কলকাতা ডার্বি ম্যাচ জিতে ওঠার পরের দিন সুব্রত ভট্টাচার্য জানিয়ে দিলেন, আই লিগকেই আপাতত পাখির চোখ করতে চান। বললেন, “ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়েছি। সমর্থকরা আনন্দ পেয়েছেন। কলকাতা লিগ নিয়ে আর মাথা ঘামাব কেন? বরং যেটা এখনও জিততে পারি সেই আই লিগ নিয়েই ভাবতে চাই।”
ইস্টবেঙ্গলকে মরসুমের দ্বিতীয় ডার্বিতেও হারানোর পর দু’দিন ওডাফাদের ছুটি দিয়েছেন মোহন টিডি। বিশ্রামের পাশাপাশি জয় উপভোগ করার জন্যও। আর সেই সুযোগে ওডাফা-সংগ্রামরা রবিবার বিভিন্ন পাড়ায় ফুটবল টুর্নামেন্ট থেকে যোগব্যায়াম প্রতিযোগিতায় পর্যন্ত প্রধান অতিথি হয়েটয়ে পুরস্কার দিয়েছেন। |
আকাশ ছুঁয়ে মণীশ ভার্গব। মোহনবাগান মেসের ছাদে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস। |
পাড়ায়-পাড়ায় যখন সবুজ-মেরুন সমর্থকরা চিরকালের লড়াই জেতার আনন্দে ভাসছেন, তখন এ দিন সাতসকালে শ্যামনগরের বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন সুব্রত। সন্ধেয় সেখান থেকে ফেরার পথে বললেন, “মরসুমের শুরু থেকে দায়িত্ব পেলে কলকাতা লিগটাও জিততে পারতাম। এত চোট-আঘাত। সবথেকে সমস্যা ফিটনেসের। চোট সারিয়ে ফিরলেও ফিটনেস সমস্যা থাকছেই। জুলাই থেকে নভেম্বর তো শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানোর প্র্যাক্টিসই হয়নি। ফলে ধারাবাহিক ভাল খেলা যাচ্ছে না।”
কলকাতা লিগে এখনও তিনটে ম্যাচ বাকি। ডার্বি জিতলেও খেতাব জেতার সুযোগ নেই। কিন্তু আই লিগে প্রথম পর্বের শেষে মোহনবাগান চার নম্বরে। শীর্ষে থাকা ডেম্পোর সঙ্গে মাত্র তিন পয়েন্টের তফাত। “ইস্টবেঙ্গল যত গোল দিয়েছে আমরাও তত গোল দিয়েছি। চার্চিলের চেয়ে আমরা বেশি গোল করেছি। কিন্তু রক্ষণে বারবার চোটের জন্য পরিবর্তন করতে গিয়ে গোল খেতে হয়েছে।” সুব্রত মনে করেন, আই লিগ জিততে হলে সবচেয়ে জরুরি রক্ষণ জমাট করা। “কারও চেয়ে আমরা পিছিয়ে নেই। গোল আমার দল করবেই। কিন্তু সমস্যা রক্ষণের। আই লিগে পরের দুটো ম্যাচ চার্চিল আর স্পোর্টিং ক্লুবের সঙ্গে। দু’টোই খুব গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। তবে ডার্বি জেতাটা টিমকে এখন কিছুটা স্বস্তিতে রাখবে।” সঙ্গে অবশ্য যোগ করলেন, “ইস্টবেঙ্গল বা ডেম্পোর মতো আমার রিজার্ভ বেঞ্চ শক্তিশালী নয়। রক্ষণ বা মাঝমাঠে কেউ চোট পেলে সমমানের পরিবর্ত নেই। তবুও আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি।” |
খুদে সই-শিকারিদের আব্দার মেটাতে ব্যস্ত ওডাফা ওকোলি।
কসবায় একটি অনুষ্ঠানে। রবিবার। ছবি: উৎপল সরকার। |
বড় ম্যাচের বাচ্চা গোলদাতা মণীশ ভার্গবকে নিয়ে মিডিয়া উচ্ছ্বসিত হলেও তাতে ভাসতে রাজি নন পোড়খাওয়া সুব্রত। “এ রকম অনেক ফুটবলার উঠে আসে আবার হারিয়েও যায়। মণীশের অনেক গুণ আছে। কিন্তু তাতে আরও শান দিতে হবে। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ওকে ওর নিজের খেলাটা খেলতে বলেছিলাম। সেটা করেছে। এরপর ওকে টিমের ফর্মেশন অনুযায়ী কিন্তু খেলতে হবে। সময় পেলে ছেলেটাকে আলাদা অনুশীলন করানোর ইচ্ছে আছে আমার।”
অনূর্ধ্ব ১৯ মণীশকে এ দিনও সারাদিন চোখে-চোখে রেখেছিলেন কর্তারা। ইলিয়ট রোডে মোহনবাগান মেসের ছাদে ফটোগ্রাফারদের নিজের হাতের ট্যাটু দেখিয়ে পঞ্জাবী ফুটবলার মণীশ পোজ দিলেও মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। ক্লাবের অর্থ-সচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, “ওর মাথা ঘুরে যাক চাই না আমরা। বরং ওকে সংরক্ষণ করতে চাই।” |