ঐতিহ্য |
• ঐতিহ্য সংরক্ষণে সেরার সেরা ভিগান সিটি |
ফিলিপিন্সের লোকো স্যু প্রদেশের রাজধানী ভিগান। প্রাথমিক পরিচয়ে শহর হলেও, ভিগান আদতে আব্রা, মেসতিজো ও গোভান্তেজ নদী দিয়ে ঘেরা একটি দ্বীপ। ষোড়শ শতকের ঐতিহাসিক এই শহর বিখ্যাত তার ‘কবলস্টোন’ রাস্তার জন্য। গোলাকৃতি পাথর বসানো এই ধরনের রাস্তা ফিলিপিন্স, প্রাচ্য ও ঔপনিবেশিক নির্মাণশৈলীর ধারা বহন করে।
১৯৯৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ভিগান সিটি ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’-এর তালিকাভুক্ত হয়। তবে সম্প্রতি জাপানের কিয়োটোয় ইউনেস্কোর ৪০তম ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কনভেনশন’ অনুষ্ঠানে এই শহরের মুকুটে জুড়েছে তার প্রথম আন্তর্জাতিক আখ্যার পালক। ‘হেরিটেজ কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট’ বা ঐতিহ্য সংরক্ষণে সুব্যবস্থার জন্য বিশ্বের ২৮টি শহরকে পেছনে ফেলে সেরার শিরোপা এখন ভিগানের মাথায়। মূলত তিনটি কারণে বিচারকরা ভিগান সিটিকে এই সম্মান দিয়েছেন—
১) যত্সামান্য সংস্থানে সংরক্ষণের সুব্যবস্থা যা বিশ্বের অন্যত্রও বেশ গ্রহণযোগ্য হতে পারে,
২) সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় কমিটির ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা,
৩) সংরক্ষণের বহুমুখী উপায় নির্ধারণ করা।
পাশাপাশি বিচারকদের নজর ছিল পর্যটনে উন্নতি, জল ও পরিবেশ সংরক্ষণের মতো বিষয়েও।
|
• তুঙ্গভদ্রার তীরে ‘তাসের দেশ’ |
কর্নাটকের হায়ের বেনাকাল অঞ্চলে তুঙ্গভদ্রার পাশের অনুচ্চ পাহাড় বেয়ে নেমে আসা অসংখ্য ‘ডলমেন’— দূর থেকে দেখে মনে হবে তাস দিয়ে কেউ ঘর বানিয়ে রেখেছে। কাছে গেলে বোঝা যায়, তাস তো দূরস্থান, সেগুলো প্রায় একতলা সমান এক একটি প্রস্তরখণ্ড। দু’টি খাড়া পাথরের উপরে একটি শোয়ানো খণ্ড— অনেকটা ঘরের মতো দেখতে এই সমাধিস্থানগুলি বিস্তৃত প্রায় ৫০ একর জমি জুড়ে। হাজার বা তারও বেশি বছর ধরে তৈরি এই সমাধিক্ষেত্রে আছে এক হাজারেরও বেশি সৌধ। দক্ষিণ ভারতের লৌহ যুগ অর্থাত্ ১২০০ থেকে ৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে এগুলির নির্মাণকাজ হয়েছে বলে অনুমান। স্মৃতিসৌধ বা সমাধিক্ষেত্র, যাই হোক, সেখানে মানব শরীরের কোনও ‘অবশিষ্ট’ অবশ্য পাওয়া যায়নি।
বিজাপুর শহরের খ্যাতি তার স্থাপত্যের জন্য। আদিল শাহি আমলে তৈরি এই সব ঐতিহাসিক স্থাপত্যে বাহমণি নির্মাণশৈলী নজর কাড়ে। বর্তমান বিজাপুর শহরকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়— প্রধান দুর্গ, দেওয়াল পরিবেষ্টিত ভগ্ন শহর ও শহরবাসীর জন্য সুরক্ষিত অঞ্চল। বিজাপুর সন্নিহিত বাদামি, আইহোল ও পাট্টাড়াকাল বিখ্যাত সেখানকার চালুক্য ভাস্কর্য-খচিত মন্দিরের জন্য।
ইন্দো-এশিয়ান ফাউন্ডেশন অফ আর্কিয়োলজিকাল রিসার্চ-এর তৃতীয় বর্ষের অনুষ্ঠান হয়ে গেল গত অক্টোবর মাসে। আনুষ্ঠানিক ভাবে সেখানেই ঘোষিত হয় যে, কর্নাটকের হায়ের বেনাকাল ও বিজাপুরকে ‘ওয়ার্ল্ঢ হেরিটেজ’-এর তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব দেবে এএসআই। ঐতিহ্যমণ্ডিত এই দুই জায়গার সঙ্গে আরও ক’টি নাম জুড়ে দেওয়া হবে— হয়সালা, হালেবিড় ও সোমনাথপুরা। তার পর ইউনেস্কো-র মনোনয়নের অপেক্ষা।
|
• বৃন্দাবনে সংরক্ষিত সারদাদেবীর স্মৃতি |
