|
|
|
|
তেল গুদামে ফের আগুন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
পুলিশ বৈঠক করার পরে ২৪ ঘন্টা কাটেনি, ফের একটি বেআইনি ভাবে মজুত তেলের গুদামে আগুন লাগল। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) বাজারে। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন আয়ত্বে আনে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় একজন দর্জির দোকান পুড়ে গিয়েছে। ওই দোকান লাগোয়া এলাকায় চোরাই তেলের কারবার করত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সোমবার রাতের পুলিশের সঙ্গে বৈঠকের সময় এনজেপি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির কর্তারা ওই দোকানের কথা জানিয়েছিলেন পুলিশকে। এদিন দোকানটি পুড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। ওই রাতেই ব্যবসায়ীরা কয়েকটি বাড়িতে ও দোকানে হানা দিয়ে চোরাই তেলের কারবার নিয়ে সতর্ক করে দেয়। জলপাইগুড়ি সদর সার্কেলের এক পুলিশ কর্তা বলেন, “চোরাই তেলের কারবার বন্ধে ধারাবাহিক অভিযান চালানো হবে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু জায়গায় হানা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আগে থেকেই খবর পেয়ে তারা তেল সরিয়ে দেয়। ফলে জারিকেন উদ্ধার হলেও তেল পাওয়া যায়নি।” এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দীপ নন্দী বলেন, “পুলিশের কাছে সমস্ত বিষয় আমরা জানিয়েছি। রেল পুলিশও সেখানে ছিল। পুলিশ অভিযানের ব্যাপারে সবরকম আশ্বাস দিয়েছে। আমরা সেদিকে লক্ষ্য রাখছি।” এনজেপি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শঙ্কর ঘোষ বলেন, “গোটা বাজার জতুগৃহ হয়ে আছে। রাত হলেই চোরাই তেলের কারবারিদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। তার ফলেই একের পর এক আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে। সবার চোখের সামনে এসব ঘটছে। কেউ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। পুলিশ অভিযানের কথা বললেও তা হচ্ছে না। এভাবে চললে বড় ধরণের অগ্নিকাণ্ডের মুখে পড়তে হবে এনজেপিকে।” |
|
নিজস্ব চিত্র। |
দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে এনজেপির ট্রাক স্ট্যাণ্ড লাগোয়া এলাকায় বেআইনি ভাবে দোকানে মজুত করে রাখা তেলের মধ্যে আগুন লেগে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের একটি অফিস সহ ১৬টি দোকান পুড়ে যায়। তা নিয়ে দমকল কর্তৃপক্ষ ক্ষোভের কথা জানান। ওই ঘটনার পর চোরাই তেল নিয়ে এলাকার কাউন্সিলর এবং ব্যবসায়ীরা সরব হন। পুলিশের তরফেও মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এনজেপি পুলিশ ফাঁড়িতে বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে এনজেপি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির কর্তা, রেল পুলিশের কর্তা, কাউন্সিলর এবং বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বুধবার থেকে এনজেপিতে চোরাই তেলের আড্ডায় অভিযান চালানো হবে পুলিশের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়। ব্যবসায়ীরা এনজেপি বাজারের বেশ কয়েকটি ঘাঁটির কথা জানিয়ে রাতেই অভিযান চালানোর ব্যপারে পুলিশকে পরামর্শ দেন। কিন্তু পুলিশ ওই রাতে অভিযান চালাননি। ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে জানানো হয়, যে সব ঘাঁটির কথা পুলিশকে জানানো হয় তার মধ্যে মঙ্গলবার রাতে অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হওয়া দোকানটির কথাও জানানো হয়। ওই দোকানে রাতে তেল মজুত করা হয়। সেখানে ধূমপান করার সময় আগুন লেগে যায় বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। দর্জি দোকানের মালিক বলরাম মণ্ডল বলেন, “আমি রাত ১০টায় দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে যাই। রাতে আগুন লাগার কথা জানতে পেরে আসি। কীভাবে আগুন লাগল তা বলতে পারব না।” পর পর দু’দিনের আগুনে আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা রাতে চোরাই তেলের ঠেক ভাঙতে অভিযান শুরু করেন। রাতেই বাজার ও বাজার সংলগ্ন কয়েক জায়গায় হানা দিয়ে কারবারিদের সতর্ক করে দেন তাঁরা। বুধবার দুপুরে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বৈঠকে বসেন। বৈঠকের পর ফের দোকানে দোকানে গিয়ে কেরোসিন ও পেট্রোলের ব্যবসা বন্ধ করার দাবি জানিয়ে সতর্ক করেন। |
|
|
|
|
|