তিনি নাকি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন! তাঁর নাকি বয়স হয়ে গিয়েছে!
এক দিনের ক্রিকেটের ব্যক্তিগত কীর্তির সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠে এমনটাই বলে বসলেন বীরেন্দ্র সহবাগ।
২১৯ রানের ঝড় তখন সদ্য থেমেছে। ইনিংসের বিরতিতে রবি শাস্ত্রীর সামনে দাঁড়িয়ে সহবাগ বলে বসলেন, “খুব ক্লান্ত লাগছে। আসলে বুড়ো হয়ে যাচ্ছি তো। আয়াম আ টায়ার্ড ওল্ড ম্যান নাউ!”
তা সেই ‘ওল্ড ম্যান’-এর ব্যাটিং বিস্ফোরণ দেখতে দেখতে আজ থমকে গিয়েছিল ক্রিকেট বিশ্ব। যুবরাজ সিংহ টুইট করেছেন, “আমি আবার বলছি। কোনও দিন স্যর ভিভকে ব্যাট করতে দেখিনি কিন্তু সহবাগকে দেখছি! কী প্লেয়ার! ওয়ান ডে ম্যাচে ২১৯ রান করা তো প্রায় অসম্ভব একটা ব্যাপার।” ইনদওরে ম্যাচ চলাকালীন কেভিন পিটারসেনও টুইটার মারফত আবেদন রেখেছিলেন ক্রিকেট ভক্তদের কাছে। “আপনি যদি ক্রিকেট ভালবেসে থাকেন, তা হলে এখনই টিভি অন করুন আর এক জন জিনিয়াসকে ব্যাট করতে দেখুন। সহবাগ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধ্বংস করছে...বিশ্ব রেকর্ড আসছে।” লিখেছিলেন পিটারসেন। |
পিটারসেন না হয় আগে ভাগে বুঝে গিয়েছিলেন, ডাবল আসছে। আপনার কখন মনে হল? সহবাগ বলছেন, “ডাবল সেঞ্চুরির কথা ভেবে তো আর মাঠে নামিনি। তবে জানতাম একটু ধৈর্য ধরতে পারলে বড় রান আসবে। এত ভাল উইকেট আর আউটফিল্ড। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-র সময়ই মনে হচ্ছিল এ বার ডাবল সেঞ্চুরিটা হয়ে যেতে পারে। আর স্যামি যখন ক্যাচটা ফেলল, তখন বুঝলাম ঈশ্বর আমার সঙ্গে আছেন। ডাবলটা মনে হয় হয়েই যাবে।” সহবাগের ডাবল সেঞ্চুরির পাশাপাশি আরও একটি রেকর্ড হল। একদিনের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান তুলল ভারত (৪১৮-৫)। এর আগে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৪১৪-৭ ছিল ভারতের সর্বোচ্চ।
ওয়ান ডে সিরিজের প্রথম তিনটে ম্যাচে রান পাননি। আজ আপনাকে বড় রান করার ব্যাপারে খুব দৃঢ়প্রতিজ্ঞ দেখাচ্ছিল। “অবশ্যই। আমি আগের ম্যাচেই বলেছিলাম, আমাদের টপ অর্ডার ভাল শুরু না করলে বড় রান পাওয়া মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। আমরা, ওপেনাররা ভাল শুরু করে দিলে বড় রান তোলাটা সহজ হয়ে যায়। দায়িত্বটা আমার উপরও পড়ে। এ দিন যেমন হল,” বলছিলেন বীরু।
সাধারণত তিনি সেঞ্চুরি বা ডাবল সেঞ্চুরির সামনে এসেও সতর্ক হন না। নিজের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলেন। আজ কী করেছিলেন? দু’শোর সামনে এসে খেলার স্টাইল কি বদলেছিলেন? সহবাগের সাফ জবাব, “একদম নয়। যে ভাবে শুরু থেকে খেলছিলাম, সে ভাবেই খেলে গিয়েছি।”
ডাবল সেঞ্চুরির জন্য প্রাক্তন বোর্ড প্রেসিডেন্ট রণবীর সিংহ মহেন্দ্রকে আলাদা করে ধন্যবাদ দিয়ে সহবাগ বলছেন, “আমি ওঁর কাছে কৃতজ্ঞ। ২০-৩০ রানে আউট হচ্ছিলাম দেখে উনি আমাকে এসএমএস করে বলেন, ধৈর্য হারিও না। ঠিক বড় রান পাবে। আজ সেটাই হল।” |