এক দিকে উত্তরপ্রদেশের জমি মাফিয়াদের সঙ্গে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই, প্রাণনাশের হুমকি, অন্য দিকে ছালবাকল খসে প্রায় ভেঙে পড়া দেড়শো বছরের একটি বাড়িকে তার আগের চেহারা ফিরিয়ে দেওয়া সহজ ছিল না কোনওটাই। চার দশক ধরে বিস্তর লড়াইয়ের শেষে সারদামণি দেবীর স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটির দরজা জনসাধারণের জন্য খুলে দিতে সক্ষম হল বৃন্দাবন রামকৃষ্ণ মিশন। রামকৃষ্ণদেবের প্রয়াণের পরে, ১২৬ বছর আগে এই দিনেই বৃন্দাবনে পা রাখেন সারদাদেবী। যমুনার তীরে, বংশীবট কুঞ্জের অদূরে এই বাড়িটি ছিল রামকৃষ্ণদেবের ভক্ত বলরাম বসুর। এর ম্যানেজার তখন কালাবাবু। সেই সূত্রেই বাড়িটি পরিচিত হয়ে ওঠে কালাবাবু কুঞ্জ নামে। ১৮৮৬-র পরে ১৮৯৫ সালে ফের এই বাড়িতে এসেছিলেন সারদাদেবী। বিভিন্ন সময় এসেছেন স্বামী বিবেকানন্দ ও তাঁর গুরু ভাইয়েরাও। পরে কোনও সময় এর দখল নেয় জমি মাফিয়ারা। বাড়ির দাবি নিয়ে উপস্থিত হয় কয়েকটি পূজারি পরিবারও। কিন্তু ‘মঠজননী’র স্মৃতি জড়িয়ে থাকা বাড়িটি কোনও ভাবেই হাতছাড়া করতে চাননি মিশন কর্তৃপক্ষ। বিবেকানন্দের সাধশতবর্ষে সারদাদেবীর ব্যবহৃত ঘর-সহ কিছু অংশের দখল পেলেও, বৃন্দাবন রামকৃষ্ণ মিশনের সেক্রেটারি সুপ্রকাশানন্দের আক্ষেপ, বাড়িটির মাত্র সিকি ভাগ তাঁদের হাতে এসেছে। এর জন্যই ধার করে ১ কোটি টাকা দিতে হয়েছে মিশনকে। যদিও তাঁর একটি বড় অংশ ভক্তরা চাঁদা তুলে মিটিয়ে দিয়েছেন ইতিমধ্যেই। সংস্কারের পরে একতলায় ভক্তদের থাকা ও একটি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। খাড়া সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় একটিমাত্র ছোট ঘর। সেখানে সংরক্ষিত রয়েছে সারদাদেবীর ব্যবহৃত খাট।
|
প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার |
• রোমান কবরে তিন যুগের নির্মাণশৈলীর খোঁজ |
রোমের ইতিহাস বড়ই বিচিত্র ও বিস্ময়কর। রোমান সভ্যতার অনেক অজানা দিক জানতে প্রত্নতাত্ত্বিকেরা তার খোঁজ চালিয়ে গিয়েছেন। সম্প্রতি রোমের মেরিপোর্টের কাছে এক অত্যাশ্চর্য কবরের সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। কবরের নির্মাণশৈলী একটি যুগের নয়, বরং পর পর তিন প্রজন্মের ভাস্কর্য রীতির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে সেখানে। কবরের মধ্যে পাওয়া স্ফটিকের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে ৪০০ থেকে ৬০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই শবাধারগুলি তৈরি করা হয়েছিল। এদের মধ্যে সবচেয়ে গভীর ভাবে খোঁড়া শবাধারটির আকার দেখে বিজ্ঞানীদের ধারণা, এটি বানানো হয়েছিল একটি শিশু শরীরের জন্য। দ্বিতীয় শবাধারটি আবার ভিন্ন ধরনের উপাদানে তৈরি। শবাধারের ছাদ নির্মাণের উপকরণ দেখে প্রত্নতাত্ত্বিকরা মনে করছেন, এটি পরবর্তী যুগে তৈরি। শবাধারগুলির নির্মাণ বৈচিত্র্য ও উপাদানের পার্থক্য দেখেই অনুমান করা হয়েছে এগুলি ভিন্ন ভিন্ন যুগের। গবেষকদের আশা একই জায়গায় পর পর তিন যুগের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আবিষ্কৃত এই কবর নিঃসন্দেহে প্রত্নতত্ত্বের অনেক অজানা দিক খুলে দেবে।
|
• দু’হাজার বছরের পুরনো তিব্বতি সমাধিক্ষেত্র |
বিশেষ এক জায়গায় ছড়িয়ে থাকা কিছু প্রাচীন চিরুনি, তামার বাসনপত্র, হাতের লেখা সম্বলিত রেশমের টুকরো, চিত্রকলা প্রভৃতি ২০০৫ সালে তিব্বতের গড় প্রদেশের বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের নজরে আসে। আবিষ্কৃত বস্তুগুলি সম্বন্ধে আগ্রহী হয়ে সেগুলির কার্বন ডেটিং করেন প্রত্নতাত্ত্বিক জিন শুবো। পরীক্ষা করে দেখা যায় নিদর্শনগুলি প্রায় আঠেরোশো থেকে বাইশশো বছরের পুরনো। অর্থাত্ এগুলি পশ্চিম হান সাম্রাজ্য ও উই সাম্রাজ্যের সমসাময়িক। প্রাচীন