|
|
|
|
খনি অঞ্চলে ফের ধস, মাটি ফুঁড়ে ধোঁয়া রতিবাটিতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রানিগঞ্জ |
শোনপুর বাজারি প্রকল্পের রাস্তায় ফাটলের আতঙ্ক কাটার আগেই ফের ধস খনি অঞ্চলে।
ধসের জেরে বৃহস্পতিবার রানিগঞ্জের রতিবাটি ফায়ার প্রজেক্ট এলাকার কাছে বেশ কিছুটা এলাকার মাটি বসে গর্ত তৈরি হয়। সেখান থেকে অনর্গল ধোঁয়াও বেরোতে দেখা যায়। এলাকা পরিদর্সনে যান ইসিএলের আধিকারিকেরা। সংলগ্ন কর্মী আবাসনের বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকাল ৬টা নাগাদ একটি আওয়াজ পান সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। তার পরেই তাঁরা মাটি বসে তৈরি হওয়া প্রায় ৩০ ফুট লম্বা, ১৫ ফুট চওড়া ও ২০ ফুট গভীর গর্তটি দেখতে পান। ইসিএল অনুমোদিত হিন্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রামপদারত রাম বলেন, “হঠাৎ ভূমিকম্পের মতো সব কিছু দুলে উঠল। বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে দেখি, আবাসন থেকে পঞ্চাশ মিটারের মধ্যে ওই গর্ত তৈরি হয়েছে। তা থেকে গলগল করে ধোঁয়া বেরোচ্ছে।” গর্তটির পাশে ভিড় জমান বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ইসিএলের আধিকারিকেরা।
ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, অবৈধ খননের জেরে ওই এলাকা বিপন্ন হয়ে পড়েছিল। বছর দুয়েক আগে এলাকায় মাটি ফুঁড়ে ধোঁয়া বেরোতে থাকে। এমনকী বাদ্যকর পাড়ায় বেশ কয়েকটি বাড়ির ভিতরেও ধোঁয়া বেরোয়। ইসিএলের তরফে বাদ্যকর পাড়ায় ৫৩টি পরিবারকে অস্থায়ী পুনর্বাসন দেওয়া হয়। এলাকাটিকে চিহ্নিত করে ফায়ার প্রজেক্ট বা খোলামুখ খনি চালু করা হয়। |
|
নিজস্ব চিত্র। |
পরে অস্থায়ী পুনর্বাসন দেওয়া বাসিন্দাদের পাঁচ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে সেই টাকা কেউ নিতে অস্বীকার করেন। উল্টে, বেশ কিছু পরিবার পুরনো এলাকায় ফিরে আসে। অভিযোগ, তাঁদের বাধায় ফায়ার প্রজেক্ট কার্যত বন্ধ করে দিতে হয়। এর জেরে জমির নীচে আগুনও বেড়েছে। কিছু দিন আগে খানিকটা দূরে একটি কর্মী আবাসনের ঘর ধসে ঢুকে যায়।
বৃহস্পতিবার যে এলাকায় ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়, তার অদূরেই রয়েছে ২৫টি কর্মী আবাসন। ইসিএল সূত্রে জানা যায়, ২১টি পরিবারকে আগেই স্থানান্তর করা হয়েছিল। এখন দু’টি আবাসনে সংস্থার নিজস্ব কর্মীরা থাকেন ও অন্য দু’টি বহিরাগতেরা দখল করে রেখেছেন। সাতগ্রাম এরিয়ার এজিএম বিনোদকুমার সিংহ জানান, দখলদারদের দায়িত্ব ইসিএলের নয়। তিনি বলেন, “পুলিশ ও প্রশাসন-সহ সংশ্লিষ্ট সব মহলে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বহিরাগতেরা আবাসনে রয়ে গিয়েছে। তাঁদের সরাতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। বাদ্যকর পাড়া খালি করার বিষয়টিও প্রশাসনকে দেখার জন্য জানানো হচ্ছে। আমরা কয়লা কেটে নিয়ে এলাকাটিকে নিরাপদ করতে চাইছি।” আইএনটিটিইউসি নেতা বাবু রায়ের দাবি, যেখানে এ দিন ধস নেমেছে তার কয়েকশো মিটার দূরেই অবৈধ খনন চলছে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তারা কিছু দিন আগে এসে সব বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কয়েক দিন আগে থেকে তা ফের চালু হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। পুলিশ অবশ্য জানায়, অবৈধ খনন বন্ধে লাগাতার অভিযান চলছে। |
|
|
|
|
|