বিধানসভার সঙ্গে ফের ‘সংঘাত’ বাধল উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপারের।
বিধায়কদের নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে একটি ঘটনায় ওই পুলিশ সুপারের প্রাথমিক ব্যাখ্যায় ‘সন্তুষ্ট’ না-হওয়ায় তাঁকে বিধানসভায় ফের তলব করে জবাবদিহি চাওয়ার কথা বিবেচনা করছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
জোট সরকারের শরিক কংগ্রেসের এক বিধায়কের সঙ্গে বিবাদের জেরে এর আগেও এক বার ওই এসপি-কে বিধানসভায় ডেকে পাঠিয়েছিলেন স্পিকার। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এ বারের ‘সংঘাত’ বেধেছে বিরোধী বামফ্রন্টের বিধায়কদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে।
তাঁদের নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহার করে নেওয়ার বিরুদ্ধে জেলা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন বর্ধমানের রায়নার সিপিএম বিধায়ক বাসুদেব খাঁ এবং উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়ার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক আলি ইমরান রাম্জ (ভিক্টর)। কিন্তু ভিক্টরের অভিযোগ, নিরাপত্তা রক্ষী রাখলে তার বিনিময়ে ভাড়া দিতে হবে তাঁকে জানিয়ে দেন উত্তর দিনাজপুরের এসপি দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। বিষয়টি স্পিকারের গোচরে আনা হয়।
স্পিকারের বক্তব্য, তিনি এসপি-র ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলেন। এসপি তাঁকে জানান, ওই বিধায়কের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও আশঙ্কা নেই বলে গোয়েন্দা রিপোর্ট থেকে জেনেছে পুলিশ। এর পরেও নিরাপত্তারক্ষী নিতে হলে বিধায়ককে ‘নিজ দায়িত্বে’ই নিতে হবে। এই ব্যাখ্যাতেই ‘সন্তুষ্ট’ না-হয়ে এসপি-র জবাবদিহি চাওয়ার কথা ভাবছেন স্পিকার।
বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার স্পিকারের সঙ্গে আসন্ন অধিবেশনের ব্যাপারে আলোচনা করতে গিয়েছিলেন সিপিএমের আনিসুর রহমান, আরএসপি-র সুভাষ নস্কর, ফরওয়ার্ড ব্লকের পরেশ অধিকারী ও বিশ্বনাথ কারক, ডিএসপি-র প্রবোধ সিংহ, সমাজবাদী পার্টির চাঁদ মহম্মদেরা। তাঁরা নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে সমস্যার প্রসঙ্গটি তোলেন। পরে স্পিকার বিমানবাবু বলেন, “জেলা পুলিশ সুপার যা বলেছেন, এতে আমরা ঠিক সন্তুষ্ট হতে পারছি না। তাঁর কাছে আরও ব্যাখ্যা চাইব। ওঁকে ডেকে পাঠানো হতে পারে।”
প্রসঙ্গত, এর আগে একটি অনুষ্ঠানে রায়গঞ্জের বিধায়ক তথা স্থানীয় পুরসভার চেয়ারম্যান, কংগ্রেসের মোহিত সেনগুপ্তের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিলেন ওই এসপি-ই। স্পিকার তাঁকে নিজের দফতরে ডেকে পাঠিয়ে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আচরণের ব্যাপারে ‘সতর্ক করেছিলেন। অধিবেশন শুরুর আগে বিধানসভার সার্বিক নিরাপত্তা নিয়েও এ দিন পুলিশ-কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে স্পিকারের। গাড়ি রাখা এবং ‘বহিরাগত’ প্রবেশের বিষয়ে কিছু কড়াকড়ির কথা আলোচনা হয়েছে। বিমানবাবুর কথায়, “মাওবাদী নেতা কিষেণজি’র মৃত্যুর পরে বিধানসভার নিরাপত্তার দিকটা আমরা আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। জঙ্গলমহল থেকেও অনেক বিধায়ক আসেন। কথা হয়েছে, প্রয়োজনে বিধায়কদের দেহ-তল্লাশি করা হতে পারে। আমি বলেছি, এই নিয়ম চালু হলে আমাকেও দেহ-তল্লাশি করা হোক। যাতে কোনও বিধায়ক না-ভাবেন যে, তাঁকে হেনস্থা করা হচ্ছে।” |