খেজুরি
নেতারা ফেরার, সংশয়ে সিপিএম সম্মেলন
ন্দীগ্রামের ভূমি-কমিটির নিখোঁজ সদস্যদের ব্যাপারে সিআইডি তদন্ত শুরু হতেই আত্মগোপন করেছেন খেজুরির সিপিএম নেতাদের অনেকেই। যাঁরা এমনিতেও অনেকে বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পরেই এলাকা ছাড়া হয়েছিলেন। কিন্তু তা-ও তাঁদের কাউকে কাউকে হলদিয়া বা তমলুকে দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু নিখোঁজ-কাণ্ডে জড়িয়ে যাওয়ার ‘ভয়ে’ একেবারেই আর সামনে আসছেন না। অন্য এক দল সিপিএম নেতাও পালাবদলের পরে নতুন শাসকদল তৃণমূলের ‘সন্ত্রাসে’ ঘর ছাড়া। এই অবস্থায় সিপিএমের খেজুরি জোনাল কমিটির সম্মেলন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
‘প্রতিকূল পরিস্থিতি’র জন্য নন্দীগ্রাম, খেজুরির জোনালস্তরের (এমনকী কয়েকটি লোকাল কমিটিরও) সম্মেলন এলাকার বাইরে করার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। দলের সেই সিদ্ধান্ত মেনে খেজুরির কয়েকটি মাত্র লোকাল কমিটির সম্মেলন হয়েওছে তমলুকে দলের জেলা কার্যালয়ে। একই ভাবে নন্দীগ্রামের কয়েকটি লোকাল কমিটির সম্মেলন হয়েছে হলদিয়ায়। মুগবেড়িয়া লোকাল কমিটির সম্মেলন হয়েছে কাঁথিতে। তবে নন্দীগ্রামের দু’টি লোকাল কমিটির সম্মেলন এলাকায় হলেও খেজুরির একটি সম্মেলনও এলাকায় করা যায়নি। কিন্তু অন্যত্রও যে জোনাল সম্মেলন হবেতারও অনুকূল পরস্থিতি তৈরি হচ্ছে না বলে একান্তে স্বীকার করছেন জেলা নেতৃত্বের একাংশ।
খেজুরির দুই দাপুটে নেতা---জোনাল সম্পাদক হিমাংশু দাস এবং জোনাল সদস্য বিজন রায়ের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে সিআইডি। ২০০৭-এর নভেম্বরে নন্দীগ্রামে ভূমি-কমিটির মিছিলে সিপিএমের হামলার পর থেকে ‘নিখোঁজ’ কমিটি-সমর্থকদের খুন করে দেহ লোপাট করা হয়েছে বলেই প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে সিআইডি। সেই গুমখুন-কাণ্ডে হিমাংশুবাবু, বিজনবাবু ছাড়াও আরও কয়েক জন সিপিএম নেতা যুক্ত বলেও মনে করছে তদন্ত-সংস্থা। তাঁদেরও খোঁজ চলছে। ওই নেতারাও আত্মগোপন করেছেন। ফলে খেজুরির লোকাল-জোনাল সম্মেলন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিরঞ্জন সিহির অবশ্য বক্তব্য, “সাংগঠনিক নিয়ম মেনেই সম্মেলন হবে।” পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূলের সন্ত্রাসে দলের অনেক নেতা-কর্মী ঘর ছাড়া। তাই পরিস্থিতি বিবেচনা করেই নন্দীগ্রাম-খেজুরির সম্মেলন অন্যত্র হবে।”
সিপিএম সূত্রের দাবি, ২০০৮-এ পঞ্চায়েত, ২০০৯-এ লোকসভা নির্বাচনে বাম-বিপর্যয়ের পর থেকেই জেলা জুড়ে শুরু হয় ‘তৃণমূলের সন্ত্রাস’। তখন থেকেই সিপিএমের প্রায় আড়াই হাজার নেতা-কর্মী ঘর ছাড়া। এই অবস্থায় নন্দীগ্রাম, খেজুরি ও হলদিয়ার দু’টি করে জোনাল কমিটি মিশিয়ে একটি করে সাংগঠনিক জোনাল কমিটি তৈরি করা হয়েছিল আগেই। এর ফলে জেলায় দলের জোনাল কমিটির সংখ্যা ২৬ থেকে কমে হয় ২৩টি। একই ভাবে একাধিক লোকাল কমিটি মিলিয়ে গড়া হয় সাংগঠনিক লোকাল কমিটি। ফলে জেলায় লোকাল কমিটির সংখ্যাও ১৬০ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১৩৯টি। দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে এ বার শাখা সম্মেলন হয়নি। অধিকাংশ লোকাল সম্মেলন প্রায় শেষ। বেশ কিছু এলাকায় জোনাল সম্মেলনও শেষ। কিন্তু খেজুরি-নন্দীগ্রামের কিছু লোকাল সম্মেলনই এখনও শেষ হয়নি। আর নন্দীগ্রামের সাংগঠনিক জোনাল কমিটির সম্মেলন চণ্ডীপুরে করার পরিকল্পনা থাকলেও খেজুরি জোনাল কমিটির সম্মেলন নিয়ে এখনও সংশয় থেকে যাচ্ছে।
জেলায় দলের ২৩টি জোনাল কমিটির মধ্যে বুধবার পর্যন্ত ৯টি জোনাল কমিটির সম্মেলন হয়েছে। এর মধ্যে চণ্ডীপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক পরিবর্তন হয়েছে। বিদ্যুৎ গুছাইত তিন বারের বেশি সময় ধরে সম্পাদক ছিলেন। দলীয় নির্দেশে তিনি ওই পদ থেকে সরে যান। নতুন সম্পাদক হয়েছেন মঙ্গলেন্দু প্রধান। অন্য দিকে, নন্দকুমার জোনাল কমিটির সম্পাদক হয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি হৃষিকেশ মাজি। নন্দকুমার জোনাল কমিটির সাওড়াবেড়িয়া-জালপাই লোকাল কমিটির সম্পাদক রামপদ মাজিকে আবার দলবিরোধী কাজের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়। সেখানে নতুন সম্পাদক হয়েছেন সুবল মাজি। জেলা-সদর তমলুকের শহর জোনাল কমিটির সম্পাদক বিজন মিত্র অবশ্য পুনরায় সম্পাদক হয়েছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.