নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
তিনি প্রতিবন্ধী, শংসাপত্র বলছে। পরে দেখা যায়, তিনি প্রতিবন্ধী নন।
প্রতিবন্ধীর ভুয়ো সার্টিফিকেট বা শংসাপত্র দেখিয়ে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হওয়ার দায়ে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ হারাচ্ছেন এক ছাত্রী। শুধু তা-ই নয়, অন্য এক প্রতিবন্ধীর ডাক্তারি পড়ার সুযোগ নষ্ট করার জন্য ওই ছাত্রীর ১৫ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে আদালত। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপেন সেন বৃহস্পতিবার এই রায় দিয়েছেন।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রীর নাম স্বস্তিকা মণ্ডল। ভর্তি হওয়ার পরে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি আসলে প্রতিবন্ধী নন। মেডিক্যাল কলেজের কর্তৃপক্ষ ওই অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে দেখেন, স্বস্তিকার প্রতিবন্ধী শংসাপত্রটিই ভুয়ো। মেডিক্যাল কলেজ ওই শংসাপত্র বাতিল করে দেয়। তার পরেই আদালতের দ্বারস্থ হন স্বস্তিকা। আদালতে তিনি জানিয়েছিলেন, ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল তাঁকে প্রতিবন্ধী শংসাপত্র দিয়েছে। সেই শংসাপত্র দেখিয়েই তিনি প্রতিবন্ধী কোটায় ডাক্তারিতে ভর্তি হন। রাজ্যের একই স্বাস্থ্য দফতরের অন্তর্গত একটি হাসপাতালের দেওয়া শংসাপত্র অন্য হাসপাতাল বাতিল করতে পারেন না বলে তিনি আদালতে সওয়াল করেন। কিন্তু এ দিন আদালত তাঁর আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।
মেডিক্যাল কলেজের আইনজীবী গওসউল আলম এ দিন বলেন, “স্বস্তিকা প্রতিবন্ধী নন। তাই তিনি প্রতিবন্ধী কোটায় ডাক্তারি পড়ার সুযোগ হারাচ্ছেন।” ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল থেকে স্বস্তিকাকে ওই প্রতিবন্ধী শংসাপত্র দেওয়া হয়েছিল। আদালতের রায়ে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, একটি সরকারি হাসপাতাল কী ভাবে ভুয়ো শংসাপত্র দিল? ঘাটাল হাসপাতালের সুপার অনুরাধা দেব এই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
স্বস্তিকার ওই শংসাপত্রে ঘাটাল হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জন জয়দীপ পালের সই রয়েছে। জয়দীপবাবুর কথায়, “ওঁর পায়ে বিকৃতি ছিল। আমি ওঁর পায়ের যা অবস্থা দেখেছি, সেটাই লিখেছি। হয়তো পরে ওষুধ খেয়ে কনট্রাকচার বা বিকৃতি অনেকটা ঠিক হয়েছে।”
রাজ্যের প্রতিবন্ধী কমিশনার মিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের এক শ্রেণির কর্মী এই রকম ভুয়ো শংসাপত্র দেওয়ার চক্রে জড়িত। রেলের পাশের জন্যও এই ধরনের বহু শংসাপত্র পুলিশের হাতে আসছে।” স্বাস্থ্যকর্তারাও জানিয়েছেন, ভুয়ো শংসাপত্র ধরার ক্ষেত্রে উপযুক্ত নজরদারির অভাব থেকে যাচ্ছে। |