নথি অনুযায়ী হান রাজারা অন্যান্য রাজাদের সঙ্গে সখ্য বজায় রাখতে রেশমের সামগ্রী উপহার দিতেন। এর প্রায় সাত বছর পর এ বছরের জুন মাস থেকে শুরু হয় খননকার্য। চারটি প্রাচীন সমাধিক্ষেত্র আবিষ্কৃত হওয়ার পর পর্দা উঠতে শুরু করে দু’হাজার বছরের পুরনো তিব্বতি সাম্রাজ্যের। সমাধিক্ষেত্রের মধ্যে কাঠের পাত্র, তামার সামগ্রী, তরবারি, মানুষ-সহ বিভিন্ন পশুর দেহাবশেষের খোঁজ মিলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এটি প্রাচীন সাংসুং সাম্রাজ্যের অংশ। তবে এর মধ্যে উত্সর্গ করা বেশির ভাগ সামগ্রী প্রাচীন ভারতবর্ষ থেকে আমদানি করা বলে অনুমান প্রত্নতাত্ত্বিকদের। সমাধিক্ষেত্রগুলির মধ্যে একটিতে ৪-৫ টি ও অন্যটাতে একটি দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছে। দেহাবশেষগুলির ডিএনএ পরীক্ষা হবে বলেও জানিয়েছেন প্রত্নতাত্বকরা। ওই এলাকায় আরও বড় খননকার্য চালিয়ে সাংসুং সাম্রাজ্য সম্পর্কে আরও নতুন তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা বিশেষজ্ঞদের।
|
• তুতেনখামেনের মৃত্যু বিরল জিন-রোগে |
ফারাও তুতেনখামেনের মৃত্যুরহস্য নিয়ে ফের এক নতুন তত্ত্ব। খুন, সর্পাঘাত, কুষ্ঠ, ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা, অ্যানিমিয়া এমনকী দুর্ঘটনা— এমন অসংখ্য তত্ত্বের পর এ বার তালিকায় যোগ হল বিরল জিনঘটিত রোগ। ব্রিটিশ শল্যচিকিত্সক হুতান আশরাফিয়ার পেশ করা এই তত্ত্বে ইতিমধ্যেই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিকমহলে। মতামতের সপক্ষে হুতানের ব্যাখ্যা, তুতেনখামেন ও তাঁর বহু পূর্বপুরুষের বিরল এই জিনঘটিত রোগ ছিল। ফলে তাঁদের দেহ ছিল নারীসুলভ। বিশেষ এক ধরনের মৃগীরোগ ছিল তাঁদের টেমপোরাল লোবের অতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণ। আর হরমোনের অতিরিক্ত ক্ষরণের ফলে বৃদ্ধি পেত তাঁদের স্তন। হুতানের মতে এই রোগেই কম বয়সে মৃত্যু হয়েছিল তুতেনখামেনের বাবা ও কাকার। তুতেনখামেনের মমিতে তাঁর একটি পা ভাঙা অবস্থায় পাওয়া যায়, তাঁর এই পা ভাঙার জন্য মৃগী রোগকেই দায়ী করেছেন হুতান। |
• মেক্সিকোয় উদ্ধার ২০০০ বছরের জাগুয়ার ভাস্কর্য |
গুয়াতেমালা সীমান্ত থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে মেক্সিকোর দক্ষিণ শিয়াপাসের কাছে ইজাপায় পাওয়া গেল এক জাগুয়ারের ভাস্কর্য। এই পুরাকীর্তিটি প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার বছরের পুরনো এবং এটি মায়া সভ্যতারও আগের নিদর্শন বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান পুরাতাত্ত্বিকদের। প্রায় এক টনের এই বিশাল মূর্তিটি ১.৩৮ মিটার লম্বা। তবে পাথরের তৈরি এই ভাস্কর্যটির মুখের একাংশ ও থাবা ছাড়া বাকি অংশ অসম্পূর্ণ। মায়া পূর্ববর্তী যুগে ধর্মীয় শহর হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল ইজাপা। ধর্মীয় আচারের সঙ্গে মূর্তিটির কোনও যোগ আছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
|
পরিবেশ ও বন্যপ্রাণ |
• ওক গাছের গুঁড়ির বয়স প্রায় পাঁচ হাজার বছর |
