|
|
|
|
কাজ খুঁজতে ভিন রাজ্যে পাড়ি কমছে বিহারে |
স্বপন সরকার • পটনা |
বিহার কি এখন উন্নতির পথে? বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক প্রকল্পে নিজের রাজ্যেই মানুষ কি কাজ পাচ্ছেন?
রাজ্য সরকার অন্তত এমন দাবিই করছে। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বলছেন, “কাজের খোঁজে এখানকার শ্রমিকদের অন্য রাজ্যে যাওয়ার প্রবণতা কমে আসছে। এই রাজ্যের মানুষ এখন ঘরের কাছে, নিজের রাজ্যেই কাজ পাচ্ছেন। ফলে অন্য রাজ্যে কাজের খোঁজে কম মানুষকে যেতে হচ্ছে।” তিনি পরিসংখ্যান দিয়ে জানান, ২০০১ থেকে ২০০৩ সালের তুলনায় ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালে ভিন রাজ্যে কাজের খোঁজে যাওয়া শ্রমিকের সংখ্যা ২৬% কমে গিয়েছে। তিনি বলেন, “এর থেকে স্পষ্ট, রাজ্যের মানুষ এখন রাজ্যের ভিতরেই কাজ পাচ্ছেন।” সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে, চাষের কাজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন নির্মাণ কাজে এখানকার শ্রমিকরা এখন নিজেদের যুক্ত করতে পারছেন।
বিহারের চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী এই রাজ্যের বহু শ্রমিক কাজের খোঁজে প্রতিবেশী পশ্চিমবঙ্গ থেকে শুরু করে দিল্লি, মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, হরিয়ানা এবং গুজরাতে কাজ করতে যেতেন। পঞ্জাব এবং হরিয়ানায় তাঁরা চাষের কাজে গেলেও গুজরাত, দিল্লি এবং মহারাষ্ট্রে এখানকার শ্রমিকরা মূলত গহনা তৈরির কাজে যুক্ত থাকতেন। নীতীশ তাঁর কথার সমর্থনে বলেন, “বিহার ইনস্টিটিউট অব ইকোনোমিক স্টাডিজ্-এর (বিআইইএস) এক সমীক্ষা থেকে এই তথ্য উঠে এসেছে।” এই প্রসঙ্গে নীতীশ বলেন, “দিল্লিতে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদল আমাকে একবার বলেছিলেন আগে বিহার থেকে যত সংখ্যায় শ্রমিক আমাদের রাজ্যে কাজ করতে আসতেন, এখন তা কমে গিয়েছে।”
একই সঙ্গে তিনি উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদির প্রসঙ্গ টেনেও বলেন, “সুশীল একবার গুজরাতে গিয়েছিলেন। সেখানকার গহনা ব্যবসায়ীরা তাঁকে বলেছিলেন, বিহারের শ্রমিকরা এখন আর তেমন ভাবে এখানে কাজ করতে আসছে না। বাড়িতে যাওয়ার নামে যাঁরা বিহারে ফিরে যাচ্ছে, তাঁদের একটা বড় অংশই আর ফিরছে না।” সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে, পঞ্জাবের বড় চাষিরা বিহারের শ্রমিকদের পাওয়ার জন্য, থাকার জায়গা এবং মোবাইল ফোনের মতো লোভনীয় জিনিসের সুযোগ দেওয়া সত্ত্বেও তাদের আটকে রাখা যাচ্ছে না। অন্য রাজ্যের ব্যবসায়ীদের চিন্তার কারণ একটাই, এখানকার শ্রমিকদের পারিশ্রমিক যথেষ্ট কম এবং তারা পরিশ্রমী। শ্রমিক না মেলায় ভিন্ রাজ্যগুলি এখন ফাঁপড়ে।
বিআইইএস-এর ডিরেক্টর প্যারীলাল এই সমীক্ষার বিষয়ে বলেন, এই ব্যাপারে সিওয়ান, মধুবনী, সহর্ষ, ভাগলপুর, নালন্দা এবং রোহতাস জেলায় সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। দেখা গিয়েছে, এই সব জেলার একটা বড় অংশের মানুষ দিল্লি এবং পঞ্জাবের ট্রেনে চাপতেন। এখন সেটা কমে গিয়েছে। সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে, বিহারের শ্রমিক, যাঁরা অন্য রাজ্যে কাজে যেতেন তাঁরা দেখছেন ঘরের কাছেই কাজ পাওয়া যাচ্ছে। ঘরে থেকেই তাঁরা কাজ করতে চাইছেন। |
|
|
|
|
|