সবুজ শ্যামল পৃথিবী... |
আর একটু সচেতনতার দাবি |
|
ছবি: সন্দীপ পাল। |
দূষণের হাত থেকে পরিবেশকে বাঁচাতে বিশ্ব জুড়ে লড়াই শুরু হয়েছে। আমরা মাঝেমধ্যে জুন মাসের প্রথম দিকে দু’একটা গাছ লাগাই, শোভাযাত্রায় সেজেগুজে হাঁটি, আর সভাসমিতিতে গিয়ে পরিবেশ বিষয়ক বক্তৃতা শুনে শপথ নিই— প্রকৃতি আমার মা। তার পর নিয়ম করে সব ভুলে যাই। ডুয়ার্সের জঙ্গল চিরে চলে যাওয়া রেল লাইনে ট্রেনের ধাক্কায় যখন হাতি মারা যায়, তার পর দু’এক দিন আমরা প্রতিরোধ-প্রতিবাদের ঝড় বইয়ে দিয়ে কেমন করে যেন সাইলেন্ট মোডে চলে যাই। নদীতে বিষ ছড়িয়ে ধরা মাছ বাড়িতে প্রতি দিন রসিয়ে রসিয়ে খাই। কিন্তু নদীতে ভেসে ওঠা মরা মাছের ছবি পর দিন সংবাদপত্রের পাতায় যখন দেখি তখন একটা ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের আফটার শকের চেয়েও বেশি বিপর্যস্ত হই।
আমরা এটাই ভাবতে অভ্যস্ত যে, এই পৃথিবী শুধুমাত্র আমাদের। সৃষ্টির শুরুতে সবার জন্য এই সবুজ শ্যামল পৃথিবী অবাধ বিচরণভূমি ছিল। তার পর শুধু জ্ঞানের জোরে আমরা বাকি সব অবলা জীবদের তাদের বাস্তুচ্যুত করব এ কী ধরনের জ্ঞান বা শিক্ষা!
প্রায় প্রতিদিন সংবাদপত্র খুললেই দেখা যায়, জঙ্গল সংলগ্ন লোকালয়ে ঢুকে স্থানীয় মানুষের হাতে মার খেয়ে মারা যাচ্ছে বনের পশু। তার সঙ্গে গ্রামবাসীদের বিবৃতি, ওরা মাঝে মাঝে গ্রামে ঢুকে ফসল খেয়ে নেয় বা গবাদি পশু ধরে নিয়ে যায়। তাই এ বার বাগে পেয়ে সেই জন্তুকে বধ করা হল। সত্যিই উপযুক্ত শাস্তি। এক বার উল্টো করে ভাবুন তো। ওদের বাস ভূমিতে আমাদের অবাধ বিস্তার। ওদের খাবার চলে যাচ্ছে আমাদের পাতে। তা হলে ওই বেচারারা যাবে কোথায়? খাবে কী? আবার আন্তর্জাতিক বাজারে পশুপাখির অঙ্গ প্রত্যঙ্গের দাম এত বেশি যে, চোরাশিকারিদের হাতে বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছে বনের প্রাণী।
এত কথা বলা এই কারণেই যে, মানুষের যে গুণটা থাকা আবশ্যিক, সেই মানবিকতা সত্যিই কি আমাদের আছে? নাকি যত আধুনিক হব আমরা ততই পরিবেশ, জীবজন্তুর প্রতি প্রেম হারিয়ে যাবে, পাল্টে যাবে দৃষ্টিভঙ্গি।
পরিবেশ বাঁচানোর কথা উঠলেই এসে যায় জলাভূমি বা জলাশয়ের কথা। কারণ জলাভূমি হল পরিবেশের ফুসফুস। উত্তরবঙ্গের দিঘির শহর বললে কোচবিহারের কথা মনে পড়ে। কিন্তু জলপাইগুড়ি শহরেও দিঘির সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। তবে হ্যাঁ, এখন এগুলো সবই ডোবার চেহারা নিয়েছে। পুরসভার তরফে বছর কয়েক আগে এক বার এগুলোর সংস্কার করা হয়েছিল। এই সব জলাশয়ে দেখা মেলে নানা রকম মাছ, বিভিন্ন কীটপতঙ্গ, সাপ ইত্যাদির। আর আছে এই সব জলজ প্রাণীকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে বেঁচে থাকা এমন অনেক পাখি। অনেক জায়গাতেই এই জলাশয়গুলি ভরাটের চেষ্টা করা হচ্ছে। তা হলে কিন্তু অচিরেই হারিয়ে যাবে এই জলাশয়কে কেন্দ্র করে বেঁচে থাকা বিভিন্ন রকম প্রাণীদের ভবিষ্যত্। এরই পাশাপাশি, ক্ষতিগ্রস্ত হবে ওই এলাকার পরিবেশ। তাই পরিবেশ দফতর, পুরসভা কর্তৃপক্ষ-সহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে জলাশয় আর পরিবেশকে বাঁচাতে অবিলম্বে উদ্যোগী হওয়ার আবেদন রাখছি। সন্দীপন রাহা, জলপাইগুড়ি। |
|
|
|
|
পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে ইতিমধ্যেই পস্তাচ্ছি আমরা। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফল
হাতেনাতে পেয়েও টনক নড়ে
ক’জনের?
ব্যাতিক্রম অবশ্য আছে। আর সেই ব্যাতিক্রমী
মানুষদের প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ করি আমরা। তাঁদের দলবদ্ধ অথবা
ব্যক্তিগত
উদ্যোগকে স্বাগত
জানিয়ে পাঠক সমক্ষে নিয়ে আসার পরিকল্পনার শরিক হতে চাইলে আমাদের জানান নীচের ঠিকানায়
সংবাদের হাওয়াবদল
হাওয়াবদল
আনন্দবাজার পত্রিকা, ইন্টারনেট সংস্করণ
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট
কলকাতা ৭০০০০১
ই-মেল করুন haoabadal@abp.in অথবা haoabadal@gmail.com |
|
|