পাঁচ হাজার বছর ধরে দিব্যি বহাল তবিয়তে থাকা বুড়ো এক ওক গাছের গুঁড়ির খোঁজ পেলেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। ৪৪ ফুট দৈর্ঘ্যের এই গুঁড়িটি আসলে আরও বৃহত্ ‘ফেনল্যান্ড ব্ল্যাক ওক’ গাছেরই অংশ। সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি ও ভয়াবহ বন্যার কারণে প্রায় সাত হাজার বছর আগে এই ওক গাছের মৃত্যু হয়। তবে প্রকৃতির অদ্ভুত খেয়ালে আশ্চর্যজনক ভাবে এর গুঁড়িটি টিকে থাকে। পরবর্তী কালে পলি পড়ার কারণে এটি জীবাশ্মে পরিণত হয়। তবে চমকে দেওয়ার মতো বিষয় হল, হাজার হাজার বছর পরেও গুঁড়িটির বৈশিষ্ট্য বা প্রকৃতির কোনও রকম পরিবর্তন হয়নি। বিজ্ঞানীমহলে তাই সাড়া পড়ে গিয়েছে। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখছেন এই জাতীয় ওক গাছ কত দিন ধরে তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখে বংশগতির ধারাকে বজায় রাখতে পারে! ভবিষ্যতে সবুজায়নের জন্য এই বৈশিষ্ট্যটিকে এক বিশেষ পন্থা হিসেবে ব্যবহার করার কাজেও বদ্ধপরিকর তাঁরা।
|
• ‘স্থূল’ হাতিদের ‘স্লিম’ করতে সচেষ্ট তামিলনাডু |
ওজন তাদের এমনিই ‘একটু বেশি’। কিন্তু এই একটু বেশি ওজনই বড় ‘মাথাব্যথা’র কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতের বিভিন্ন মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে। দেশের বিভিন্ন মন্দিরে অতিরিক্ত ‘স্থূল’ হাতির সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। এর ফলে ধীরে ধীরে কমছে তাদের কর্মক্ষমতা। বেড়ে যাচ্ছে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও। মাদুরাইয়ের মীনাক্ষি মন্দিরের পনেরো বছরের এক হস্তিনীর ওজন বেড়ে গিয়েছে ৫০০ কেজি। দ্রুত তার ওজন কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্দিরের এগজিকিউটিভ অফিসার পন জয়রমন। কলাঝাগরের আর এক হস্তিনীরও ওজন প্রায় ৭০০ কেজি বেড়ে গিয়েছে বলে খবর। তবে হাতিদের এই স্থূলত্বের জন্য তাদের বন্দিদশাকেই দায়ী করেছেন পশুচিকিত্সকেরা। তাদের মতে জঙ্গলে প্রায় দু’শো বিভিন্ন ধরনের ফল, ফুল, শাক-সব্জি খেয়ে অভ্যস্ত হাতিদের খাদ্যাভ্যাসে ব্যাপক প্রভাব পড়ে বন্দিদশায়। স্থূলত্বের কারণ হিসাবে ভাত, বিভিন্ন শস্য, নুন, গুড় প্রভৃতি ‘অখাদ্য’কেই দায়ী করেছেন তাঁরা।
|
• ধ্বংসের মুখে অমেরুদণ্ডী শ্রেণির বেশ কিছু প্রজাতি |
এই মুহূর্তে বিশ্বের এক পঞ্চমাংশ অমেরুদণ্ডী প্রাণীর অস্তিত্ব সংকটে, এমনই উদ্বেগজনক দাবি একদল বিজ্ঞানীর। তাত্পর্যপূর্ণ ভাবে বিশ্বের সমগ্র প্রাণীর ৮০% অমেরুদণ্ডী। বিজ্ঞানীদের মতে এর মধ্যে প্রায় বারো হাজার প্রজাতির অস্তিত্ব চরম বিপন্ন। তবে স্থলচরের তুলনায় জলচর তথা স্বাদু জলের প্রাণীরাই বেশি বিপন্ন। জনসংখ্যার বিপুল ‘চাপ’, উষ্ণায়ণ, দূষণ প্রভৃতি কারণেই এই সংকট বলে অভিমত লন্ডনের জুলজিক্যাল সোসাইটির বিজ্ঞানীদের। তবে তথ্যের অপ্রতুলতায় তাঁদের এই দাবিকে এখনও প্রাথমিক স্তরেই রাখছেন বিজ্ঞানীরা। বিপন্ন-তালিকায় বিভিন্ন পোকামাকড় থেকে শুরু করে শামুক, ঝিনুক, ফড়িং— বাদ যায়নি কিছুই। তবে গভীর সমুদ্রের প্রাণীদের সম্পর্কে এখনও প্রচুর তথ্য অজানা থাকায় তাদের অবস্থা নিয়ে একেবারেই অন্ধকারে বিজ্ঞানীরা।
এই সমস্ত অমেরুদণ্ডীদের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত মানবজাতির অস্তিত্ব। ফলে তাদের অস্তিত্বরক্ষার জন্যই অত্যন্ত জরুরি এই অমেরুদণ্ডীদের সংরক্ষণ। অর্থনৈতিক ভাবেও এই প্রাণীরা অত্যন্ত উপকারী। একটি সমীক্ষা অনুযায়ী ২০০৭ সালে শুধুমাত্র পরাগমিলন ঘটিয়েই মৌমাছিরা মার্কিন কোষাগারে জমা দিয়েছে প্রায় ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড। কাজেই এই বিপন্নতা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকেও বিপন্ন করে তুলবে বলে আশঙ্কা।
|
• ৪০ বছর পর মণিপুরে ফিরল ক্ষুদ্রতম হাঁস |
