বেশ কিছু দিন ধরে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ‘বেআইনি’ ভাবে রমরমিয়ে চলছিল ‘অনলাইন লটারি’র ব্যবসা। শেষমেশ শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন অঞ্চলে চলে পুলিশি অভিযান। ‘অনলাইন লটারি’ চালানোর অভিযোগে ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। উদ্ধার হয়েছে অনেকগুলি কম্পিউটার মনিটর, সিপিইউ, কি-বোর্ড, মোডেম, প্রিন্টার-সহ অন্যান্য জিনিস। শহরের আরও কোনও জায়গায় এ ধরনের ব্যবসা চলছে কি না, ইতিমধ্যেই তার খোঁজখবর শুরু হয়েছে বলে লালবাজার সূত্রের খবর। ২০০৪ সালে প্রথম ‘অনলাইন লটারি’র বিরুদ্ধে শহরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায় কলকাতা পুলিশ। এই গোটা লটারি-ব্যবসার পিছনে কোনও চক্রের হাত রয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে ধারণা তদন্তকারীদের।
কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) জাভেদ শামিম রবিবার বলেন, “বেআইনি লটারি চালানোয় পাঁচ জন ধরা পড়েছে মধ্য কলকাতা থেকে। এ ছাড়া চার জন দক্ষিণ, দু’জন দক্ষিণ-পূর্ব কলকাতা এবং এক জন বন্দর অঞ্চল থেকে ধরা পড়েছে।” শনিবারের অভিযানে উঠে এসেছে বড়বাজার, জোড়াসাঁকো, বালিগঞ্জ, গড়িয়াহাট, ভবানীপুর এবং একবালপুর এলাকার নাম। তবে মধ্য কলকাতা থেকেই সব চেয়ে বেশি লোক ধরা পড়ায় পুলিশের অনুমান, শহরের বাণিজ্যকেন্দ্রের অন্যত্রও এই ব্যবসা চলা অসম্ভব নয়।
গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে কলকাতা পুলিশের আওতায় আসা বিস্তীর্ণ ‘সংযোজিত’ এলাকার কোনও জায়গায় এ ধরনের ব্যবসা চলছে কি না, খোঁজ শুরু হয়েছে তারও। বাজার চলতি যে সব সংস্থা ‘অনলাইন লটারি’র সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে যুক্ত, তদন্তের স্বার্থে তাদের সঙ্গেও কথা বলা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
কী ভাবে চলছিল এই ব্যবসা?
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, বাজার চলতি সংস্থাগুলি নিজস্ব ‘সার্ভার’-এর সাহায্যে ব্যবসা চালায়। অন্য দিকে, ‘সার্ভার’-এর বদলে শুধুমাত্র সফ্টওয়্যার ‘লোড’ করেই কম্পিউটারের মাধ্যমে চলছিল এই ‘বেআইনি’ খেলা। সে কারণেই তদন্তকারীদের ধারণা, প্রচলিত ‘অনলাইন লটারি’র তুলনায় এই লটারির ব্যাপ্তি কম। টিকিট থেকে শুরু করে পুরস্কার কম সব কিছুর মূল্যই। চক্রের সাহায্যেই পুরস্কার দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। যুগ্ম কমিশনার জানিয়েছেন, যে সফ্টওয়্যারের সাহায্যে এই ব্যবসা চলছিল, সেটি প্রচলতি ‘অনলাইন লটারি’র ধাঁচেই তৈরি। কিন্তু এত সূক্ষ্ম ভাবে কী করে প্রচলিত লটারির ধাঁচ এই চক্র নকল করতে পারল, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে। |