|
|
|
|
ক্ষোভ তিস্তাপারে হলদিবাড়ি-মেখলিগঞ্জে |
কেন্দ্র-রাজ্যে পরিকল্পনায় থমকে সেতু |
রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় • হলদিবাড়ি |
হলদিবাড়ি ও মেখলিগঞ্জের মধ্যে তিস্তা নদীর উপর সেতু তৈরির দাবিতে সরব দুই এলাকার বাসিন্দারা। এ নিয়ে বিগত সরকার ও কেন্ত্রীয় সরকারে বহুবার দাবি জানিয়েও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। সরকারি একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই এলাকার জন্য তিস্তা নদীতে সেতু তৈরির বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে। বাসিন্দারা জানান, ওই সেতু তৈরি হলে গোটা হলদিবাড়ি ও মেখলিগঞ্জের কয়েকশো বাসিন্দা উপকৃত হবেন। কষ্ট লাঘব হবে। এর পাশাপাশি ওই দুটি শহরের অর্থনৈতিক দিক দিয়ে উন্নতি ঘটবে। কোচবিহারের প্রাক্তন সাংসদ অমর রায়প্রধান বলেন, “আমি সাংসদ থাকাকালীন বহুবার এই দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু বিগত রাজ্য সরকারের তরফে কোনও পরিকল্পনা না পাঠানোয় সেতু হয়নি।” শুধু তিনিই নন, মেখলিগঞ্জের বিধায়ক, হলদিবাড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান গৌরাঙ্গ নাগ এবং হলদিবাড়ি ব্যবসায়ী সমিতির তরফে বহুবার সেতু তৈরির দাবি জানানো হয়েছে। লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। কেন সেতু তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হয়নি? জবাবে মেখলিগঞ্জের ফরওয়ার্ড ব্লকের পরেশ অধিকারী বলেন, “অত বড় সেতু তৈরি করতে আড়াইশো কোটি টাকা দরকার। রাজ্য সরকারের পক্ষে অত টাকা ব্যয়ে তা করা সম্ভব নয়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়ে দেন। ওই কথা জানানোর পরও কেন্দ্রীয় সরকার ওই সেতু তৈরির জন্য প্রকল্প রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল। সেই মতো বিগত রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতরের তরফে রিপোর্ট তৈরি করে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।” প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় নির্বাচনী সফরে এসে হলদিবাড়ির সাতকুড়ায় একটি সমাবেশে বলেছিলেন, “আমরা এই প্রথম বিগত রাজ্য সরকারের কাছ থেকে তিস্তা নদীর উপর সেতু তৈরির একটি পরিকল্পনা পেয়েছি। পরিকল্পনা তখনই যোজনা কমিশনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগে থেকে যদি ওই পরিকল্পনা পাঠানো হত, তাহলে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া যেত। সেকথা পরেশবাবুকে জানিয়ে দেওয়াও হয়েছিল। হলদিবাড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান গৌরাঙ্গবাবু বলেন, “সেতু তৈরির ব্যাপারে কোনও তরফে আমাকে জানানো হয়নি।’’ তাঁর অভিযোগ, এত কাছে মহকুমা শহর থাকতেও সেতু তৈরির দাবি পূরণ হয়নি। হলদিবাড়ি থেকে তিস্তা নদীর দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। তার মধ্যে তিস্তা নদীর ওপারের বেলতলির ঘাট থেকে ওপারে মেখলিগঞ্জের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। দুই এলাকার মানুষকে নৌকায় করে পারাপার করতে হয়। বিকল্প রাস্তা বলে রয়েছে জলপাইগুড়ি ও ময়নাগুড়ি। মানুষকে জলপাইগুড়ি ও ময়নাগুড়ি হয়ে ৭৮ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। মেখলিগঞ্জের আইনজীবী সৌরফ রায় বলেন, “সেতু তৈরি হলে আমাদের মতো নিত্যযাত্রীদের কষ্ট লাঘব হবে।” ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এই সেতু হলে দুই এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থা আমুল পাল্টে যাবে। মেখলিগঞ্জের কৃষকরা সহজে তাদের উৎপাদিত হলদিবাড়ির পাইকারি সব্জি বাজারে নিয়ে যেতে পারবেন। হলদিবাড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক স্বপন ঘোষ বলেন, “আমরা তিস্তা নদীর উপরে সেতু তৈরির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেতু হল না।” |
|
|
|
|
|