|
|
|
|
চার শিশুকে মেরেছে হাদিই, বলছে পুলিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হাওড়া |
নিজের তিন সন্তান-সহ শ্যালিকার ছেলেকে ঘুমন্ত অবস্থায় এক এক করে দামোদরের জলে ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। এর বেশ কিছুদিন পরে নিজেও ফিনাইল খেয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারেননি। পুলিশই তাঁকে কোলাঘাটের রাস্তা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়েছিল।
চার শিশু সন্তানকে খুনের দায়ে ধৃত হাওড়ার টিকিয়াপাড়ার বাসিন্দা হাদি কুরেশি জেরায় এ কথা বলেছেন বলে দাবি হাওড়া সিটি পুলিশের। বৃহস্পতিবার হাওড়ার ডিসি (সদর) সুকেশকুমার জৈন বলেন, “ঠিক কী কারণে শিশুদের ওই ব্যক্তি খুন করেছিলেন তা পরিষ্কার না-হলেও ওঁর সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, গত ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় টিকিয়াপাড়া থেকে তিনি সোজা চলে আসেন বাগনানে। সেখানে রাতে একটি নদীর ধারে শিশুগুলো ঘুমিয়ে পড়লে তাদের এক এক করে জলে ছুড়ে ফেলে দেন তিনি। এর পর পালিয়ে যান।”
ঘটনার পর বাড়ির লোকজন হাদিকে মানসিক বিকারগ্রস্ত বলে দাবি করলেও তদন্তকারীদের ধারণা, ওই ব্যক্তি যথেষ্ট স্বাভাবিক। আর্থিক অনটনের জন্য হয়তো তিনি তীব্র হতাশায় ভুগছিলেন। তাই মাঝে মাঝেই তিনি ছেলেমেয়েকে নিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার কথা স্ত্রীকে বলতেন। দু’একবার চেষ্টাও করেছেন। এ কথা তাঁর স্ত্রীও স্বীকার করেছেন।
গত ১৫ ও ১৬ নভেম্বর হাওড়ার বাগনানে দামোদর নদী থেকে প্রথমে তিনটি ও পরে আরও একটি শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ১৪ তারিখ বিকালে ওই চার শিশুকে নিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন হাদি কুরেশি। মৃতদেহগুলিকে পরের দিন শনাক্ত করেন হাদি কুরেশির আত্মীয়স্বজন।
কিন্তু ঘটনার পর থেকে হাদি নিখোঁজ হয়ে যান। ঘটনার প্রায় ২০ দিন পর গত সোমবার কোলাঘাটে রাস্তার পাশ থেকে অচেতন অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁকে বাগনান স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। ডিসি জানান, এই ঘটনায় যেহেতু আগেই খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছিল, তাই সুস্থ হওয়ার পর ওই ব্যক্তিকে বুধবার সিটি পুলিশের হেফাজতে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, শিশুদের ছুড়ে নদীতে ফেলে দেওয়ার পর তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান। ট্রেনে চেপে প্রথমে যান ইলাহাবাদে। সেখান থেকে প্রতাপগড়, অজমের শরিফ, দিল্লি হয়ে কেরল যান। সেখান থেকে ফিরে আসেন কোলাঘাটে। |
|
|
|
|
|