নীতি তৈরি করায় সরকার ‘পক্ষাঘাতগ্রস্ত’ হয়ে পড়লে তা আর্থিক বৃদ্ধিকে টেনে নামাতে পারে ৭ শতাংশেরও নীচে। উপযুক্ত নীতি প্রণয়নে জোর দিয়ে দ্রুত সংস্কারের পথে না ফিরলে এই ঝুঁকি কাটিয়ে ওঠা যাবে না বলেই মন্তব্য করেছেন প্রথম সারির শিল্পপতি দীপক পারেখ। এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পারেখ মনে করেন, সে ক্ষেত্রে শিল্পের হাল ফেরানো কঠিন হবে। সুনীল ভারতী মিত্তলও একই সুরে বলেছেন, ‘সাহসী সরকারই’ একমাত্র সংস্কারকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে শিল্পের চাকা আবার সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও আশার আলো দেখতে পাচ্ছে না শিল্প।
টেলিভিশনে দু’টি আলাদা আলাদা সাক্ষাৎকারে নিজেদের এই মতামত জানিয়েছেন পারেখ ও মিত্তল। এ ব্যাপারে দু’জনেই জোট সরকারের দুর্বলতার দিকগুলি তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের উপর আস্থা রেখেও পারেখ বলেছেন, এমনটা চলতে থাকলে শিল্পোদ্যোগীরা দেশ ছেড়ে বিদেশের বাজার ধরার উপরই জোর দেবেন। এই কারণে প্রধানমন্ত্রীকে আরও দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে আর্জি জানান তিনি। তাঁর মতে, জোট রাজনীতি কেন্দ্রীয় সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকেই খাটো করছে। পারেখের কথায়, এ যেন বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড়ো। স্পষ্টতই তিনি জোটসঙ্গীদের আপত্তিতে বহু ব্র্যান্ডের রিটেলে বিদেশি লগ্নিতে সায় দেওয়ার ব্যাপারে ইউপিএ সরকারের পিছিয়ে যাওয়ার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। প্রসঙ্গত, পারেখ প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্য ও শিল্প পরিষদের অন্যতম সদস্য।
সরকারের দুর্বলতা প্রসঙ্গে মিত্তল খোলাখুলিই বলেন, “রিটেলে বিদেশি লগ্নিতে আনুমতি দেওয়া, কিংবা কিছু গুরুত্বপূর্ণ আইন পাশ করানোর ব্যাপারে পিছু হটতে হচ্ছে কেন্দ্রকে। বিরোধী দল, এমনকী ইউপিএ সরকারের জোটসঙ্গী তৃণমূল কংগ্রেসই এর জন্য দায়ী। আমরা চাই দায়িত্বশীল, নিদেনপক্ষে যুক্তি দিয়ে সবকিছু খতিয়ে দেখতে পারে, এমন বিরোধী দল।”
অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়কেই ওই সাক্ষাৎকারে সরাসরি এ কথা বলেন মিত্তল। তিনি অর্থমন্ত্রীকে বলেন, “আমি আপনাকে সাহসী হতেই বলব। কথা দিচ্ছি শিল্পমহল সে ক্ষেত্রে পাশেই থাকবে। আশা করব যুক্তি মেনে এগোবে বিরোধীপক্ষও।”
একই সঙ্গে মনমোহন সিংহকে সেরা প্রধানমন্ত্রীর তকমা দিতে ভোলেননি দীপক পারেখ। তাঁর স্বচ্ছতাও প্রশ্নাতীত। সেই কারণেই পারেখের দৃঢ় বিশ্বাস, প্রথানমন্ত্রী তাঁর কথা রাখবেন এবং ২০১১ সালের মতো দুঃস্বপ্নের বছর শীঘ্রই শিল্পমহলের স্মৃতি থেকে মুছে যাবে নতুন বছরের সাফল্যে। |