‘আধার’-সহ একাধিক বিল বাতিলের সুপারিশ
খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার ধাক্কাই এখনও কাটিয়ে ওঠা যায়নি। তার আগেই মনমোহন-সরকারের সংস্কারের কর্মসূচি আরও এক দফা ধাক্কা খেল।
ঠিক যে ভাবে বিজেপি ও বামেরা হাতে হাত মিলিয়ে খুচরো ব্যবসা নিয়ে বিরোধিতা চালিয়ে গিয়েছেন, একই ভাবে অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতেও দু’পক্ষ একজোট হয়ে সরকারের কর্মসূচি নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। আজ একই সঙ্গে অভিন্ন পরিচয়পত্র কর্তৃপক্ষ বা ‘আধার’ বিল ও বিমা সংশোধনী বিল খারিজ করার সুপারিশ করেছে স্থায়ী কমিটি। ব্যাঙ্ক আইন সংশোধনী বিলেও কমিটি বেশ কিছু নীতিগত আপত্তি তুলেছে। ওই কমিটির চেয়ারম্যান বিজেপি-নেতা যশবন্ত সিনহার সঙ্গে এ ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন বাম-সাংসদ গুরুদাস দাশগুপ্তও। স্থায়ী কমিটি যাতে দ্রুত এই বিলগুলি সম্পর্কে ইতিবাচক রিপোর্ট দিয়ে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করে, সে বিষয়ে যশবন্তের সঙ্গে দৌত্য চালিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। কিন্তু তাতে যে বিশেষ চিঁড়ে ভেজেনি, আজ তার প্রমাণ মিলেছে।
স্থায়ী কমিটিতেও বিরোধীরা একজোট
১। বাতিলের সুপারিশ
আধার বিল
বিমা সংশোধনী বিল
২। ব্যাঙ্ক আইন সংশোধনীতে আপত্তি
রাজনৈতিক সূত্রের খবর, আগামিকাল অথবা সোমবার সংসদে স্থায়ী কমিটির রিপোর্টগুলি পেশ হবে। তখনই আনুষ্ঠানিক ভাবে এই আপত্তির কথা জানানো হবে। এমন নয় যে সরকার এই রিপোর্ট মানতে বাধ্য। কিন্তু গোটা বিরোধী পক্ষ যখন একজোট হয়ে স্থায়ী কমিটিতে এই বিলগুলির বিরোধিতা করছে, তখন সংসদেও তাদের সম্মিলিত বিরোধিতার মুখে পড়তে হতে পারে সরকারকে। বিমা সংশোধনী বিলের মাধ্যমে মনমোহন-সরকার বিমা ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির পরিমাণ ২৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৯ শতাংশে যাওয়ার প্রস্তাব করেছিল। তা খারিজ করে দেওয়ার সুপারিশ করেছে যশবন্ত সিনহার কমিটি। সংস্কারের পথে হাঁটতে গিয়ে মনমোহন-সরকার ব্যাঙ্ক আইনেও সংশোধনী আনতে চেয়েছিল। এই বিলটি পুরোপুরি খারিজ না করলেও এর বেশ কিছু বিষয় নিয়ে নীতিগত আপত্তি তুলেছে স্থায়ী কমিটি। ব্যাঙ্কে যার যত শেয়ার, ব্যাঙ্ক-বোর্ডে তার ভোটাধিকার সেই অনুযায়ী ঠিক করার কথা বলা হয়েছিল আইনের সংশোধনীতে। এখানে আপত্তি তোলে স্থায়ী কমিটি। পরিবর্তে তা সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশে বেঁধে দেওয়ার সুপারিশ করেছে তারা। এর অর্থ, কারও যদি সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে লগ্নির পরিমাণ ৫১ শতাংশও হয়, তার ভোটাধিকার কখনওই ২৫ শতাংশের বেশি হবে না।
মনমোহন-সরকারের কাছে সব থেকে বড় ধাক্কা ‘আধার’ বিল খারিজ করে দেওয়ার সুপারিশ। স্থায়ী কমিটি চাইছে, একেবারে নতুন করে এই বিল তৈরি করা হোক। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ নিজে এই প্রকল্প সম্পর্কে যথেষ্ট উৎসাহী। মূলত তাঁরই উদ্যোগে অভিন্ন পরিচয়পত্র কর্তৃপক্ষের প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রাক্তন ইনফোসিস-কর্তা নন্দন নিলেকানিকে। গত ও চলতি অর্থ বর্ষে এই প্রকল্পের জন্য মোট বাজেট ধরা হয়েছে ১,৬৬০ কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই সাড়ে পাঁচশো কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছে কেন্দ্র। এর মধ্যে স্থায়ী কমিটি প্রশ্ন তুলেছে, সংসদের অনুমতি না নিয়েই কী ভাবে এই প্রকল্পে এত অর্থ ব্যয় করে ফেলা হল?
‘আধার’ প্রকল্পটি নিয়ে অবশ্য কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যেও মতপার্থক্য রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, যোজনা কমিশন, অর্থ মন্ত্রকের মধ্যে ইতিমধ্যেই বিরোধ তৈরি হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য, মন্ত্রক জনগণনা করছে, আবার ‘আধার’ কর্তৃপক্ষও অভিন্ন পরিচয়পত্র বিলি করছে। এত দিনে ৫০ লক্ষেরও বেশি মানুষকে তারা পরিচয়পত্র দিয়েছে। অথচ তারা আদৌ ভারতীয় নাগরিক কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে না। স্থায়ী কমিটিতে কংগ্রেসের সদস্যরাও ‘আধার’ বিলের বিরোধিতা করে এই প্রকল্পকে ‘দিশাহীন’ বলে বর্ণনা করেছেন। আজ কমিটির বৈঠকে যে রিপোর্ট গৃহীত হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে, এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই। সরকারের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে স্থায়ী কমিটি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.