মুর্শিদাবাদে গুণমান নিয়ে বিরোধ চাপানউতোরে সঙ্কটে ধান কেনা
ধানের গুণমান ও ওজন নিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলায় কৃষকের সঙ্গে চালকল মালিকদের নিত্য বিরোধের ফলে সরকার র্নিদ্ধারিত সহায়ক মূল্যে চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে ‘মুর্শিদাবাদ জেলা চালকল মালিক সমিতি’র পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার জেলার খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগের নিয়ামকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ামক সমীর দেব বলেন, “কৃষকের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা নিয়ে চালকল মালিকদের কিছু সমস্যা হচ্ছে ঠিকই। ওই বিষয় নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। ধানের গুণমান ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে সব সমস্যা হচ্ছে সে বিষয়ে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। ধান কেনার কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য চালকল মালিকদের অনুরোধ করা হয়েছে।”
কিন্তু ওই অনুরোধ কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় দেখা দিয়েছে চালকল মালিক সমিতির আহ্বায়কের কথায় । সমিতির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বলেন, “আমাদের দাবি পূরণ না করা হলে পূর্ব নির্দ্ধারিত গুটি কয়েক শিবির থেকে ধান কেনা হবে। তার পর ধান কেনার জন্য নতুন করে আর কোনও শিবির করা হবে না।” এ জেলা থেকে এ বছরে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার লক্ষ্য মাত্র ধার্য করা হয়েছে ৫৫ হাজার মেট্রিক টন। সমীরবাবু জানান, তার মধ্যে এখন পর্যন্ত ৯ মেট্রিক ধান কেনা হয়েছে। বাকি ৪৬ মেট্রিক টন ধান কেনা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ার পাশাপাশি অভাবি বিক্রয়ের সম্ভবনাও বাড়বে।
মালিক সমিতির সম্পাদক দিলীপকুমার সাহার দাবি, “সহায়ক মূল্যে কেনা এক কুইন্টাল ধান থেকে ৬৮ কেজি চাল নেবে। কিন্তু এ জেলার ধানের গুণমানের কারণে কৃষকের কাছ থেকে কেনা এক কুইন্টাল ধান থেকে ৬২ কেজির বেশি চাল হচ্ছে না। এক কুইন্টাল ধান কেনার জন্য বস্তা, মজুরি ও সেলাই বাবদ মিল মালিকদের সরকার দিচ্ছে ১৬৪ টাকা ৭৫ পয়সা। তা থেকে সব খরচ মিটিয়ে হাতে থাকছে ২০-২২ টাকা। ফলে আখেরে চালকল মালিকদের লোকসান হচ্ছে কুইন্টাল প্রতি প্রায় দেড়শো টাকা।” ফলে মিল মালিকরা বি ডি ও অফিস, বা পঞ্চায়েত ভবন চত্বরে গিয়ে শিবির করে আর ধান কিনতে নারাজ। সমীরবাবু বলেন, “তাঁরা ধান না কিনলে অন্ত্যোদয় ও অন্নপূর্ণা যোজনার মতো প্রকল্পে চাল মিলবে না। তাই ধান ভেজা থাকার জন্য ও ধানে আর্বজনা থাকার জন্য ঢলতা (অর্থাৎ কুইন্টাল প্রতি ৫-১০ কেজি বাদ দেওয়া) ধরে নিয়ে ধান কিনলে লোকসানের সমস্যা মিটবে।” কাজিয়া ওই ঢলতা নিয়েই। স্থানীয় চাষি ভবানীপুরের হুমায়ুন কবীরের পাল্টা দাবি, “কুইন্টাল প্রতি ৬২ থেকে ৬৫ কেজি ধান হয়। প্রতি কুইন্টালে তাই ৬ থেকে ৭ কেজি ছাড় দিলে চালকল মালিকদেরও সুবিধা হবে।” সমিতির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বলেন, “এ জেলায় চালকল মালিকরা এ পর্যন্ত প্রায় দেড়শোটি শিবির করে ধান কিনেছেন। ভেজা ও আর্বজনার জন্য ঢলতা ধরে নিয়ে ধান কিনতে গিয়েই এক শ্রেণির কৃষকের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে আমাদের। এ কারণে শিবিরে গিয়ে ধান কেনার জন্য মজুর মিলছে না। ফলে কৃষকরা চালকলে গিয়ে ধান দিলে তা কেনা হবে, নচেৎ নয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.