বছর চল্লিশ পর ফের মণিপুরে ফিরল বিশ্বের ক্ষুদ্রতম জলচর পরিযায়ী পাখি। সম্প্রতি মণিপুরের কাংলা এলাকার সরোবরে ছোট্ট হাঁসগুলির দেখা মিলেছে। এই খবর নিশ্চিত হওয়ার পর উৎফুল্ল মণিপুর বনবিভাগ ও পক্ষীপ্রেমীরা। বনকর্তা ও পরিবেশবিদ সামুংগৌ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে কাংলা এলাকায় সমীক্ষা চালান। তিনি দেখেন ‘কটন পিগমি গুজ’-এর ঝাঁক জলাশয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, ডিমও পাড়ছে। তবে পাখিগুলির পরিচয় নিশ্চিত করতে তিনি তাদের ছবি তুলে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যপ্রাণী বিভাগের বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠান। ওয়াইল্ডলাইফ ইন্টারন্যাশনালের গ্লোবাল স্পেশিস-এর প্রোগ্রাম অফিসার অ্যান্ডি সিমেস জানিয়েছেন, “পাখিগুলি সত্যিই ‘কটন পিগমি গুজ’। যাদের বৈজ্ঞানিক নাম ‘নেট্টাপুস কোরোমানডেলিয়ানাস’। স্থানীয়রা এই ছোট হাঁসগুলিকে ‘পেটাকোট’ বলে ডাকে।’’ |
|
এই ছোট্ট হাঁসগুলির ওজন একশো থেকে দেড়শো গ্রাম। সাধারণত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর অবধি এদের ডিম পাড়ার সময়। গাছের কোটরে ৮ থেকে ১৫টি ডিম পাড়ে কটন পিগমি। দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ায় এদের দেখা মেলে। তবে অস্ট্রেলিয়ায় এদের সংখ্যা একেবারেই কমে গিয়েছে। মণিপুরি লোককথা অনুযায়ী, পেটাকোটের ঝাঁক আসা মানেই বন্যা আসা। এই বছর বর্ষায় বন্যা দেখেছে রাজ্যবাসী। পেটাকোটের দর্শনে ফের অকাল বন্যার আশঙ্কা শুরু হয়েছে। আগে পেটাকোটদের ডিম পাড়ার সুবিধার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা গাছের ডালে মাটির হাঁড়ি ঝুলিয়ে রাখতেন। এ দিকে সামুংগৌ জানান, “৪০ বছর আগে, শেষ বার পেটাকোটের ঝাঁক মণিপুরে এসেছিল। তার পর থেকে, কেবল এরাই নয়, অন্য বেশ কিছু প্রজাতির পরিযায়ী পাখিও মণিপুরকে এড়িয়ে চলছিল। কাংলার জলাশয়ে সম্প্রতি এই পাখির দেখা মেলায় জলাশয়ের আশপাশের গাছ কাটার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।” |
পার্বণ |
• লক্ষ্মী লাভের লক্ষ্যে বটেশ্বর মেলা |
উত্তরপ্রদেশের বিখ্যাত বাণিজ্য মেলাগুলির মধ্যে অন্যতম বটেশ্বর মেলা। আগ্রা থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে যমুনা নদীর তীরে এই মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি বছর কার্তিক মাসের ষষ্ঠী থেকে অগ্রহায়ণ মাসের পঞ্চমী অবধি এই মেলাটি জাঁকজমকের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়। মহাদেব শিব এই মেলায় বটেশ্বর হিসেবে পূজিত হন। এখানে বটেশ্বরের মন্দিরকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মের ১০৮টি বিভিন্ন দেবদেবীর মন্দির। এই সময় শিবের সঙ্গে ওই দেবদেবীদেরও পুজো হয়। মূলত ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এই মেলাটি আয়োজিত হলেও বর্তমানে বাণিজ্যিক আকর্ষণেই এখানে সমবেত হন কয়েক হাজার মানুষ। ২১ দিন ধরে এই মেলা চলে। মেলায় প্রথম দু’ সপ্তাহ ধরে চলে গবাদি পশু বেচাকেনা। গরু, উট, গাধা, ঘোড়া ইত্যাদি হাজারে হাজারে বিক্রিবাটা হয় এই মেলায়। মেলার শেষ সপ্তাহে নানা ধরনের ঘরোয়া জিনিসপত্র, আসবাব, প্রসাধনী দ্রব্য, রান্নার মশলা, হাতে বোনা জামা কাপড়, স্থানীয় কুটীর ও হস্তশিল্পের পসরা নিয়ে দোকানদাররা বসেন। কথায় বলে ‘বাণিজ্যে বসতি লক্ষ্মী’। আর সেই লক্ষ্মী লাভের লক্ষ্যে বছরের পর বছর অক্টোবর-নভেম্বর মাসে যমুনা নদীর তীরে বটেশ্বর মেলা আয়োজিত হয়।
|
• অমানবিকতার বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ— ঝিরি মেলা |
