শেষ হয়ে যেতে পারত ক্রিকেটজীবন। কেরিয়ারের ঝুঁকি নিয়ে বৃহস্পতিবারের ইডেনে ব্যাট হাতে নেমেছিলেন রোহন বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়মের চোখরাঙানিতে দিনের শেষে তাঁর চেষ্টা হয়তো বাংলার ফলো-অন বাঁচায়নি, কিন্তু বাংলা ক্রিকেটে অনমনীয় মনোভাবের দৃষ্টান্ত হিসেবে থেকে যাচ্ছে ক্রিজে রোহনের ১৭ মিনিটের উপস্থিতি।
ভারতীয় ক্রিকেটে প্রতিবন্ধকতা নিয়ে মাঠে নেমে পড়ার নজির কম নেই। ভাঙা চোয়ালে ব্যান্ডেজ বেঁধে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্টে বল করেছিলেন অনিল কুম্বলে। ভাঙা আঙুল নিয়ে ২০০৩ বিশ্বকাপ খেলেছিলেন সচিন তেন্ডুলকর। জাতীয় দলের হয়ে না হলেও রোহনের হার না মানা মনোভাব অবশ্যই নজিরবিহীন বলে মনে করছে বাংলার ক্রিকেটমহল। তলপেটে ব্যথা নিয়ে দু’দিন নার্সিং হোমে কাটিয়ে বৃহস্পতিবারই ছাড়া পান বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান। ইডেনে তাঁর দল তখন অথৈ জলে।
বাংলাকে টেনে তোলার একটি মরিয়া চেষ্টা করতে আট নম্বরে ব্যাট করতে পাঠানো হয় রোহনকে। সঙ্গে রানার হিসেবে যান অভিষেক ঝুনঝুনওয়ালা। অভিষেক মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গে ম্যাচ রেফারি জানান, এ রকম পরিস্থিতিতে রানার ব্যবহার করা আইসিসি-র নিয়মবিরুদ্ধ। নিয়মটা জানতেন না বাংলা অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। দিনের শেষে সৌরভ বলছিলেন, “এর জন্য সিএবি-কে দোষ দেওয়া যায় না। আমরাই রোহনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ও ব্যাট করতে পারবে কি না। আগেও অনেকে চোট নিয়ে ব্যাট করেছে। রানার নেওয়া যাবে না, আইসিসি-র এই নিয়মটা জানতাম না।”
রোহনের চিকিৎসক জানিয়েছেন, অন্তত চার-পাঁচ দিন বিশ্রাম দরকার ছিল তাঁর। এই অবস্থায় কোনও ভাবেই রানার না নিয়ে রোহনের পক্ষে ব্যাট করা সম্ভব হত না।
বাংলা এবং রোহনের দুর্ভাগ্য, এত বড় ঝুঁকিও শেষমেশ স্রেফ দৃষ্টান্ত হিসেবেই থেকে গেল। |