|
|
|
|
শ্রীরামপুর কলেজ: ছাত্র সংসদের নির্বাচন |
টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ এসএফআইয়ের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শ্রীরামপুর |
টিএমসিপি এবং ছাত্র পরিষদের বাধায় হুগলির শ্রীরামপুর কলেজে মনোনয়নপত্র তোলা এবং জমা দেওয়া যাচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার জিটি রোড অবরোধ করল এসএফআই। টিএমসিপি এবং ছাত্র পরিষদ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাঁদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় এ বার ‘লজ্জাজনক হার’ এড়াতে এসএফআই ‘নাটক’ করছে।
দীর্ঘদিন ধরে শ্রীরামপুর কলেজের ছাত্র সংসদের দখল রয়েছে এসএফআইয়ের দখলে। গত বছর তৃণমূলের ‘প্রবল হাওয়া’ সত্ত্বেও তাদের উড়িয়ে দিয়ে নির্বাচনে জেতে এসএফআই। ৪৪টি আসনের মধ্যে ৪২টিই দখল করে তারা। কলেজের ছাত্র সংসদের ক্ষমতা দখলে রাখতে ‘এসএফআইয়ের ছেলেরা সন্ত্রাস চালাচ্ছে’ এত দিন এই অভিযোগ শোনা যেত কংগ্রেস বা তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের মুখে। এ বার তার উলটপুরাণ ঘটছে। পুলিশ জানিয়েছে, মনোনয়নকে ঘিরে অশান্তি এড়াতে যথেষ্ট আঁটোসাটো নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। মারধর নিয়ে থানায় এ পর্যন্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি বলেও পুলিশের দাবি। |
|
জিটি রোডে এসএফআই সমর্থকদের অবরোধ।-নিজস্ব চিত্র |
কলেজ সূত্রের খবর, আগামী ২২ ডিসেম্বর সেখানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন। গত বুধবার থেকে মনোনয়নপত্র তোলা এবং জমা নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। আজ, শুক্রবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। নির্বাচনকে ঘিরে গোলমালের আশঙ্কা ছিলই। পরিস্থিতি আঁচ করে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেই মতো বুধবার থেকেই কলেজের গেটের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এসএফআইয়ের দাবি, বুধবার তারা প্রায় ৩০টি মনোনয়নপত্র তোলে। অভিযোগ, এর পরেই বেলা ১২টা নাগাদ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং ছাত্র পরিষদের ছেলেরা প্রার্থীদের পরিচয়পত্র কেড়ে নেয়, মনোনয়নপত্র ছিঁড়ে ফেলে। মারধরও করা হয় তাঁদের। কলেজের বাইরে এসএফআই এবং ডিওআইএফ নেতা-কর্মীদের গায়েও হাত পড়ে। এসএফআইয়ের জেলা কমিটির সদস্য প্রশান্ত নন্দী বলেন, “তৃণমূলের কিছু কাউন্সিলর দাঁড়িয়ে থেকে গোলমাল করল। পুলিশের চোখের সামনে কলেজের ভিতরে টিএমসিপি আর সিপি-র ছেলেরা এবং বাইরে তৃণমূলের লোকজন তাণ্ডব করল। কিন্তু পুলিশ থাকল চোখ বুজে। আমাদের ছেলেদের ওরা মেরে তাড়িয়ে দেয়।”
এসএফআই নেতৃত্বের দাবি, বৃহস্পতিবারেও কলেজে ঢোকার কিছুটা আগে দে স্ট্রিটের মুখ থেকে টিএমসিপি-র ছেলেরা সংগঠনের ছেলেদের তাড়িয়ে দেয়। ফলে, গত দু’দিনে তাঁরা একটিও মনোনয়ন জমা করতে পারেননি। প্রতিবাদে এর পরেই বেলা ১২টা থেকে বটতলায় রাস্তা অবরোধ শুরু করেন এসএফআই সমর্থকরা। ডিওয়াইএফ নেতা-কর্মীরাও অবরোধে সামিল হন। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয় মহকুমাশাসককে। ডিএসও-র জেলা সম্পাদক দীপঙ্কর মণ্ডলেরও অভিযোগ, ‘‘বুধবার কলেজের গেটে আমাদের সংগঠনের নেতা ভোলা রায়কে মারধর করে টিএমসিপি-র ছেলেরা। প্রার্থীদের পরিচয়পত্র কেড়ে নেয়। সংগঠনের অনেক ছাত্রকেও ওরা কলেজে ঢুকতে দেয়নি।”
তবে যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন টিএমসিপি-র জেলা সম্পাদক শুভজিৎ সাউ। তিনি বলেন, “অত্যন্ত কুরুচিকর অভিযোগ করা হচ্ছে।” শুভজিতের বক্তব্য, “এসএফআইয়ের সংগঠন ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। ওদের হয়ে কোনও ছাত্রছাত্রী আর নির্বাচনে দাঁড়াতে চাইছেন না। কলেজের এসএফআই পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা দাস আমাদের সংগঠনে যোগ দিয়েছেন। ওঁর মতো বহু ছেলেমেয়েই আমাদের সংগঠনে এসেছেন। লজ্জাজনক হার এড়াতে এসএফআই নির্বাচনের আগে নাটক করছে। ডিএসও-র অভিযোগও ভিত্তিহীন।”
এসডিপিও (শ্রীরামপুর) রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “নির্বাচন ঘরে যাতে কোনও গোলমাল না বাধে সে জন্য কলেজ চত্বরে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বুধবার কলেজের ভিতরে সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়েছিল। বাইরে কিছু হয়নি। বৃহস্পতিবার কোথাও কোনও গোলমাল হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। থানায় কেউ কোনও অভিযোগও করেননি।” শুক্রবারেও পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা রাখা হবে বলে এসডিপিও জানিয়েছেন। কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁদের কাছে কেউ গোলমাল সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ জানায়নি কেউ।
|
|
|
|
|
|