কর বাঁচাতে সঞ্চয় সারতে হবে শীঘ্রই
তুন ইংরেজি বছর সবে শুরু হলেও তিন ভাগ পেরিয়ে গিয়েছে আর্থিক বছরের। লগ্নিকারী, বিশেষ করে করদাতাদের কাছে আর্থিক বছরের গুরুত্ব কিন্তু অনেক বেশি। মার্চ মাসের মধ্যেই সেরে ফেলতে হবে কর সাশ্রয়ের জন্য সব রকমের লগ্নি। অর্থাৎ হাতে আর খুব বেশি সময় নেই।
আয়কর আইনের ৮০সি ধারা অনুযায়ী বিশেষ কিছু প্রকল্পে লগ্নি এবং কয়েক ধরনের খরচ মিলিয়ে বছরে মোট ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বাদ যায় করযোগ্য আয় থেকে। অর্থাৎ এই পরিমাণ অর্থের উপর পাওয়া যায় কর রেহাইয়ের সুবিধা। ৮০সি ধারার আওতায় লগ্নি প্রকল্পগুলির মধ্যে আছে: প্রভিডেন্ট ফান্ড, পিপিএফ, ইউলিপ, জীবনবিমার প্রিমিয়াম, এনএসসি, ইক্যুইটির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সঞ্চয় প্রকল্প বা ইএলএসএস, পাঁচ বছর মেয়াদি বিশেষ ব্যাঙ্ক আমানত, গৃহঋ
ণ পরিশোধ, সন্তানের পড়াশোনা বাবদ খরচ ইত্যাদি। সম্প্রতি পিপিএফ অ্যাকাউন্টে বার্ষিক জমার ঊর্ধ্বসীমা ৭০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১ লক্ষ টাকা।
৮০সি ধারার অধীনে ১ লক্ষ টাকা ছাড়াও ৮০সিসিএফ ধারায় দীর্ঘ মেয়াদি পরিকাঠামো বন্ডে বছরে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত লগ্নির উপর পাওয়া যায় অতিরিক্ত কর ছাড়ের সুবিধা। এই ধরনের বন্ড সম্প্রতি ছেড়েছিল আইডিএফসি এবং এল অ্যান্ড টি ফিনান্স। বর্তমানে যে-সব পরিকাঠামো বন্ড পাওয়া যাচ্ছে, তার মধ্যে আছে রুরাল ইলেকট্রিফিকেশন কর্পোরেশনের বন্ড। সুদের হার দশ বছর মেয়াদে ৮.৯৫ শতাংশ এবং ১৫ বছর মেয়াদে ৯.১৫ শতাংশ। এ ছাড়া বন্ড ছেড়েছে শ্রেয়ী ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফিনান্স। এদের বন্ডে সুদের হার যথাক্রমে ৮.৯ শতাংশ এবং ৯.১৫ শতাংশ।
এপ্রিলে অর্থাৎ ২০১২-’১৩ সালের গোড়া থেকে চালু হওয়ার কথা প্রত্যক্ষ কর বিধি বা ডিরেক্ট ট্যাক্স কোড (ডিটিসি)। এটি চালু হলে কিছু পরিবর্তন আসবে কর সাশ্রয় সংক্রান্ত লগ্নির ব্যাপারে। খসড়া ডিটিসি অনুযায়ী কর সাশ্রয়ের জন্য বছরে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় করা যাবে শুধুমাত্র সরকারি প্রভিডেন্ট ফান্ড, পাবলিক প্রফিডেন্ট ফান্ড, সংস্থাগত প্রফিডেন্ট ফান্ড এবং পিএফ আর ডিএ নিয়ন্ত্রিত পেনশন প্রকল্পে। এ ছাড়া অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকার উপর কর ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যাবে জীবনবিমার প্রিমিয়াম, সন্তানের পড়ার খরচ ইত্যাদির উপর। করছাড় প্রকল্প থেকে বাদ পড়বে এনএসসি, ইএলএসএস, পাঁচ বছর মেয়াদি ব্যাঙ্ক জমা ইত্যাদি। গৃহঋণ পরিশোধ এবং পরিকাঠামো বন্ডে লগ্নি করছাড়ের জন্য যোগ্য বিবেচিত নাও হতে পারে ডিটিসি চালু হলে। এ সব কথা মাথায় রেখে কর সাশ্রয়ের জন্য সঞ্চয়ের পথে এগোতে হবে।
সেভিংস ফান্ড অ্যাকাউন্টে সুদ বাড়িয়ে ৬/৭ শতাংশ করেছে কয়েকটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক। সরকারি এবং বড় বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি এখনও এই পথে না-হাঁটায় হতাশ হয়েছেন অনেকে। পরোক্ষ ভাবে স্টেট ব্যাঙ্ক অবশ্য একই রকম সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে গত সপ্তাহে। ৭ থেকে ৯০ দিন মেয়াদে স্টেট ব্যাঙ্ক সুদ দেবে ৭ শতাংশ। ৯১ দিন থেকে ১৭৯ দিন মেয়াদে সুদের হার ৭.২৫ শতাংশ। এই দুই মেয়াদে সাত দিন রাখার পর জমা টাকা ভাঙলে কোনও জরিমানা দিতে হবে না। অর্থাৎ সেভিংস ব্যাঙ্কে পড়ে থাকা টাকা এখানে রাখাই যেতে পারে উঁচু সুদে। স্টেট ব্যাঙ্ক সুদের হার পুনর্বিন্যাস করেছে নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে। ১ থেকে ১০ বছর মেয়াদে সুদের হার ৯.২৫ শতাংশ। প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে ৯.৭৫ শতাংশ। আগে ভাঙালে জরিমানা পড়বে মাত্র ০.৫ শতাংশ।
শেয়ার বাজার অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় বহু মানুষ এখন ছুটছেন ব্যাঙ্ক জমার মতো স্থির আয় প্রকল্পে। যাঁরা শেয়ার বাজারের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশাবাদী, তাঁদের জন্য কিন্তু একটি বিকল্প আছে এই বাজারে। উঁচু হারে নিয়মিত ডিভিডেন্ড দেয় এমন অনেক শেয়ারের দাম এখন বেশ নীচের দিকে। এই সব শেয়ারে একটু একটু করে লগ্নি করলে ভাল ডিভিডেন্ড পেতে থাকবেন, যা পুরোপুরি করমুক্ত। অনেক ক্ষেত্রেই ডিভিডেন্ড বাবদ প্রকৃত আয় সেভিংস ব্যাঙ্ক সুদের আশেপাশেই হতে পারে, যা পুরোপুরি করযোগ্য। পরে শেয়ার বাজার উঠলে, এই সব শেয়ার আপনাকে এনে দিতে পারে মূলধনী লাভের সুযোগও। বিকল্প হিসাবে লগ্নি করতে পারেন মিউচুয়াল ফান্ডের ডিভিডেন্ড ইল্ড ফান্ডে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.