মমতার আর্জি মেনে প্রস্তাব সুব্বারাওয়ের
রাজ্যে ঋণের পরিমাণ বাড়াতে রাজি ব্যাঙ্ক
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগের কথা মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গে ঋণের পরিমাণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল ব্যাঙ্কগুলি। চলতি আর্থিক বছরে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি যত টাকা আমানত সংগ্রহ করবে তার ৬৫ শতাংশই এখানে ঋণ দেবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর ডি সুব্বারাওয়ের প্রস্তাব মেনেই ওই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল ব্যাঙ্কগুলি।
বর্তমানে ব্যাঙ্কগুলি রাজ্য থেকে যত টাকা আমানত সংগ্রহ করে, তার ৬২ শতাংশ এখানে ঋণ দেয়। বাকিটা অন্য রাজ্যে ঋণ দিতে খরচ করে। কিন্তু আমানত এবং ঋণের গড় জাতীয় অনুপাত ৭৪ শতাংশ। রাজ্যে ওই অনুপাত আরও বাড়ানো জরুরি বলে মন্তব্য করে বৃহস্পতিবার কলকাতায় সুব্বারাও ঘোষণা করেন, “চলতি আর্থিক বছরেই ঋণ বাড়িয়ে ৬৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়া হবে। আগামী ২০১২-’১৩ আর্থিক বছরে তা আরও বাড়ানো হবে।” ফলে আশা করা যায়, বিশেষ করে রাজ্যের ছোট ও মাঝারি শিল্প সংস্থা এর সুবিধা পাবে। তবে সুব্বারাও বলেছেন, ঋণ বাড়ানোর জন্য রাজ্যে নতুন বড় শিল্প গড়ে ওঠা জরুরি। রাজ্যের আর্থিক অবস্থার ব্যাপারে তাঁর মন্তব্য, এর জন্য কর বাড়ানো এবং ব্যয় কমানো জরুরি। তবে খরচ নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে পরিকল্পিত ভাবে।
গত বুধবার মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন সুব্বারাও। তখনই মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন যে, এই রাজ্যে ব্যাঙ্কগুলির আমানত সংগ্রহের তুলনায় ঋণ দেওয়ার অনুপাত জাতীয় গড়ের তুলনায় অনেক কম। বৃহস্পতিবার ‘স্টেট লেভেল ব্যাঙ্কার্স কমিটি’-র সঙ্গে বৈঠক করেন সুব্বারও। ওই বৈঠকেই ঋণ বাড়ানোর সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়।
দীর্ঘ দিন ধরেই ব্যাঙ্কগুলির বিরুদ্ধে রাজ্যের অভিযোগ, বড় শিল্পকে ঋণ দিতে আপত্তি না-থাকলেও বিশেষ করে রাজ্যের ছোট ও মাঝারি সংস্থাকে ঋণ দেওয়ার বাপারে তারা তেমন আগ্রহী নয়। এ দিন সুব্বারাও অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে বলেন, “এটা সারা দেশেরই সমস্যা। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। যে সব ছোট ও মাঝারি উদ্যোগপতি ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের জন্য আবেদন করবেন, কোনও রকম বন্ধক ছাড়াই তাঁদের আবেদনপত্র দ্রুত মঞ্জুর করতে ব্যাঙ্কগুলিকে বলা হয়েছে।” ব্যাঙ্ক অফিসারদের এ ব্যাপারে আরও বেশি যত্নশীল হতে বলা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সুব্বারাওয়ের কথায়, “আমি জানি, অনেক সময়েই ওই সব আবেদন নানা অজুহাত দেখিয়ে বাতিল করা হয়।” এ ব্যাপারে ব্যাঙ্ক অফিসারদের মানসিকতার পরিবর্তন হতে কিছুটা সময় লাগবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ছোট ও মাঝারি উদ্যোগপতিগের প্রয়োজনে বণিকসভা বা উদ্যোগপতিদের অন্য কোনও সংগঠনের মাধ্যমে ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলারও পরামর্শ দেন সুব্বারাও।
রাজ্যে ব্যাঙ্ক ঋণের পরিমাণ বাড়াতে সমস্ত যোগ্য কৃষককে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হবে বলেও জানান সুব্বারাও। কত জন কৃষক ওই কার্ড পাওয়ার যোগ্য হবেন, তা খতিয়ে দেখতে একটি সমীক্ষা চালানো হবে বলে জানান তিনি। প্রথম পর্যায়ে হাওড়া, উত্তর-২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ এবং মালদহ, এই চারটি জেলায় ওই সমীক্ষা চালানো হবে। পাশাপাশি, চলতি আর্থিক বছরে নতুন ১.২৯ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ব্যাঙ্ক ঋণের আওতায় আনা হবে বলেও ঘোষণা করেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর। ইতিমধ্যেই ২৯ হাজার নতুন গোষ্ঠীকে এর আওতায় আনা হয়েছে। আগামী মার্চের মধ্যে বাকি ১ লক্ষকে আনা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.