কবিগুরু ও হেমকবি
ওকাম্পো ভিলা ‘কবিতীর্থ’ নয়?
জানুয়ারি ২০১২, আমরা বুয়েনস আইরেসে যাই। কবিতীর্থ ওকাম্পো ভিলায় যাওয়ার বাসনায় অন্তর্জাল থেকে ঠিকানা জোগাড় হল: Villa Ocampo, Elortundo 1837, Beccar, B A. Argentina. এটা San Isictro এবং Victoria স্টেশনের মাঝখানে। Retiro স্টেশন থেকে লোকাল ট্রেনে Beccar পৌঁছালাম। জিজ্ঞেস করে রেললাইন পার হয়ে নির্জন পথে Uriburu এবং Elortundo সংযোগস্থলের ডাইনে আরও একান্তে স্থিত এক সুবিশাল প্রাসাদের সামনে এলাম। ফলকে লেখা, Villa Ocampo, Escenario de culture, Unesco. এক-এক জনের Bono Coutribueion ১৮ পেসো। বিশাল জায়গা নিয়ে গথিক স্থাপত্যের ভিলা। গ্র্যাভেল বিছানো পথ। সব কিছু মধুগন্ধে ভরা। মনের গভীরে রবীন্দ্রসংগীতের অনুরণন। ভিলার ভিতরে সুপরিশীলিত গাইড একটা বিশাল পট দেখিয়ে বললেন, এটা ভিক্টোরিয়ার বাবা ইমানুয়েল ওকাম্পোর। গাইড ইংরেজিতে বলে চলেছেন, Victoria was a rebel. She was the lynchpin of intellectual circle of Buenos Aires. বিয়ের রাতেই নাকি স্বামীগৃহ ছেড়ে আসেন। ১৯২৪। মেক্সিকো যাওয়ার পথে রবীন্দ্রনাথ জাহাজে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সঙ্গী এলম্হার্স্ট। খবর পেয়ে আগে কখনও সাক্ষাৎ না-হওয়া অসুস্থ কবিকে ভিক্টোরিয়া নিয়ে আসেন। কবি কোনখানে থাকতেন? জানতে চাওয়ায় বিষণ্ণ হাসি হেসে গাইড বললেন, এ বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ কখনও থাকেননি। ভিক্টোরিয়ার বাবা অপরিচিত, অজ্ঞাত, বিধর্মী, বিজাতীয় exotic (এই শব্দটি গাইড ব্যবহার করেছিলেন) বিদেশিকে তাঁর বাড়িতে থাকার অনুমতি দেননি। দমে না-গিয়ে ভিক্টোরিয়া তাঁর সমস্ত গহনা বিক্রি করে এখান থেকে ৩ ব্লক দূরে এক ভাড়াবাড়িতে কবির থাকার ব্যবস্থা করেন। সে বাড়ি এখন বন্ধ। আমরা যাকে বলি gobsmacked. গাইড বললেন, তবে, বিকেলের দিকে প্রায়ই কবি এ বাড়িতে আসতেন এবং লনে পাম গাছের তলায় বসে ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে নানা বিষয়ে আলাপচারিতা চালাতেন। সন্ধ্যায় ফিরে যেতেন। সেই গাছটি আজও সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে। একটা টেবিলের ওপর কয়েকটি ফটো। তার মধ্যে একটি রবীন্দ্রনাথের। সঙ্গে কৃষ্ণমূর্তি, কামু, আঁদ্রে মালরো, গ্রাহাম গ্রিন, করবুসিয়ে প্রমুখ যাঁরা এ ভিলায় এসেছেন। ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে ইন্দিরা গাঁধীর একটা ছবি আছে দেওয়ালে। গাইড স্প্যানিশে লেখা কবির প্রতি ভিক্টোরিয়ার শ্রদ্ধার্ঘ্যস্বরূপ একটি বইয়ে San Isidro-র বাড়ির সামনে রবীন্দ্রনাথের একটি ছবি দেখাল। এ ছাড়া এখানে কবির কোনও স্মৃতিচিহ্ন নেই। ভিক্টোরিয়ার সান্নিধ্যে কবির প্যাশনের যে প্রজ্জ্বলন ঘটে, তা ভিন্ন পথে পটুয়া কবির ছবিতে আদিম প্রসঙ্গহীন ভাষার মগ্নচৈতন্য থেকে উত্থিত।
সে দিন আমরা বিষণ্ণ হৃদয়ে ফিরে এসেছি। পরে একদিন Recoleta Cemetery-তে গিয়ে ভিক্টোরিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাই।
বিমান রায়। কলকাতা-৫৫

