অনির্দিষ্টকাল বনধের ডাক
ছাত্র পরিষদের আন্দোলন এনবিইউতে
ছাত্র সংসদের নির্বাচন স্থগিত করার প্রতিবাদে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছাত্র ধর্মঘট শুরু করল ছাত্র পরিষদ। বৃহস্পতিবার থেকে তা শুরু হয়। ছাত্র সংসদের নির্বাচনকে ঘিরে এই অচলাবস্থার জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু’র বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলল ছাত্র পরিষদ। আগামী ১৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নির্বাচন হওয়ার কথাছিল। তা পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনে নামে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। বুধবার কর্তৃপক্ষ তা স্থগিত ঘোষণা করেন। প্রতিবাদে এ দিন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছাত্র ধর্মঘট শুরু হয়। ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, “বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সংগঠন গড়ে তোলার জন্য গৌতমবাবু এবং ব্রাত্যবাবু চেষ্টা করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশ আধিকারিককে টেলিফোনে নানা নির্দেশ দিচ্ছেন। চাকরি নিয়ে সমস্যা হতে পারে, এই ভয়ে তাঁরা নির্দেশ মেনে কাজ করছেন। সংসদের নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেও তা আইন, কমিটির সদস্যদের পদত্যাগের কথা বলে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি জানানোর পাশাপাশি দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগপত্র পাঠাচ্ছে ছাত্র পরিষদ। পক্ষান্তরে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ অভিযোগ করেছে, ছাত্র পরিষদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অস্থির করতে চাইছে।
ছবিটি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।
বুধবার ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে তাতে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিত তুলেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। টিএমসিপি-র দার্জিলিং জেলা সভাপতি নির্ণয় রায় বলেন, “ছাত্র পরিষদের যাঁরা হামলায় যুক্ত তাঁদের গ্রেফতার করা না-হলে টানা আন্দোলন হবে।” এসএফআইয়ের পক্ষ থেকেও ঘটনার নিন্দা করা হয়েছে। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌরভ দাস বলেন, “ছাত্র পরিষদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়ে অন্যায় করেছে। এঅটা মানা যায় না। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে ছাত্র সংসদ ভোট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের টালবাহানাও মেনে নেওয়া যায় না। আমরাও আন্দোলনে নামছি।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আইন রয়েছে। সেটি স্বশাসিত সংস্থা। এখানে আমি বা উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রীর হস্তক্ষেপের ব্যাপারই নেই। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের মতো কাজ করবেন। তবে পরীক্ষা পিছিয়ে দিয়ে নির্বাচন হয় এমন কোনও দিন শুনিনি। গণতান্ত্রিক নিয়মেই ছাত্র সংসদের নির্বাচন হওয়া জরুরি। সমস্ত ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি চান মুখ্যমন্ত্রী। কখন কী ভাবে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হবে তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেখবেন।” এ দিন থেকে থেকে সংসদের নির্বাচনের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধমর্ঘট শুরু করেছে ছাত্র পরিষদ। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি ৩১-নম্বর জাতীয় সড়ক প্রায় আধ ঘন্টা অবরোধ করে রাখে পরিষদের কর্মীরা। পোড়ানো হয় দুই মন্ত্রীর কুশপুতুলও। অফিসার-কর্মীদেরও দফতরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। নকশালবাড়ি এবং বাগডোগরা কলেজেও ধমর্ঘট হয়েছে বলে ছাত্র পরিষদের তরফে জানানো হয়েছে। ছাত্র পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতি রোনাল্ড দে-এর অভিযোগ, “১৫ ডিসেম্বর সংসদের নির্বাচন হওয়ার দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনকে মজবুত করার জন্য নির্বাচন পিছিয়ে দিতে অফিসারদের বাধ্য করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করে বহিরাগতদের তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকাচ্ছেন। মুখে ভোট প্রচার, ভর্তির দিনক্ষণ কথা বলে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হল। মুখ্যমন্ত্রীকে আমরা দুই মন্ত্রীর কাজকর্ম জানাচ্ছি।” ছাত্র পরিষদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হচ্ছে না। এওই দাবিতে তারা অনশন করেন। চাপে পড়ে আগামী ১৫ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন ঘোষণাও করা হয়। এর পর তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নির্বাচন পিছনোর দাবি তোলে। বুধবার তারা রেজিস্ট্রারে দফতর ঘেরাও করে। তাদের নেতামন্ত্রীর হস্তক্ষেপেই ওই দিন বিকালে নির্বাচন অন্যায়ভাবে স্থগিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। নির্বাচন স্থগিত ঘোষণার পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, কলাবিভাগ-সহ নানা জায়গায় ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত একদল পড়ুয়া। তবে ভাঙচুরের ঘটনায় ছাত্র পরিষদের কেউ জড়িত নন বলে এ দিন রোনাল্ডবাবু ফের দাবি করেছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.