উত্তর ভারতের একটি বিখ্যাত গ্রামীণ মেলা— ঝিরি, মূলত একটি কৃষিপ্রধান মেলা। প্রতি বছর অক্টোবর-নভেম্বর মাসে জম্মু থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরের সামা চক ঝিরিকে (স্থানীয় এক প্রবাদপ্রতিম চাষির সমাধি) কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হয়। এ মেলার ইতিহাস তার ঐতিহ্যকে আরও গৌরবান্বিত করেছে। মেলার আড়ালে বাবা জিতু নামে পরিচিত সত্ ও পরিশ্রমী এক কৃষকের কষ্ট, আত্মত্যাগ এবং প্রতারিত হওয়ার করুণ কাহিনি লুকিয়ে আছে। লোক মুখে শোনা যায়— জিতু নামের একজন হতদরিদ্র ও সত্ কৃষক ছিলেন। তার দিনরাতের পরিশ্রমে তৈরি খেতের ফসল প্রায় পুরোটাই জোর করে এলাকার জমিদার লুঠ করে নিয়ে যায়। অনাহারে মৃত্যু হয় বৃদ্ধ সেই কৃষকের। মহাজনের নিষ্ঠুরতা ও অমানবিকতার বিরুদ্ধে আজও যেন এক নিরব প্রতিবাদের প্রতীক এই মেলা।
স্থানীয় অসংখ্য চাষি ও খেত মজুর-সহ দূর দূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ ভিড় জমায় এই মেলায় তাঁর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে। ‘বাবে-দা তালাব’-এ পুণ্যস্নান করাটাও এখানে আসার আরও একটা কারণ। স্থানীয় মানুষের হাতে বানানো বিভিন্ন মাটির পাত্র, ঘর সাজানোর জিনিস, খেলনা তো বটেই, বাবা জিতুর কাহিনি সম্পর্কে নানা বইও এই মেলায় পাওয়া যায়।
|
• পশু মেলার অন্য নাম কুন্দ্রি মেলা |
কুন্দ্রি মেলা ঝাড়খণ্ডের অন্যতম জনপ্রিয় মেলা। এটি মূলত পশু মেলা। বিভিন্ন গবাদি পশুর বেচাকেনাই এই মেলার মুখ্য উদ্দেশ্য। কার্তিক মাসের পূর্ণিমা থেকে শুরু হওয়া এই মেলা স্বাধীনতার বহু আগে ১৯৩০ সাল থেকেই এই অঞ্চলে হয়ে আসছে। । ঝাড়খণ্ড তার নিজস্ব সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত। তবে কুন্দ্রি মেলা তার বাণিজ্যিক গুরুত্বের জন্যও বিখ্যাত। এর পাশাপাশি কোলহাইয়া মেলা, চাতরা মেলা, লাওয়ালং-এর মেলাগুলিও একই রকম ভাবে পরিচিত এবং জনপ্রিয়। কুন্দ্রি মেলায় গবাদি পশু যেমন, গরু, ছাগল, মোষ ইত্যাদি হাজারে হাজারে বেচাকেনা হয়। এখানে বিভিন্ন জাতি ও উপজাতিদের ভিড়ও চোখে পড়ার মতো, যারা মূলত তাদের হাতে বানানো নানা ঘরোয়া জিনিসপত্র, খাদ্য সামগ্রির পসরা নিয়ে এই কুন্দ্রি মেলায় ভিড় জমায়।
|
• শেয়াল-শকুন পরব |
অন্য লোকায়ত পরবের মতোই হারিয়ে যাচ্ছে শেয়াল-শকুন পরব। নিয়ম অনুযায়ী, জিতাষ্টমী জিমূতবাহনের পুজোর দিন সন্ধ্যায় শিয়াল-শকুনের মাটির মূর্তি বাড়িতে রেখে রাঢ়বাংলার গৃহস্থ এই পরব পালন করে। গোপালগঞ্জের মৃৎশিল্পী প্রিয়ব্রত সূত্রধর বলেন, “শিয়াল-শকুনের মূর্তি কেনার জন্য আগের থেকে ক্রেতা অনেক কমে গিয়েছে। লোকায়ত পরব বলে এখনও তৈরি করি।” ইতিহাসবিদ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত বলেন, “শেয়াল-শকুন অমঙ্গলের প্রতীক। রাতভর ওই মূর্তি বাড়ির উঠোনে রেখে পরের দিন সকালে বিসর্জন দেওয়া হয়। এই লোক পরব এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে।” তাঁর মতে, অপসংস্কৃতির প্রভাবেই বাংলার বহু লোক পরব হারিয়ে যাচ্ছে।
|
পর্যটন কেন্দ্র |
• ঐতিহাসিক মধুপুর ধাম |
কোচবিহার থেকে সড়ক পথে পুণ্ডিবাড়ি যেতে পড়বে মধুপুর মোড়। এই মোড় থেকে দু’ কিলোমিটার পথ পেরোলেই ঐতিহাসিক মধুপুর ধাম। কোচবিহারের রাজা নরনারায়ণ প্রথমে এখানে মন্দির স্থাপন করেন। মন্দিরটি প্রথমে খড়ের ছিল। পরবর্তীতে মন্দির সংস্কারের কাজ করেন মহারাজ বীরনারায়ণ। মধুপুর ধামের এখন যে মন্দিরটিতে দর্শনার্থীরা আসেন, সেটি অসমের ভক্তগণের টাকায় তৈরি হয়। ১৯৬৪ সালে এই মন্দিরের উদ্বোধন করেন মহারাজ জগদ্বীপেন্দ্রনারায়ণ। মন্দিরটি গড়ে ওঠার পিছনে অন্যতম কারণ হল, এখানে অসমীয়া মনীষী শংকরদেব এখানে দেহ রেখেছেন। তাই মধুপুর ধাম অসমের জনগণের কাছে পুণ্যক্ষেত্র। বৈশাখ মানে বিহু উৎসব ছাড়াও ভাদ্র মাসে শংকরদেব ও মাধব দেবের প্রয়াণ দিবস পালন করা হয়। উল্লেখযোগ্য উৎসব হল ‘মাঘোৎসব’। মাঘ মাসের শুক্লাপঞ্চমীতে এই উৎসব হয়। ১১ দিনের এই উৎসব উপলক্ষে বসে মেলাও। উত্তরবঙ্গ-সহ অসম থেকে আসেন অগণিত মানুষ। |