আবক্ষ মূর্তি ঘিরে এখন আগাছার ভিড়
অমর কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তকে গুরুরূপে বরণ করে যে সব কবি মহাকাব্য রচনায় ব্রতী হন, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে প্রতিভাশালী হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় প্রভূত যশের অধিকারী হয়েছিলেন। তাঁর নামও এক সময় মধুসূদন দত্তের মতো গৌরবের সঙ্গে উচ্চারিত হত। হেমচন্দ্র ‘মেঘনাদবধ কাব্য’র দ্বিতীয় সংস্করণের ভূমিকা লিখে দিলে মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর বন্ধু রাজনারায়ণ বসুকে হেমচন্দ্র প্রসঙ্গে মুগ্ধ চিত্তে লেখেন যে, ‘...a real B A has written a long critical preface...।’
কয়েক দিন আগে হুগলি জেলার রাজবলহাটে হেমচন্দ্রের জন্মভিটা দর্শন করে আসি। ১২৪৫ বঙ্গাব্দের ৬ বৈশাখ হেমচন্দ্র রাজবলহাটের গুলটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কবির কৈশোর এই খানেই কাটে, প্রাথমিক শিক্ষার হতেখড়িও হয় এখানেই। অবশ্য, কবির জন্মভিটা বলতে পড়ে আছে সংকীর্ণ পথের ধারে একফালি জমি। স্থানীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর আন্তরিক প্রয়াসে ১৩৮০ বঙ্গাব্দে কবির এক আবক্ষ মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এখন সেই মূর্তি ঘিরে জন্ম নিয়েছে ঘাসজাতীয় আগাছা। পড়ে আছে নারকেল গাছের বাখারি। কাপড় বোনার সুতো শুকোচ্ছে চারদিকে।
রাজবলহাটের মুখ্য আকর্ষণ দেবী রাজবল্লভী। দেবীকে দর্শনের জন্য দূর-দূরান্ত থেকে প্রায় বারো মাসই বহু মানুষ এখানে আসেন। কিন্তু তাঁদের অনেকেই খোঁজ রাখেন না মায়ের মন্দির থেকে হাঁটাপথে মাত্র পাঁচ মিনিটের দূরত্বে ‘বৃত্রসংহার’, ‘নলিনীবসন্ত’, ‘আশাকানন’ প্রভৃতি কাব্যের রচয়িতার জন্মভিটাটুকু পড়ে আছে অনাদরে।
উজ্জ্বলকুমার মণ্ডল। শেওড়াফুলি, হুগলি
 
লাগল যে দোল...
  • মেদিনীপুর শহরে বিদ্যাসাগর হলে বসন্ত উত্সব পালন।

  • তমলুকের ধারিন্দায় সাতদিন ব্যাপী দোল উত্সব ও মেলা।

  • রঙিন উদযাপন। ভারতীয় জাদুঘরের সামনে আবির খেলায় মেতেছেন দুই বিদেশিনি।

  • শিলিগুড়ির অদূরে আবির কারখানায় ব্যস্ততা।

  • কাটোয়ার স্টেশন বাজারে আবিরের পসরা।

  • জার্নালিস্ট রিক্রিয়েশান ক্লাবের উদ্যোগে, তমলুকের রূপনারায়ণের তীরে বসন্ত উত্সব।

  • দোলের জন্য পিচকারি বিকোচ্ছে জলপাইগুড়িতে।

  • রঙের বাজার বালুরঘাটে।

  • চন্দননগরের স্ট্র্যান্ড ঘাটে বসন্ত উৎসব।

  • জলপাইগুড়িতে আবিরের পসরা।

  • দোলের কেনাকাটা তমলুকের জেল মোড়ে।

  • রং মেলাতে: বসন্ত উৎসব।

  • দোলের রঙ বিক্রি করছে খুদে বিক্রেতা।

  • দোলের বাজার মেদিনীপুরে।


  • রং মেলাতে: বসন্ত উৎসব রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে।


  • দোলে সামিল...


  • এগরা শহরের দোল উত্সবে রাধাগোবিন্দর মূর্তি।


  • দোল উপলক্ষে মায়াপুর ইস্কন মন্দিরে রথ যাত্রার
    আয়োজন করা হয়। তাতেই মেতেছে ভক্তরা।


  • রঙের উত্সবে রঙিন উদযাপন...

—নিজস্ব চিত্র

পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে ইতিমধ্যেই পস্তাচ্ছি আমরা। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফল হাতেনাতে পেয়েও টনক নড়ে ক’জনের?
ব্যাতিক্রম অবশ্য আছে। আর সেই ব্যাতিক্রমী মানুষদের প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ করি আমরা। তাঁদের দলবদ্ধ অথবা ব্যক্তিগত
উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে পাঠক সমক্ষে নিয়ে আসার পরিকল্পনার শরিক হতে চাইলে আমাদের জানান নীচের ঠিকানায়

সংবাদের হাওয়াবদল
হাওয়াবদল
আনন্দবাজার পত্রিকা, ইন্টারনেট সংস্করণ
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট
কলকাতা ৭০০০০১

ই-মেল করুন haoabadal@abp.in অথবা haoabadal@gmail.com
 
রোজের আনন্দবাজারএ বারের সংখ্যাসংবাদের হাওয়াবদলআপনার রান্নাঘরস্বাদবদল চিঠিপুরনো সংস্করণ