নিজস্ব সংবাদদাতা • চন্দ্রকোনা রোড |
পশ্চিম মেদিনীপুরে ফের ‘সন্ত্রাসে’ অভিযুক্ত শাসক তৃণমূল। বুধবার রাতে চন্দ্রকোনা রোডের গড়ঙ্গা গ্রামে একাধিক সিপিএম কর্মী-সমর্থকের বাড়িতে হামলা চালায় তৃণমূলের লোকজন। কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। প্রহৃত হন সিপিএম কর্মী-সমর্থকরা। গুরুতর জখম অবস্থায় ৩ সিপিএম সমর্থককে চন্দ্রকোনারোড ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে। এই ঘটনায় এক তৃণমূল সমর্থককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশি টহলও চলছে। যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের দাবি, “প্রথমে সিপিএমের লেঠেলবাহিনীই আমাদের কর্মীদের উপর হামলা চালায়। তার জেরেই গোলমাল হয়েছে।” |
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার বিকেলে। গড়ঙ্গা গ্রাম সংলগ্ন সাইনাড়া গ্রামের তৃণমূল নেতা অরূপ ঘোষ তাঁর তিন বন্ধুকে নিয়ে মোটরবাইকে গড়ঙ্গা গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যান। তৃণমূলের অভিযোগ, গ্রামে ঢুকতেই সিপিএমের চন্দ্রকোনারোড জোনাল কমিটির সম্পাদক সনাতন মাঝির ভাইপো টম অরূপবাবুকে মারধরের হুমকি দেন। দু’জনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। লোক জড়ো হয়। সিপিএমের শক্ত-ঘাঁটি হিসাবেই পরিচিত গড়ঙ্গা। এই গ্রামেই বাড়ি সনাতনবাবুরও। অরূপবাবুর অভিযোগ, “গ্রামে ঢুকলে খুন করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেয় টম।” টমের আবার দাবি, “আমাকে সিপিএম ছেড়ে বাড়িতে বসে থাকার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। না হলে পা ভেঙে দেওয়া হবে বলেও শাসানো হয়।” স্থানীয় সূত্রের খবর, অরূপ-টম তর্কাতর্কির খবর ছড়িয়ে পড়তেই মঙলাবাঁধি, গড়ঙ্গা, সাইনাড়ার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা মঙলাবাঁধি গ্রামে জড়ো হয়ে বৈঠক করেন। তখনই ব্যক্তিগত কাজে সিপিএম সমর্থক কয়েক জনকে নিয়ে মোটরবাইকে গ্রামের পথ ধরে যাচ্ছিলেন টম। তাঁদের দেখতে পেয়ে তৃণমূলের লোক তাড়া করেন। মারধর করা হয় টমকে। মোটরবাইকটিও ভেঙে দেওয়া হয়। মার খেয়ে মঙলাবাঁধিতেই পড়ে থাকেন টম-সহ ৩ সিপিএম সমর্থক। পুলিশ ও কয়েক জন গ্রামবাসীই পরে তাঁদের উদ্ধার করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠান। আহতদের বাড়ির লোক থানায় অভিযোগও করেন। রাতে পুলিশ গ্রামে গিয়ে অরূপবাবুর খোঁজ করে। তাঁকে পাওয়া যায়নি। পুলিশ গ্রাম ছেড়ে যেতেই রাত ১০টা নাগাদ ফের তৃণমূলের বাহিনী গড়ঙ্গা গ্রামে গিয়ে সিপিএম সমর্থকদের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। অভিযোগ, গ্রামের সন্ন্যাসী ঘোষ, বিফল ঘোষ, শ্যামল ঘোষেদের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। বোমাবাজি, ধারালো অস্ত্র গাছ কাটা এবং জলের কলও ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এ নিয়েও তৃণমূল, সিপিএম--দু’ক্ষই থানায় অভিযোগ করেছে। |