• নয়া বন-পথে ঢোকা যাবে জলদাপাড়ায় |
জলদাপাড়া ঢোকার নতুন পথ তৈরি করছে বন দফতর। এ বার থেকে শালকুমারহাট দিয়েই জলদাপাড়া জঙ্গলে ঢোকার অনুমতি পাবেন পর্যটকরা। তাঁরা ‘কার সাফারি’ও করতে পারবেন এই পথে। এত দিন পর্যন্ত জলদাপাড়ার জঙ্গলে পযর্টকদের শুধুমাত্র মাদারিহাট এলাকা দিয়েই প্রবেশের অনুমতি ছিল। শালকুমার হাটের রাস্তাটি এর আগে সাধারণের ব্যবহারের জন্য চালু করেনি বন দফতর। শীতের মরসুম শুরুর মুখেই শালকুমারহাটের পশ্চিম জলদাপাড়া রেঞ্জ দিয়ে জঙ্গলে কার সাফারির অনুমতি মিলবে। মাদারিহাট থেকে প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে তিন দফায় মোট ৩০টি গাড়ির কার সাফারি অনুমতি রয়েছে। এখানকার হরিণডাঙা টাওয়ার ও জলদাপাড়া টাওয়ারে যেতে হয় পর্যটকদের। ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়েও হলং বাংলো পর্যন্ত যাওয়ার অনুমতি রয়েছে। এ বার থেকে শালকুমারহাট এলাকার পাশেও পশ্চিম জলদপাড়া রেঞ্জে পর্যটকদের প্রবেশের জন্য নতুন কাউন্টার খোলা হবে। ডিএফও রাজেন্দ্র জাখর বলেন, “ডিসেম্বরে রাস্তাটি খোলা হবে বলে ঠিক হয়েছে।”
|
• ঘুরতে গিয়ে বাঘ দেখার সম্ভাবনা বাড়ল বক্সায় |
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ১৯টি বাঘের সন্ধান মিলেছে। বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন সম্প্রতি রাজাভাতখাওয়ায় ‘টাইগার কনজার্ভেশন ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের’ এক সভায় ওই তথ্য জানান। তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক কালে সমীক্ষার কাজের সময় পাওয়া বাঘের বিষ্ঠা পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে বক্সা জঙ্গলে ১৫টি পুরুষ এবং ৪টি স্ত্রী বাঘ রয়েছে।” বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জানুয়ারি মাসে যে বাঘ সুমারি হয় সেখানে ১৯টি বাঘের সন্ধান মেলে। বনকর্তাদের আশা ডিসেম্বর মাসের সুমারিতে আরও নতুন শাবকের সন্ধান মিলতে পারে। বনমন্ত্রী আরও জানান, বাঘ সংরক্ষণের পাশাপাশি বনবস্তিবাসীদের উন্নয়নের বিষয়েও নজর দেওয়া হবে। ঠিক হয়েছে বক্সা জঙ্গল এলাকার নদী থেকে বোল্ডার উত্তোলন, জঙ্গলে ভ্রমণের প্রবেশ মূল্য ও কাঠ নিলাম থেকে যে অর্থ পাওয়া যাবে সেটা বনবস্তিবাসীদের উন্নয়ন ও জঙ্গল সংরক্ষণের কাজে ব্যয় করা হবে। অন্য দিকে বন দফতর জানিয়েছে, পযর্টকদের জন্য রায়মাটাং ও ভুটানঘাট খুলে দেওয়া হবে। পাশাপাশি, বক্সার জঙ্গলে যে চারটি নতুন নজর মিনার তৈরির কাজ চলছে সেগুলি ডিসেম্বর নাগাদ খুলে দেওয়া হবে। |
পরিষেবা |
• বার্মিংহ্যাম থেকে বাসে ‘লিটল বার্মিংহ্যাম’ |
