|
|
|
|
সিপিআইয়ের বহু নেতা-কর্মী দল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
দল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন আরামবাগের বেশ কিছু সিপিআই নেতা-কর্মী। কিছু দিন আগে সিপিআই থেকে বহিষ্কৃত হয়ে কয়েক জন নেতা তৈরি করেছিলেন নতুন সংগঠন ‘আরামবাগ কৃষক সভা’। তাঁদেরও অনেকে এ দিন যোগ দেন কংগ্রেসে। সব মিলিয়ে প্রায় ১২০০ লোক এ দিন তাঁদের দলে এলেন বলে দাবি করেন হুগলি জেলা কংগ্রেসের সভাপতি দিলীপ নাথ। আরামবাগ মহকুমাশাসকের অফিস চত্বরে এ দিন সভা করে কংগ্রেস। সেখানেই দলে যোগ দেন সকলে।
হরিণখোলা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা সিপিআইয়ের হুগলি জেলা কমিটির সদস্য শেখ আলাউদ্দিনও এ দিন দল ছেড়েছেন। তিনি বলেন, “গত ২৪ বছর ধরে দল করছি। কিন্তু বহু অবজ্ঞা, অবহেলা সহ্য করতে হয় আমাদের। তার উপরে তৃণমূলের অত্যাচার চলছে। দল আমাদের কোনও নিরাপত্তা দিতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে আমাদের মনে হয়েছে, কংগ্রেস তুলনায় অনেক সঙ্ঘবদ্ধ দল। এখানে আমরা আমাদের যোগ্য মর্যাদা এবং নিরাপত্তা পাব। সে জন্যই সিপিআই ছেড়ে এলাম।” সিপিএমকেও ‘অত্যাচারী দল’ বলে সমালোচনা করেন আলাউদ্দিন।
স্বভাবতই এ দিনের ঘটনায় খুশি কংগ্রেস। দিলীপবাবু বলেন, “কিছু লোক অত্যাচারিত হচ্ছিলেন। আমরা ওঁদের হাতে আমাদের দলের পতাকা তুলে দিয়েছি।”
কিছু দিন আগে সিপিআইয়ের আরামবাগ জোনাল কমিটির সম্পাদক শম্ভু ঘোষকে দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য বহিষ্কার করা হয়। তিনি অনুগামীদের নিয়ে তৈরি করেন ‘আরামবাগ কৃষক সভা’। ওই সংগঠনের অনেকেও এ দিন দল ছেড়েছেন। শম্ভুবাবু অবশ্য এ ব্যাপারে বিশেষ মন্তব্য করতে চাননি। শুধু বলেন, “যাঁরা ভাল বুঝেছেন, তাঁরা গিয়েছেন।”
শম্ভুবাবুকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে সিপিআইয়ের অন্দরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছিল বলে মনে করে স্থানীয় বাম শিবির। সিপিআইয়ের একাধিক নেতা-কর্মীসহ শম্ভুবাবুর অনুগামীরাও এ দিন কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় ফের সিপিআইয়েরই ‘মুখ পুড়ল’ বলে মনে করছেন একাধিক বাম নেতা। এ ব্যাপারে সিপিআইয়ের হুগলি জেলা কমিটির সদস্য তথা আরামবাগ স্টিয়ারিং কমিটির আহ্বায়ক রঘুপতি বাড়ুই বলেন, “আমরা বামপন্থীরা কোনও গন্ধ শুঁকে পার্টি করি না। ওঁরা চলে গেলেন ঠিকই, কিন্তু এ ব্যাপারে আমাদের বিশেষ কিছু বলার নেই।” দলছুটেরা যে অভিযোগ তুলেছেন, সে প্রসঙ্গে সিপিআই নেতা বলেন, “তৃণমূল রাজ্যের সর্বত্র সন্ত্রাস করছে। এ ব্যাপারে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। রাজ্য নেতৃত্বকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। দলে কাউকে অবজ্ঞা, অবহেলা করা কখনওই হয়নি।” তাঁর দলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে আরামবাগের তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা বলেন, “আমাদের দলে সুযোগ না পেয়ে ওরা কংগ্রেসের সঙ্গে গিয়েছে। তৃণমূলে দুষ্কৃতীদের কোনও ঠাঁই নেই।” অত্যাচারের অভিযোগ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। যদিও এ দিনই কংগ্রেসে যোগদানের পরে বাড়ি ফেরার পথে আরামবাগের হরাদিত্য মোড়ে কয়েক জনের উপরে তৃণমূলের লোকজন হামলা চালায় বলে অভিযোগ। জখম হয়েছেন সদ্য কংগ্রেসে যোগ দেওয়া শেখ ইউনিস আলি, রিয়াজুল হক এবং শেখ সাজাহান। দু’জনকে ভর্তি করা হয়েছে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে। দলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে ঘটনাটিকে সিপিআইয়ের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। |
|
|
|
|
|