কমলা গার্লস স্কুলের শিক্ষিকা নূপুর মুখোপাধ্যায়ের সব ধরনের স্বাস্থ্যপরীক্ষা এসএসকেএম হাসপাতালেই হবে। অতিরিক্ত জিপি তপন মুখোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে জানিয়ে দেন, এসএসকেএমে ওই সব পরীক্ষা ৫-৬ হাজার টাকার মধ্যেই হয়ে যাবে। প্যাডের বদলে সাদা কাগজে রিপোর্ট পেশের জন্য এ দিন শুনানির শুরুতেই হাসপাতালের তরফে দুঃখ প্রকাশ করেন তপনবাবু।
হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল ও বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, আবেদনকারিণী প্রয়োজনীয় টাকা জমা দেওয়ার পরে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁর স্বাস্থ্যপরীক্ষা শেষ করতে হবে। তার রিপোটর্র্ যাবে এসএসকেএমের মেডিক্যাল বোর্ডের কাছে। ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে ওই হাসপাতালের সুপারকে। একই সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ওই শিক্ষিকাকে যাতে কোনও রকম হয়রানির শিকার হতে না-হয়, হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষকেই সেটা সুনিশ্চিত করতে হবে।
নূপুরদেবীর আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, এসএসকেএমে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বসিয়ে রাখার পরেও কোনও চিকিৎসক তাঁর মক্কেলের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করেননি। তাঁর অভিযোগ, ওই সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভিআইপি-দের চিকিৎসা এবং সাধারণ মানুষের চিকিৎসা দু’টি ভিন্ন ধারায় হয়। তিনি বলেন, “সেই অবস্থা দেখার জন্য, জানার জন্য হাসপাতালে যেতে হবে। নইলে পার্থক্যটা বোঝা যাবে না।” এসএসকেএমের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই করে দেখারও আবেদন জানান সুব্রতবাবু। তিনি বলেন, বেসরকারি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই প্রাথমিক শিক্ষিকাকে যে-সব পরীক্ষা করাতে বলা হয়েছে, তা করাতে ৪৫ হাজার টাকা লাগবে।
তপনবাবু অবশ্য বলেন, শিক্ষিকার স্বাস্থ্যপরীক্ষা এসএসকেএম হাসপাতালেই হবে। এবং পরীক্ষা করা হবে সরকার নির্ধারিত মূল্যেই। তাতে ছ’হাজারের বেশি টাকা লাগবে না। ঠিক হয়েছে, আজ, শুক্রবার সকাল ১০টায় নূপুরদেবী হাসপাতালে টাকা জমা দেবেন। পরীক্ষা পর্ব শেষ হবে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে।
সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ডিউটি দেওয়া হয়েছিল নূপুরদেবীকে। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ওই শিক্ষিকা ভোটের কাজে যাননি। তাই তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয় নির্বাচন কমিশন। ওই শিক্ষিকা কমিশনের নির্দেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেন। নূপুরদেবীকে পরীক্ষা করে তিনি কতটা অসুস্থ, তা জানানোর জন্য এসএসকেএম-কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। ওই শিক্ষিকার বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করতে হবে বলে জানিয়ে পিজি-র সুপার সাদা কাগজে রিপোর্ট পাঠিয়েছিলেন আদালতে।
অতিরিক্ত জিপি আদালতের বাইরে বলেন, এসএসকেএমের সুপার বিশেষ ব্যস্ততার জন্য এ দিন আসতে পারেননি। তবে অ্যাসিন্ট্যান্ট সুপার তাঁদের এই ভুলের জন্য তাঁর কাছে এসে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
তপনবাবু জানান, রাজ্য সরকার চিকিৎসকদের এই ধরনের আচরণের বিরোধী। ১৫ নভেম্বর মামলাটির ফের শুনানি হবে। |