানীয় স্কুল পড়ুয়ারাও।
তিন দিন ব্যাপী এই মেলার সূচনা দেখতে স্থানীয়দের সঙ্গে পর্যটকেরাও ভিড় করেছিলেন। কাঁসাই-কুমারী মঞ্চে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রাজ্যের আবাসন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের প্রচেষ্টায় মুকুটমণিপুর জলাধার তৈরি হয়েছিল। এলাকার লোকসংস্কৃতির বিকাশের ক্ষেত্রে এই মেলার গুরুত্ব অপরিসীম। এই মেলা বিষ্ণুপুর মেলার মতই একদিন জাতীয় মেলার স্বীকৃতি পাবে।” তিনি জানান, মুকুটমণিপুরকে আকর্ষণীয় করার জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
প্রতিবছর ১ জানুয়ারি থেকে এই মেলা শুরু হলেও এ বার তার ব্যতিক্রম ঘটল। চতুর্দশ বর্ষে পা রাখা এই মেলা চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত। মেলার দিন বদলালেও এর আকর্ষণ কিন্তু এতটুকুও কমেনি। রবিবার ছিল ছুটির দিন। সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার থাকলেও পর্যটকদের ভিড়ে এতটুকুও ভাটা পড়েনি। মেলা দেখতে আসার জন্য মেলা কমিটি খাতড়া ও রানিবাঁধ থেকে দু’টি করে মোট চারটি বাসের ব্যবস্থা করেছে। বিনা ভাড়ায় ওই বাসে চেপে এলাকার বহু মানুষই এদিন মেলা দেখতে এসেছিলেন। এক দিকে চড়ুইভাতি, অন্য দিকে মেলার মজা। পর্যটক থেকে এলাকার মানুষ, সবাই উপভোপ করলেন এ দিনের এই মনোরম পরিবেশ।
নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমান থেকে পিকনিক করতে আসা পিয়ালি রায়, সুদীপ রায় বললেন, “খারাপ আবহাওয়া দেখে মন খারাপ লাগছিল। কিন্তু মেলা দেখে মন ভরে গেল। এখানে এলাম বলেই রণপা নাচ দেখতে পেলাম।” মেলা কমিটির দেওয়া বাসে চড়েই এদিন রানিবাঁধ থেকে মুকুটমণিপুর এসেছিলেন সুজাতা মুর্মু, হরিমতি সরেন-রা। তাঁদের উচ্ছ্বাস, “বিনা ভাড়ায় আমাদের মত অনেকেই এ বার বাসে চড়ে মেলা দেখতে আসার সুযোগ পেয়েছে। ইচ্ছে থাকলেও যাতায়াতের অসুবিধার জন্য এতদিন আসতে পারিনি। আমারা মেলায় খুব আনন্দ করেছি।”
ভরা কংসাবতীতে এ বার পর্যটকদের ঢলের সঙ্গে মেলার জন্য স্থানীয় মানুষের ভিড় দেখে খুশি নৌকাচালক থেকে হোটেল ব্যবসায়ী, দোকানদার- সকলেই। নৌকাচালক রামপদ সর্দার, গণপতি সিং সর্দার জানালেন, “ভিড় যেমন হয়েছে, তেমন আমাদের রোজগারও ভাল হচ্ছে।” স্থানীয় দোকানদার মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী বললেন, “এ বার বাজার জমজমাট। বাইরের ও স্থানীয় মানুষেরা মনের খুশীতে কেনাকাটি করছেন। বহু বছর পরে এমন ভিড় দেখছি।” মুকুটমণিপুর হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ সাহুর কথায়, “প্রচুর পর্যটক এসেছেন। ব্যবসা ভাল হচ্ছে।”
মেলা কমিটি জানিয়েছে, দূর দূরান্তের পর্যটকরা মুকুটমণিপুরে এসে দক্ষিণ বাঁকুড়ার আদিবাসী সংস্কৃতি, লোকসংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন এই মেলায়। তার সঙ্গে এলাকার মানুষও যাতে মেলা দেখার সুযোগ পান, সেজন্য খাতড়া ও রানিবাঁধ থেকে চারটি বাস দেওয়া হয়েছে। সেগুলি সর্বদা যাতায়াত করছে। মেলায় ১৪টি স্টল রয়েছে। মেলার মূল মঞ্চে প্রতিদিনই নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। স্থানীয় শিল্পীদের পাশাপাশি কলকাতা থেকে বহু শিল্পী অনুষ্ঠানে হাজির থাকছেন। এ দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন জেলাশাসক মহম্মদ গুলাম আলি আনসারি, মহকুমা শাসক (খাতড়া) দেবপ্রিয় বিশ্বাস, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মুখ্য নির্বাহী আধিকারিক তন্ময় মিত্র সহ প্রশাসনের বহু কর্তাব্যক্তি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.