আমজনতার ঘরে তিনি নিজে পৌঁছে গিয়েছেন বারবার। পাত পেড়ে খেয়েছেনও। উত্তরপ্রদেশ সফরের দ্বিতীয় দিনে জনতার সঙ্গে ‘নিবিড় যোগের’ সেই অস্ত্রেই মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন রাহুল গাঁধী। সুর ততটা না চড়িয়েও একই অস্ত্রে বিঁধলেন সপা নেতা মুয়ালম সিংহকেও। আজ বাহরাইচের এক জনসভায় রাহুল অভিযোগ করেন, মায়াবতী এবং মুলায়ম বড় নেতা হওয়ার পরে মানুষকে ‘ভুলে গিয়েছেন’। তাঁরা কেউই আর জনতার কাছে যান না।
শুধু মায়া-মুলায়মের সমালোচনাতেই থামেননি তিনি, নিজেও কথা বলেছেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। তাঁর কাছে পরিবারের দুঃখের কথা বলতে এসে কেঁদে ফেলেছে একটি বাচ্চা ছেলে। মাথায় হাত বুলিয়ে রাহুল তাকে সান্ত্বনা দিয়েছেন। সম্প্রতি রাহুল উত্তরপ্রদেশের মানুষ অন্য রাজ্যে গিয়ে ‘ভিক্ষাবৃত্তি’ করতে বাধ্য হচ্ছেন বলায় আপত্তি জানিয়েছিলেন মায়াবতী। আজ কৌশলে ফের একই কথা বলেছেন রাহুল। বলেছেন, “আপনারা মহারাষ্ট্রে ট্যাক্সি চালাবেন, দিল্লিতে রাস্তা আর মেট্রো বানাবেন, কিন্তু নিজের রাজ্য তো পিছিয়ে রইল। রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।” |
মায়াবতী-মুলায়মের বিরুদ্ধে রাহুলের অভিযোগ, “ওঁরা বড় নেতা হয়েছেন। হেলিকপ্টারে ঘোরেন, অথচ আপনাদের কষ্ট দেখে ওঁদের রাগ হয় না। দু’হাজার কিলোমিটার জুড়ে ছড়ানো চাষিদের জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে দেখেও ওঁদের কিছু মনে হয় না।” যদিও মায়াবতীকে রাহুল যতটা কড়া আক্রমণ করেছেন, মুলায়মের ক্ষেত্রে ততটা করেননি। বরং বলেছেন, মুলায়মের থেকে তিনি অনেক কিছু শিখেছেন। কিন্তু একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “ওঁর সমস্ত রাগ ফুরিয়ে গিয়েছে।” ভাট্টা পারসলের প্রসঙ্গ তুলে রাহুল বলেছেন, “সপা নেতারা ঘরে বসে আছেন।’’ অর্থাৎ, রাজ্যে জমি আন্দোলনের রাশ যে নিজের হাতেই রাখতে চান, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
মায়াবতী-প্রসঙ্গে রাহুল বলেছেন, রাজ্যে ঠিক কী হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী জানেনই না। তবে মায়াবতী-মুলায়মের বিরুদ্ধে ‘জনবিচ্ছিন্নতার’ যে অভিযোগ রাহুল তুলেছেন, বাহরাইচ বিধানসভা আসনের কংগ্রেস প্রার্থীর বিরুদ্ধে সেই একই অভিযোগ তুলেছেন দলেরই কিছু নেতা-কর্মী। প্রার্থী বদলের দাবি তুলে আজ রাহুলের সভাস্থলে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। তবে সভা চলাকালীনই ওই বিক্ষোভ হয়েছে কি না, স্পষ্ট জানা যায়নি। |