উৎপাদনকারীরা তো দাবি তুলেছেনই। তাঁদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে দুধের দাম বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করলেন রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের প্রতিমন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরও। কিন্তু তাঁর নিজের সরকারই দুধের দাম বাড়াবে কি না, তা জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
পশ্চিমবঙ্গ সমবায় দুগ্ধ উৎপাদক মহাসঙ্ঘের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার দুগ্ধ দিবস পালন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে মঞ্জুলবাবু বলেন, “দুধের চাহিদা বাড়ছে। তাই দুধের জোগানও বাড়াতে হবে। দুধ উৎপাদনে খরচ বাড়ছে। আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে দাম বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” মন্ত্রীর থেকে এক ধাপ এগিয়ে রাজ্যের দুগ্ধ কমিশনার উদয়শঙ্কর নন্দী বলেন, “গ্রামাঞ্চলে যাঁরা দুধ উৎপাদন করছেন, তাঁদের খরচ পড়ছে অনেক বেশি। আমরা সব সময় সেই দাম দিতে পারছি না। দুগ্ধ শিল্পকে বাঁচানোর প্রয়োজনেই দুধের দাম বাড়ানো দরকার।” দুগ্ধ কমিশনার জানান, ভেজাল ঠেকাতে গত অগস্টে কেন্দ্রীয় সরকার আইন প্রণয়ন করেছে। সেই অনুসারে দুধের ভেজাল ঠেকাতে ‘ফুড সেফটি অফিসার’ নিয়োগ করা হয়েছে। আগামী বছর থেকে তাঁরা বিভিন্ন জেলায় জেলায় অভিযান শুরু করবেন।
সরকারি দুধের দাম বাড়ানোর দাবি তুলেছে বিভিন্ন কর্মী সংগঠনও। দুগ্ধকর্মীদের আইএনটিআইসি প্রভাবিত সমিতির কার্যনির্বাহী সভাপতি কার্তিক দাস বলেন, “আমরা এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রাণিসম্পদ বিকাশ মন্ত্রীর কাছে একাধিক বার স্মারকলিপি দিয়েছি। আমরা লিখেছি, বিভিন্ন দুগ্ধ উৎপাদক সংস্থার গরুর দুধের দামের মধ্যে সামঞ্জস্য না-আনলে সরকারি দুগ্ধ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।” হরিণঘাটার দুধ প্রস্তুতকারক বেলগাছিয়া সেন্ট্রাল ডেয়ারির এক কর্মী-নেতার বক্তব্য, “আমাদের দৈনিক প্রায় ১০ হাজার লিটার কাঁচা দুধ লাগে। দুগ্ধ উৎপাদকেরা দিচ্ছেন এর প্রায় অর্ধেক। কারণ, ওঁরা অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক দরে বেসরকারি দুগ্ধ উৎপাদন সংস্থার কাছে কাঁচা দুধ বিক্রি করার সুযোগ পাচ্ছেন। এ ভাবে চলতে পারে না।”
সাধারণ মানুষের উপরে বাড়তি বোঝা চাপাতে চায় না বলেই বিদ্যুতের মাসুল বাড়ানোর প্রস্তাব নাকচ করেছে রাজ্য সরকার। ঠিক একই কারণে দুধের দাম বাড়াতে রাজি নয় রাজ্য। এই অবস্থায় মন্ত্রীর দাবি কতখানি বাস্তবায়িত হবে, তা বলতে পারেননি দফতরের কর্তারাও। |