বামেদের আমলে সরকারি উদ্যোগে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার ব্লকের দুর্গাপুর এলাকায় সরকারি জমিতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্ট্রেনিং ইন্সটিটিউট (আইটিআই) তৈরির কাজ শুরু করেছিল পূর্ত দফতর। সম্প্রতি রাজ্য কারিগরি শিক্ষা দফতরের তরফে পূর্ত দফতরের কাছে আইটিআই তৈরির কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিপিআইয়ের রাজ্য কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য শ্রীকুমারবাবু বৃহস্পতিবার দুপুরে রায়গঞ্জের নিশীথ সরণি এলাকায় দলের উত্তর দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে ওই অভিযোগ তোলেন। শ্রীকুমারবাবু জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি পাঠিয়ে ওই অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি অবিলম্বে আইটিআই তৈরির কাজ শুরু করার নির্দেশ দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। আইটিআইয়ের কাজ শুরু করার দাবিতে কাল, শনিবার থেকে দুর্গাপুর এলাকায় সিপিআইয়ের কর্মী সমর্থকেরা এক সপ্তাহের জন্য রিলে অনশনে বসবেন বলে এদিন শ্রীকুমারবাবু ঘোষণা করেন। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আইটিআই তৈরির কাজ ফের শুরু করা না-হলে আমরণ অনশনে বসার হুমকি দিয়েছেন ইটাহারের প্রাক্তন বিধায়ক। এই বিষয়ে জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া বলেন, “আইটিআই তৈরির কাজ বন্ধের নির্দেশের কথা শুনেছি। জেলা প্রশাসন বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছে। এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।”
২০১০ সালের নভেম্বর মাসে দুর্গাপুর এলাকায় পূর্বতন রাজ্য সরকার প্রায় সাড়ে ৪ একর সরকারি জমিতে সাড়ে ৫ কোটি টাকা খরচে আইটিআই তৈরির অনুমোদন দেয়। সেই মতো কারিগরি দফতরের নিয়ন্ত্রণে গত ২৩ জানুয়ারী পূর্ত দফতর তৈরির কাজ শুরু করে। শ্রীকুমারবাবু বলেন, “কী কারণে রাজ্য সরকার ওই নির্দেশ দিল তা আমার কাছে স্পষ্ট নয়। ইতিমধ্যেই এক কোটিরও বেশি টাকার কাজ হয়ে গিয়েছে। আইটিআই তৈরির কাজ বন্ধ করে দেওয়া হলে নির্মাণ কাজে খরচ হওয়া টাকার ব্যয়ভার কে বহন করবে? অন্য কোনও জায়গায় আইটিআই সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হলে জমির সংস্থানই বা কোথা থেকে হবে?”
তাঁর অভিযোগ, নতুন রাজ্য সরকার শিক্ষাকে সঙ্কুচিত করার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যেই ইটাহার ব্লকের ৮টি জুনিয়র হাই স্কুলে শিক্ষকের অভাবে সংখ্যালঘু, আদিবাসী ও রাজবংশী সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের পঠন পাঠন ব্যহত হচ্ছে। তাঁর কথায়, “রাজ্য সরকার আইটিআই তৈরির কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়ে এলাকার পড়ুয়াদের কারিগরি শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করছে। আপাতত রিলে অনশনে বসছি। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে যদি সরকারের তরফে ফের আইটিআই তৈরির কাজ শুরু করার নির্দেশ না দেওয়া হয় তবে আমরন অনশনে বসব বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দিয়েছি।”
জেলা তৃণমূল সভাপতি অসীম ঘোষ বলেন, “শ্রীকুমারবাবুরাই গত ৩৪ বছর ধরে রাজ্য জুড়ে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় ছিলেন। আমরাও চাই দুর্গাপুর এলাকাতেই প্রস্তাবিত আইটিআই আইটিআই হোক। কেন রাজ্য সরকারের তরফে আচমকা আইটিআই তৈরির কাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হল তা দলের তরফে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।” জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “আইটিআই তৈরির কাজ ফের শুরু করার দাবিতে ইটাহার ব্লক কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকেরা বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলনে নেমেছেন। দলের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আইটিআই-এর কাজ শুরু করার নির্দেশ দেওয়ার জন্য ফ্যাক্স বার্তা পাঠানো হচ্ছে।” |