লোডশেডিং অথবা বিদ্যুৎ-বিপর্যয়ের বাইরে রাখার জন্য মহাকরণকে এখন দু’টি ভিন্ন উৎস থেকে সিইএসসি-র বিদ্যুৎ দেওয়া হয়। এ বার দূর-নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সাহায্যে মহাকরণে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিকল্পনা হচ্ছে। কারণ, বর্তমান ব্যবস্থায় রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক দফতরে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কিছু সময় লেগে যায়। সেই কারণেই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত বৃহস্পতিবার মহাকরণে পূর্ত দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার এবং সিইএসসি-র চার পদস্থ অফিসারের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পরে এক বার মহাকরণে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। পদস্থ এক পূর্ত-ইঞ্জিনিয়ার বলেন, “সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের সংযোগ বিচ্ছিন্ন না-হলেও সচিবালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশের বিদ্যুৎ-সংযোগ মিনিট দশেকের জন্য ছিন্ন হয়ে যায়। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতেই বিশেষ সতর্কতার ব্যবস্থা হচ্ছে।”
ওয়্যারলেস বা দূর-নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাটা কী?
এখন বিদ্যুৎ-বিভ্রাট হলে মেরামতির কারণে ঘটনাস্থলে যেতে হয়। তাতে সময় লাগে অনেকটাই। মহাকরণে বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের ক্ষেত্রে সেই সময় দেওয়া সম্ভব নয়। তাই সিইএসসি-র কন্ট্রোল রুমে বসেই সেখানে সঙ্গে সঙ্গে বিকল্প বিদ্যুৎ দেওয়া হবে। এটাকেই দূর-নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বলা হচ্ছে। এ দিন বৈঠকের পরে সিইএসসি-র এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর দিলীপ সেন বলেন, “ওয়্যারলেস ব্যবস্থা চালু হলে আমাদের ইঞ্জিনিয়ারেরা মহাকরণে না-এসে সঙ্গে সঙ্গেই বিদ্যুৎ-সংযোগ দিতে পারবেন।”
এখন গ্রীষ্মে মহাকরণে বিদ্যুতের গড় চাহিদা হয় ২০০০ কিলোভোল্ট। বিভিন্ন ঘরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার জন্য এই চাহিদা বাড়ছে। পদস্থ এক পূর্ত ইঞ্জিনিয়ার বলেন, “এখন দু’টি ফিডার দিয়ে বিদ্যুৎ মিলছে প্রায় ২৭০০ কেভি। এ দিক থেকে মহাকরণে এখনই বাড়তি বিদ্যুতের প্রয়োজন নেই।” ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা মাথায় রেখে সিইএসসি মহাকরণের উল্টো দিকে লালদিঘির ধারে কিছু জমি নিচ্ছে। সেই জমির ব্যাপারেও আলোচনা হয় এ দিনের বৈঠকে। সিইএসসি-র ভাইস প্রেসিডেন্ট অনিরুদ্ধ বসু বলেন, “প্রায় ৮০০ বর্গমিটার মাপের ওই জমির নীচে দু’টি ট্রান্সফর্মার বসানো হবে। ওখান থেকে মহাকরণ ছাড়াও হাইকোর্ট এবং অন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে।” |