দিনভর নানা কারণে রাস্তা অবরোধ আর বিক্ষোভের জেরে চরম হয়রান হতে হল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার মানুষকে। কোথাও দলীয় সদস্যকে মারধরের অভিযোগে রাজনৈতিক দলের রাস্তা অবরোধ, কোথাও খারাপ রাস্তা সংস্কারের দাবি তো কোথাও পরিবহণ শ্রমিককে মারধরের প্রতিবাদে অবরোধ বিক্ষোভের জেরে বৃহস্পতিবার কাজে বের হওয়া মানুষজন নাকাল হলেন। ইটিন্ডা রোড, এসএন মজুমদার রোড, হাসনাবাদ--সর্বত্রই অবরোধ, বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের ভূমিকায় এদিন ক্ষোভে ফেটে পড়ে জনতা। তাঁদের অভিযোগ, সমস্যা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাই বলে আগে থেকে না জানিয়ে এ ভাবে আচমকা রাস্তা বন্ধের জেরে চরম হয়রান হতে হল। প্রশাসনের তরফেও পরিস্থিতি সামাল দিতে তেমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুরে বসিরহাটের ইটিন্ডার গাছায় স্থানীয় পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য নিখিল দাসের উপরে কয়েকজন চড়াও হয়ে তাঁকে মারধর করে। নিখিলবাবুকে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এর প্রতিবাদে এ দিন সকাল ৮টা থেকে ইটিন্ডার আখাড়পুরের ঢেমঢেমির মোড়ের কাছে ওল্ড সাতক্ষীরা রোডে গাছের গুঁড়ি ফেলে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কংগ্রেস কর্মীরা। ওই রাস্তা দিয়েই সীমান্ত বাণিজ্যের জন্য পণ্যবাহী লরি ঘোজাডাঙা হয়ে বাংলাদেশে যায়। রাস্তা অবরোধের জেরে আটকে পড়ে বহু পণ্যবোঝাই লরি। ব্যাহত হয় বাণিজ্য। বেলা ১০টা নাগাদ প্রশাসনের পক্ষ থেকে দোষীদের গ্রেফতার ও শাস্তির আশ্বাস দেওয়া হলে অবরোধ ওঠে। কিন্তু দীর্ঘসময় অবরোধের কারণে সৃষ্টি যানজটের জন্য গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হতে হতে দুপুর হয়ে যায়।
রাস্তা সারানোর দাবিতে বুধবার বসিরহাটের ইটিন্ডা রোড ও টাকি রোডের সংযোগকারী রাস্তা এসএন মজুমদার রোড অবরোধ করেছিলেন স্থানীয় জনতা। বৃহস্পতিবারও সেই অবরোধ অব্যাহত ছিল। রাস্তা মেরামত না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ, বিক্ষোভ জারি রাখার বিষয়ে বিক্ষোভকারীদের অনড় মনোভাবে গোটা শহর জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ ও প্রশাসনের হাজারো অনুরোধেও বিক্ষোভকারীরা তাঁদের সিদ্ধান্ত বদলাননি।
এর পাশাপাশি ফের এ দিন সকাল থেকে হাসনাবাদ ও হিঙ্গলগঞ্জের মধ্যে সমস্ত গাড়ি চলাচল বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু হয়। গতকালও এই এলাকায় গাড়ি চালানো নিয়ে দু’টি ইউনিয়নের শ্রমিকদের মধ্যে মারামারিতে তিন ঘণ্টা বন্ধ ছিল যান চলাচল।
সকাল থেকেই রাস্তা আটকে অবরোধ, বিক্ষোভ শুরু হয়ে যাওয়ায় স্কুল-কলেজ, অফিস-কাছারিতে বের হওয়া মানুষজন চরম অসুবিধায় পড়েন। অবরোধকারীদের হটিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে পুলিশকে সেভাবে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি বলে সাধারণ মানুষের অভিযোগ।
এ ব্যাপারে পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, জোর করে অবরোধ তুলতে গেলে বিপত্তি ঘটতে পারত। তাই অবরোধকারীদের বুঝিয়ে সুঝিয়ে অবরোধ তোলার ব্যবস্থা করতে হয়েছে। অনুরোধে সাড়া দিয়ে কয়েক জায়গায় বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেন। |