নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সপ্তাহ ঘুরলেও এখনও সমাধানসূত্র অধরা। ফলে, সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। কী ভাবে এবং কবে ডেবরা টোল-প্লাজা ফের চালু হবে, তার সদুত্তর নেই কর্তৃপক্ষের কাছেও। তবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই মনে করছে, আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। ডেবরা টোল-প্লাজা থেকে প্রতি দিন প্রায় ৮ লক্ষ টাকা আদায় হত। কিন্তু, ২৯ নভেম্বর থেকে টোল আদায় বন্ধ রয়েছে। মাঝে এক বার কলকাতায় বৈঠক হয়েছে। তবে, সমাধানসূত্র মেলেনি।
সপ্তাহ খানেক আগে ডেবরা টোল-প্লাজার সামনে গোলমাল বাধে। উত্তেজনা ছড়ায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আগের সংস্থার সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ফুরোনোয় টোল আদায়ে নতুন সংস্থা নিয়োগ করেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। পুরনো সংস্থার কর্মীরা পুনর্নিয়োগের দাবি তোলেন। আবার স্থানীয় কিছু যুবকও চাকরির দাবিতে সরব হন। এই নিয়েই গোলমাল। এর জেরে নতুন সংস্থার হাতে দায়িত্ব তুলে দিতেও পারেননি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। তাঁরা নোটিস দিয়ে জানান, আপাতত টোল আদায় বন্ধ থাকবে। সেই থেকেই টোল ছাড়াই যাতায়াত করছে গাড়ি। |
মাসখানেক আগে কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, টোল আদায়ে এ বার থেকে প্রকাশ্যে দরপত্র আহ্বান করা হবে। এই প্রক্রিয়ায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধুলাগড়ি (হাওড়া) টোল প্লাজার দায়িত্ব পেয়েছে এনইটি ও ডেবরা টোল প্লাজার দায়িত্ব পেয়েছে আইআরবি নামে দু’টি সংস্থা। ডেবরার ক্ষেত্রে নতুন সংস্থা টোল আদায়ের দায়িত্বে তাদের কর্মী রাখতে চায়। কিন্তু, এখানেই দেখা দিয়েছে সমস্যা। পুরনো কর্মীদের দাবি, তাঁদেরই কাজে বহাল রাখতে হবে। আবার, স্থানীয়দের একাংশ দাবি করছেন, এলাকার বেকার ছেলেদের কাজে নিয়োগ করতে হবে। ২৯ নভেম্বর নতুন সংস্থার লোকজন ডেবরায় এসে বাধার মুখেও পড়েন।
পুরনো কর্মীদের কাজে বহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতিও। তাঁর বক্তব্য, “কেউ কাজ হারাক, আমরা চাই না। কোনও কর্মীকে ছাঁটাই করা যাবে না। যদি কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকে, তা হলেই একমাত্র তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হোক। আমাদের তাতে আপত্তি নেই।” ডেবরার টোল প্লাজায় ১৩০ জন কর্মী কাজ করতেন। পুরনো কর্মীদের কাজে বহাল রাখার দাবি নিয়ে ইতিমধ্যে জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত-র সঙ্গেও কথা বলেছেন রাধাকান্তবাবু। এ প্রসঙ্গে জেলাশাসক বলেন, “বিধায়ক পুরনো কর্মীদের কাজে বহাল রাখার আবেদন করেছেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কিছু নেই। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।” সমস্যা সমাধানে ক’দিন আগে কলকাতায় বৈঠক হয়। বৈঠকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আধিকারিক, আইআরবি সংস্থার আধিকারিক ও ডেবরার বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু, সমাধানসূত্র মেলেনি। রাধাকান্তবাবু বলেন, “সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হোক, আমরা চাই না। কিন্তু, পুরনো কর্মীদেরই কাজে বহাল রাখতে হবে।” অন্য দিকে, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাই কর্মী নিয়োগ করবে। তেমনই শর্তে প্রকাশ্যে টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। এখন আপত্তির জায়গা নেই। এই চাপানউতোরে আপাতত বন্ধ টোল আদায়। |