ডার্বি ম্যাচ হারের শাস্তি! কুড়ি মিনিটের মধ্যে ইস্টবেঙ্গল মাঠে সাত পাক দৌড়ানোর সঙ্গে-সঙ্গে সাত বার কুড়িটা করে ডন, দশটা করে বৈঠক!
ওপারা, টোলগে, পেন, মেহতাবদের জন্য রবিবার সকালের প্র্যাক্টিসে এ রকম খাটুনিই বরাদ্দ করেছিলেন জেমস মর্গ্যান। মাঠের চারদিক দৌড়তে দৌড়তে প্রায় জিভ বার হয়ে যাওয়ার জোগাড় লাল-হলুদ ফুটবলারদের। কেন এই অভিনব কাণ্ড? সকাল সাতটায় তাঁবুর প্রধান দরজা বন্ধ রেখে ছাত্রদের ‘দৌড় করানো’র সময় রাগে গজরাতে গজরাতে ব্রিটিশ কোচ শোনা গেল সাপোর্ট স্টাফকে বলেছেন, “শনিবার বিকেলে তো কেউ দৌড়ায়নি। তাই রবিবার সকালে দৌড় করাচ্ছি।”
মর্গ্যান-জমানায় এর আগেও ৪-৫ গোলে ম্যাচ হেরেছে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু কখনও ফুটবলারদের এ ধরনের ‘শাস্তি’ দেননি কোচ। অনুশীলনের পর এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি মর্গ্যান। বরং হতাশ মুখে বলেন, “হারের ধরনটাই আমাকে বেশি কষ্ট দিয়েছে। সমর্থকদের তো আরও বেশি খারাপ লাগবেই।”
এ দেশে আসা ইস্তক সকাল সাড়ে ন’টার আগে কখনও অনুশীলন ডাকেননি মর্গ্যান। ম্যাচের পরের দিন প্রথম টিমের ফুটবলারদের মাঠে ডাকলেও হালকা স্ট্রেচিং করিয়েই ছেড়ে দিতেন। কিন্তু ডার্বি হারার সাড়ে চোদ্দো ঘণ্টা পরেই রবিবার সকাল সাড়ে ছ’টায় শীত-বৃষ্টির মধ্যেই ফুটবলারদের প্র্যাক্টিসে নামান তিনি।
ইস্টবেঙ্গল শিবির সূত্রের খবর, শনিবার ম্যাচের পর সন্দীপ নন্দী বাদে সবাইকেই তীব্র শ্লেষাত্মক ভাষায় আক্রমণ করেন মর্গ্যান। এমন ক্রোধে ফেটে পড়েন তিনি যে, এক সময় উত্তেজনায় হাত-পা ছুড়তে থাকেন। দোষারোপের প্রধান টার্গেট ছিলেন স্ট্রাইকাররা। ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল সাংবাদিক সম্মেলনেও। শনিবারের ‘খলনায়ক’ হিসেবে চিহ্নিত সন্দীপ নন্দীকে শোনা যাচ্ছে, মানসিক ভাবে চাঙ্গা হতে কয়েকটা ম্যাচ বিশ্রাম দেওয়া হতে পারে।
এ দিন অবশ্য ফুটবলারদের আর কিছু বলেননি মর্গ্যান। চূড়ান্ত পেশাদার বলে ‘শাস্তি’র মুহূর্তটাও ক্যামেরাবন্দি করতে দেননি মাঠে উপস্থিত মিডিয়াকে। পরে বলেন, “কলকাতা লিগে এখনও মোহনবাগানের থেকে চার পয়েন্টে এগিয়ে আমরা। চ্যাম্পিয়ন হতে তাই অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। আর বড় ম্যাচ হারের প্রভাব আই লিগে পড়বে না।”
এ দিকে অ্যালান গাওয়ের চোট নিয়ে ইস্টবেঙ্গলের অভিযোগ ঠিক কি না তা জানতে তাঁকে ডেকে পাঠানো হল দিল্লিতে। মঙ্গলবার ফেডারেশনের ডাক্তাররা গাওকে পরীক্ষা করবেন। গাও-এর চোট সত্যি হলে তাঁর পরিবর্ত পাবে ইস্টবেঙ্গল। |