এ বার বাসে সরাসরি লন্ডনের বার্মিংহ্যাম থেকে যাওয়া যাবে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মিরপুরে, যাকে ‘লিটল বার্মিংহ্যাম’ বলা হয়। এই নতুন রুটে বাসটি ইরান-সহ ৭টি দেশের মধ্য দিয়ে প্রায় ৪,০০০ মাইল পথ অতিক্রম করবে। যাত্রাপথে সময় লাগবে ১২ দিন। টিকিটের দাম মাত্র ১৩০ গ্রেট ব্রিটেন পাউন্ড। এটা বার্মিংহ্যামবাসী তথা কাশ্মীরবাসীদের কাছে সুখবর, কারণ বার্মিংহ্যামে কাশ্মীর থেকে যাওয়া মানুষের সংখ্যাই সব থেকে বেশি। এত কম খরচায় ‘ঘরে’ ফেরার সুযোগ তাঁদের কাছে নিঃসন্দেহে খুবই আনন্দের! তবে কর্তৃপক্ষের কাছে এখন সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে যাত্রী সুরক্ষার বিষয়টি। কারণ বাসটি পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তের কোয়েটা শহরেও দাঁড়াবে, যেখানে এখনও তালিবানি ‘শাসনের’ প্রভাব রয়েছে। তার সঙ্গে রয়েছে যথেষ্ট জঙ্গি কার্যকলাপের আশঙ্কা। সব মিলিয়ে উদ্যোক্তারা বেশ উদ্বিগ্নেই রয়েছেন।
|
• ভারত বাংলাদেশের মধ্যে নতুন রেলপথ |
কেন্দ্রীয় সরকারের সবুজ সঙ্কেতে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে তৈরি হচ্ছে ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন এক রেলপথ। রেললাইন বসানোর কাজ করছে দ্য ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। কাজ শেষ করতে খরচ হবে প্রায় ২৬০ কোটি টাকা। রেলপথটি বিস্তৃত থাকবে আগরতলা থেকে বাংলাদেশের আখাউরা পর্যন্ত। যার মধ্যে ভারতে বসেছে ৫ কিলোমিটার এবং বাংলাদেশে বসছে ১০ কিলোমিটার রেলপথ। এর প্রধান উদ্দেশ্য হল ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিকে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বন্দরের সঙ্গে যুক্ত করা। কাজ শেষ করার নির্ধারিত সময় ২০১৪ সাল।
|
• দেশের দীর্ঘতম রেলওয়ে টানেল |
এ বছরের ডিসেম্বর মাসে চালু হতে চলেছে দেশের দীর্ঘতম রেলওয়ে টানেল, যা বহির্বিশ্বের সঙ্গে কাশ্মীর উপত্যকাকে রেলপথের মাধ্যমে জুড়বে। বানিহাল থেকে বারামুলা পর্যন্ত ৩৪৫ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যেই পড়বে এই টানেল। কাজ সম্পূর্ণ করতে খরচ হচ্ছে প্রায় ১৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এই ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলের মাধ্যমে পীরপঞ্জাল পর্বতমালার মধ্যে বানিহাল ও কাজিগুণ্ডকে জুড়বে। যার ফলে এই দুই জায়গার দূরত্ব কমে ১৬ কিলোমিটারে দাঁড়াবে। টানেলের কাজ ১০.৪ কিলোমিটার শেষ হয়েছে, যার সঙ্গে রয়েছে ৮ ফুট চওড়া রাস্তাও। রেলওয়ে সূত্রের খবর বাকি কাজ শেষ হতে প্রায় এক মাস মতো সময় লাগবে।
|
• ভার্জিন অ্যাটলান্টিকের নতুন উড়ান |
লন্ডন গ্যাটউইক থেকে মেক্সিকোর ক্যানকুন— নতুন উড়ান চালু করল ভার্জিন অ্যাটলান্টিক। সংস্থার কর্ণধার স্যর রিচার্ড ব্র্যানসন বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে প্রথম উড়ানে ক্যানকুনে যান। সেখানে তাঁকে প্রথাগত মেক্সিকান পোশাকেই দেখা যায়। এ ছাড়াও ছিলেন আলেকজান্দ্রা ব্রুক, লেই ফ্রান্সিস, ড্যারেন ব্রাউন, ক্লিও রোকোস প্রমুখ। সংস্থার আশা উড়ানটি বাণিজ্যিক ভাবে যথেষ্ট সফল হবে।
|
• জগদ্ধাত্রী পুজোয় চন্দননগর ঘোরাবে সিটিসির বাস |
চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো দেখার জন্য এ বার কলকাতা থেকে বিশেষ বাস চালাবে কলকাতা ট্রাম কোম্পানি (সিটিসি)। চন্দননগর পুরসভার সহযোগিতায় যাত্রীদের সেখানকার বড় বড় জগদ্ধাত্রী পুজোগুলি ঘুরিয়ে দেখানো হবে। ২০ থেকে ২২ নভেম্বর পুজোর সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমী তিন দিন এসপ্ল্যানেড থেকে সকাল আটটায় একটি ও বেলা দু’টোয় তিনটি বাস দর্শনার্থীদের নিয়ে চন্দননগর যাবে। বিকেলের একটি বাস হবে শীততাপনিয়ন্ত্রিত। সকালের বাসে ভাড়া মাথাপিছু ৪৫০ টাকা। বিকেলের শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বাসে ভাড়া ৯০০ টাকা। অন্য দু’টিতে ৫০০ টাকা। সকালের ও বিকেলের বাসের যাত্রীদের মধ্যাহ্নভোজ ও নৈশভোজও দেওয়া হবে।
|
|
|
|