জেল ভরো কর্মসূচিতে বুধবার রঘুনাথগঞ্জে ভাল জন সমাবেশের পরে উৎসাহী সিপিএম নেতৃত্ব মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে জেলা জুড়ে পরবর্তী আন্দোলনের কথাও ঘোষণা করে দিলেন।
রাজ্য জোড়া এই কর্মসূচিতে রঘুনাথগঞ্জে ভাল সাড়া পেয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নৃপেন চৌধুরী বলে দিলেন, “বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ করার দাবিতে মুর্শিদাবাদে সিপিএম পথে নামবে।” তিনি বলেন, “ওই মেডিক্যাল কলেজ না হওয়ার পিছনে চক্রান্ত রয়েছে। এই চক্রান্তের বিরুদ্ধেই পথে নামবে সিপিএম।”ঘোষিত কর্মসূচি মতোই মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জে বুধবার আইন অমান্য করেন কয়েক হাজার বামফ্রন্ট সমর্থক। |
বৃহস্পতিবার আইন অমান্য কর্মসূচি রয়েছে বহরমপুর সহ জেলার বাকি চারটি মহকুমায়। নৃপেনবাবু বলেন, “কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় এই জেলা থেকেই নির্বাচিত সাংসদ। অথচ বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণের ব্যাপারে সব রকম পরিকাঠামোগত ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরেও কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত মেডিক্যাল কাউন্সিল ওই মেডিক্যাল কলেজকে অনুমোদন দেয়নি। কিন্তু এই জেলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অন্যন্ত দুর্বল। এখানে এমন একটি প্রতিষ্ঠানের খুব প্রয়োজন ছিল। স্থানীয় ছেলেমেয়েরাও ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেতেন।” নৃপেনবাবুর অভিযোগ, “৪০ বছর আগের পুরনো মামলা তুলে এনে দলীয় কর্মী জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কবর থেকে কঙ্কাল তুলে এনে সিপিএম কর্মীদের নামে মামলা রুজু করা হচ্ছে। রাজ্যে গত ছয় মাসে ৪৭ জন দলীয় কর্মী খুন হয়েছেন। মুর্শিদাবাদে কয়েক হাজার বামকর্মী এখনও ঘরছাড়া। পঞ্চায়েত সদস্যদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। অথচ পুলিশ প্রশাসন পুরোপুরি স্থবির হয়ে রয়েছে।” তাঁর দাবি, “পুলিশ এখন পুরোপুরি তৃণমূলের আজ্ঞাবাহকে রূপান্তরিত হয়েছে।” তিনি জানান, কর্মনিশ্চিত প্রকল্পে এই রাজ্যের অবস্থান ছিল ৪ নম্বরে। এখন তা নেমে গিয়েছে ২৩ নম্বরে।
নৃপেনবাবু বলেন, “ধান ও পাট কেনার জন্য সহায়ক মূল্য ঘোষণা হয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলাতেও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। কিন্তু জেলার কোথাও ধান ও পাট কেনা শুরুই হয়নি।” দলের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, “খোলা বাজারে ধানের দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। প্রকাশ্যে ৩০০ টাকার সার চাষিকে কিনতে হচ্ছে কালোবাজারে। প্রশাসনিক কোনও তৎপরতা চোখে পড়ছে না।” সিপিএমের এই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে কংগ্রেস ও তৃণমূল। তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুব্রত সাহা বলেন, “রাজ্য সরকার ও জেলা প্রশাসন কেমন চলছে তার বিচারক জেলার মানুষই। বিগত বামফ্রন্ট সরকারের আমলের কাজকর্মের ফল এখনও ভুগতে হচ্ছে মানুষকে।” তাঁর কথায়, “বহরমপুরে মেডিক্যাল কলেজ করার সব রকম চেষ্টা করছি আমরা।” কংগ্রেসের জঙ্গিপুর মহকুমা সভাপতি ও প্রণববাবুর ঘনিষ্ঠ নেতা মুক্তিপ্রসাদ ধর বলেন, “জেলায় মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন হোক, তা সকলেই চান। কংগ্রেস এই নিয়ে পথেও নেমেছে। তাই এই প্রসঙ্গে চক্রান্তের ভূত দেখা অর্থহীন।” |