দলকে চাঙ্গা করার জন্য রাজ্যে কৃষকদের স্বার্থে আন্দোলনের ডাক দিল বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। ‘দক্ষিণ ভারতের নেতাজি’ বলে খ্যাত পসুম্পন মথুরামলিঙ্গম থেবরের মূর্তি প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে রবিবার কলকাতায় ফ ব-র সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস কৃষকদের জন্যই লড়াইয়ের পাশাপাশিই দলের ‘ঐক্যবদ্ধ’ হওয়ার কথা বলেছেন। তাঁর বক্তব্য, “এই রাজ্যে ৩৪ বছর বামফ্রন্ট সরকার ছিল। কিন্তু ৮ মাসে ১৩ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন, এমন ঘটনা ঘটেনি।
থেবরের পার্টি ফরওয়ার্ড ব্লক কৃষকদের জন্য প্রাণ দিতে প্রস্তুত! কৃষকেরাও জন্মেছেনই লড়াই করার জন্য।”
মঞ্চে উপবিষ্ট এ রাজ্য এবং তামিলনাড়ুর নেতাদের উদ্দেশে দেবব্রতবাবুর মন্তব্য, “নেতারা যদি নিজেদের মধ্যে কলহ-বিবাদ বাদ দিয়ে নেতাজির ঝান্ডা হাতে নিয়ে নামেন, তা হলে দেখানো যাবে, ফ ব কত শক্তিশালী দল!”
ফ ব-র রাজ্য দফতর হেমন্ত বসু ভবনের অদূরে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের ধারে ছোট আইল্যান্ডে থেবরের মূর্তির এ দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে আবরণ উন্মোচন করেন দলের প্রবীণ রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ। অনুষ্ঠানে আসার কথা থাকলেও তামিলনাড়ুর অর্থমন্ত্রী তথা এডিএমকে নেতা ও পনীর সেলভম শেষ পর্যন্ত কলকাতায় আসতে পারেননি। চেন্নাইয়ে এডিএমকে নেত্রী জয়ললিতার ডাকে জরুরি বৈঠকের জন্যই তিনি কলকাতার বিমান ধরতে পারেননি। তাঁর ব্যক্তিগত সচিব কে বিজয়কুমার অবশ্য ‘বার্তা’ নিয়ে এসেছিলেন। অনুষ্ঠানে ছিলেন ফ ব-র তামিলনাড়ু রাজ্য সম্পাদক এবং বিধায়ক পি ভি কাথিরাবন। অন্তত শ’পাঁচেক তামিল ‘উৎসাহী’ জনতা মশাল নিয়ে এ দিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিল। দইয়ের ঘড়া নিয়ে থেবরের মূর্তি ঘিরে রীতিমতো যজ্ঞ অনুষ্ঠান করে তারা!
চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ লাগোয়া ওই আইল্যান্ডে থেবর এবং সর্দার বল্লভভাই পটেলের মূর্তি বসানো নিয়ে এক সময় সংঘাত বেধেছিল। কলকাতা পুরসভার তৎকালীন বাম মেয়র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের কাছে দরবার করে অশোকবাবুই থেবরের মূর্তির অনুমোদন জোগাড় করেছিলেন। কয়েক মাস আগেই বল্লভভাইয়ের মূর্তির উদ্বোধন হয়ে গিয়েছে। আইল্যান্ডটিতে অবশ্য এখন লোহার রেলিং দিয়ে পার্কের চেহারা দেওয়া হয়েছে। তবে সেখানে যাতে আর আবর্জনা ফেলা না-হয়, তার জন্য পুরসভার কাছে দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
‘দক্ষিণের নেতাজি’কে স্মরণের পাশাপাশিই সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনকে ‘দেশপ্রেম দিবস’ ঘোষণার দাবিতে আন্দোলনের জন্য তৈরি হচ্ছে ফ ব।
অশোকবাবু এ দিন জানান, কেন্দ্রীয় নেতাজি জন্মোৎসব কমিটির তরফে আজ, সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। তিনি বলেন, “সরকারের সঙ্গেই ওই কমিটি ‘দেশপ্রেম দিবস’ পালন করুক, এমন প্রস্তাবও দেওয়া হবে। কিন্তু দাবি জানিয়ে বেশি দিন অপেক্ষা করা সম্ভব নয়!” ‘দেশপ্রেম দিবস’-সহ একগুচ্ছ দাবিতে ১৮ জানুয়ারি রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে ধর্না-অবস্থান চালিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে দাবিপত্র দিতে যাবে ফ ব-র যুব সংগঠন যুব লিগ। বামপন্থী সবক’টি যুব সংগঠনও ‘দেশপ্রেম দিবসে’র জন্য মুখ্যসচিবের কাছে দাবি জানাতে যাবে বলে ঠিক হয়েছে। |