|
|
|
|
যুবককে ভর্ৎসনা, হাত কাটা গেল প্রতিবেশীর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আলিপুরদুয়ার |
প্রথম বর্ষের ছাত্রীকে নিয়ে পালানোর জন্য এক যুবককে ভর্ৎসনা করায় প্রতিবেশীর হাত কেটে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে আলিপুরদুয়ার শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের পুরনো এসবিআই গলিতে। ওই যুবকের দাদা প্রতিবেশীর হাতে কোপ মারেন বলে অভিযোগ। অভিযুক্তের বাবা পুলিশে চাকরি করেন।
পুলিশ জানায়, জখম ব্যক্তির নাম মিঠু সেনগুপ্ত। চল্লিশোর্ধ্ব পরিবহণ ব্যবসায়ী মিঠুবাবু এলাকার দুই কলেজ ছাত্রছাত্রীর পালানোর ঘটনা নিয়ে সরব হন। চার দিন আগে ওই ছাত্রীটিকে বাড়ির লোকেরা ফিরিয়ে নিয়ে যান। তার পরেও প্রেমিক ছাত্র রকি দাস বিয়ের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। সেই সময়ে প্রতিবেশী হিসাবে মিঠুবাবু ছাত্রটিকে ভর্ৎসনা করেন। তিনি ‘নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পরে’ ছাত্রটিকে বিয়ের পরামর্শ দেন।
রকির দাদা হকি ঘটনাটি জানতে পেরে বুধবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ মিঠুবাবুর বাড়িতে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। ওই সময়ে ভোজালি দিয়ে মিঠুবাবুকে কোপানো হয়। হামলার জেরে তাঁর বাঁ হাতের কব্জি আলাদা হয়ে গিয়েছে। মাথা, গলা, পিঠ, ও ঘাড়ে চোট রয়েছে। গুরুতর জখম ওই প্রতিবেশীকে রাতেই প্রথমে আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতাল এবং পরে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, কব্জিটি হাতের সঙ্গে জোড়ার চেষ্টা চলছে। আলিপুরদুয়ারের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, “হামলার খবর পেয়ে রাতেই আলিপুরদুয়ার থানার আইসি গিয়ে জখম যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। হামলাকারী যুবক হকিকে খোঁজা হচ্ছে।” |
|
বুধবার রাতে আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালে আহত মিঠু সেনগুপ্ত। নারায়ণ দে-র তোলা ছবি। |
জখম মিঠুবাবু বলেন, “রাতে বাড়ি ফিরে গেট খুলতে যাওয়ার সময় হঠাৎ আমার পিছনে একটা মোটরবাইক এসে দাঁড়ায়। পিছন ফিরে দেখি, হকি বাইক থেকে নামছে। ও আমাকে বলে ‘মিঠুদা কেমন আছ’। আমি ওকে ঘরে আসতে বলার পর দেখি, ও একটা অস্ত্র বের করেছে। তার পরে কিছু বোঝার আগেই অস্ত্রটি আমার উপর চালাতে থাকে। তার পর খেয়াল করলাম, আমার বাঁ হাতের পাঞ্জা কব্জি থেকে কেটে মাটিতে পড়ে রয়েছে। আমি চিৎকার করায় হকি বাইক নিয়ে পালিয়ে যায়।” হকির পরিবার ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। হকির এক আত্মীয় জানান, তাঁরা বিষয়টি খোঁজখবর নেওয়ার পরেই মন্তব্য করবেন। অন্য দিকে, ওই তরুণীর পরিবার এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, হকির বিরুদ্ধে এলাকায় বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। আগেও পুলিশের কাছে মৌখিক ভাবে বিষয়টি কয়েকজন প্রবীণ বাসিন্দা জানিয়েছেন। কিন্তু, পুলিশকর্মীর ছেলে হওয়ার কারণে হকিকে ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ। আলিপুরদুয়ার পুরসভার চেয়ারম্যান দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশকে বিষয়টি নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। সন্ধ্যার পরে শহরের অলিগলিতে নেশার আড্ডা কমাতে পুলিশ-প্রশাসনকে অনুরোধ করব।” |
|
|
|
|
|