জবরদখল তুলতে বাসস্ট্যান্ড পরিদর্শন
বাস ধর্মঘট অব্যাহত সিউড়িতে
দুর্ঘটনায় এক মহিলার মৃত্যুর পরে দখলদারদের সরানোর ব্যাপারে নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। রবিবার সিউড়ি বাসস্ট্যান্ড চত্বর ঘুরে দেখেন মহকুমাশাসক (সিউড়ি সদর) সুজয় আচার্য, ডেপুটি পুলিশ সুপার (শৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণ) প্রশান্তকুমার চৌধুরী, সিউড়ি পুরপ্রধান উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়। এ দিকে দুর্ঘটনার পরে দু’দিন কেটে গেলেও সিউড়িতে বাসচলাচল বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। সুজয়বাবু বলেন, “বাসস্ট্যান্ড পুরকর্তৃপক্ষের অধীনে। তাই হঠাৎ করে কাউকে উঠিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। দখলদারদের সরে যাওয়ার জন্য দু’তিন দিন সময় দেওয়া হয়েছে। বাস চালানোর ব্যাপারে আলোচনা চলছে। আজ সোমবার দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” গ্রেফতারের প্রসঙ্গে প্রশান্তবাবু বলেন, “পুলিশ বিষয়টি দেখছে।”
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার আগে নন্দগোপাল মোড়ের কাছে বাস থেকে নামার সময়ে চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল লতি বাগদি (৪০) নামে এক আদিবাসী মহিলার। বাড়ি সিউড়ি থানার জুনিদপুরে। ওই ঘটনার পরে উত্তেজিত জনতা ওই বাসে ভাঙচুর চালিয়েছিলেন। বাস মালিক ও কর্মীদের দাবি ছিল, অভিলম্বে ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে হবে এবং রাস্তার উপরে বসা দোকানগুলিকে সরাতে হবে। ওই দাবিতে শনিবার থেকে সিউড়ির উপর দিয়ে চলা বাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা।
হকারদের সঙ্গে কথা বলছেন প্রশাসনিক কর্তারা। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিত্যযাত্রী সাঁইথিয়ার পরিমল দাস, শেখ সিরাজ, সমীরণ সরকার, মহম্মদবাজারের সাধন মণ্ডল, রাজনগরের গোষ্ঠ মণ্ডলরা বলেন, “কথায় কথায় এ ভাবে বাস বন্ধ করে দেওয়া ঠিক নয়। সিউড়িতে প্রধান যোগাযোগ ব্যবস্থা হল বাস। এ ভাবে সদর শহরে বাস বন্ধ করার আগে সাধারণ যাত্রীদের কথা ভাবা উচিত। নিত্য যাত্রীরা ছাড়া চিকিৎসার জন্য প্রতি দিনই জেলা ও ঝাড়খণ্ড সীমান্তের বহু মানুষ সিউড়িতে আসেন। তাঁদের কথাও ভাবা দরকার।” সাঁইথিয়া এলাকার বাসিন্দা লক্ষ্মী মুর্মু বলেন, “শনিবার ডাক্তার দেখানোর জন্য সিউড়ি সদর হাসপাতালে যাওয়ার কথা ছিল। বাসের অভাবে যেতে পারিনি।” সিউড়ির বাসিন্দা প্রদ্যোৎ রায়ের ক্ষোভ, “রবিবার বহরমপুরে একটি ইন্টারভিউ ছিল। বাস বন্ধের কারণে শনিবার রাতে ট্রেন ধরে সাঁইথিয়ায় গিয়ে থাকতে হয়েছে।”
অন্য দিকে, আইএনটিইউসি নেতা মৃণাল বসু ও জেলা বাসমালিক সমিতির সভাপতি গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, “শনিবার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অমিতাভ সেনগুপ্তের উপস্থিতিতে তাঁর কার্যালয়ে বৈঠক হয়। সেখানে এসডিও সুজয় আচার্য-সহ অন্য প্রশাসনিক কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আমরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিলাম, শহরের রাস্তা ও বাসস্ট্যান্ডের ভিতরে থাকা সমস্ত অস্থায়ী দোকান ও স্থায়ী দোকানের বর্ধিত অংশ, সাইকেল, রিকশা, ভ্যান, মোটরবাইকের উৎপাত বন্ধ করার দাবি জানিয়েছিলাম। সেই সঙ্গে বাস ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে।” তাঁদের দাবি, “প্রশাসনের তরফে রবিবারের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছুই হয়নি। তাই বাসবন্ধ থাকার সিদ্ধান্তে অনড় থেকেছি।” পুরপ্রধান বলেন, “আমরা সাধারণ মানুষের রুটিরোজগার বন্ধের বিরুদ্ধে। তবে বাসস্ট্যান্ড চত্বরে যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, আমরা তাঁদেরকে সরে যাওয়ার জন্য বলেছি। বাসস্ট্যান্ডের বাইরে রাস্তা দখল করে যাঁরা বসে আছেন তাঁদের জায়গার ব্যবস্থা করে সরিয়ে দেওয়া যায় কি না চিন্তা ভাবনা করছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.