১ আষাঢ় ১৪১৯ শুক্রবার ১৫ জুন ২০১২


নিরামিষ নট আউট

একই পদ এক এক জনের হাতে এক এক রকম। শুধু যে হাত বদলের কারণে স্বাদ বদল হয়, তা ঠিক নয়, পাল্টায় রেসিপির কারণেও।
উপকরণ ও প্রণালীতে সামান্য ‘চেঞ্জ’ মানেই রান্নাটাও গেল কিছুটা বদলে। একই দই ইলিশ, কুমড়োর ছক্কা অথচ রাঙা পিসিমা আর মেজ মাসির
দু’ বাড়িতে দু’রকম স্বাদ। আবার কখনও রান্নার প্রতি গভীর ‘প্যাশন’ থেকেও নতুন নতুন ‘মেনু’ উদ্ভাবিত হয়। গৃহিনীর কাছে রান্নাঘরটা আসলে এক মজার
‘ল্যাবরেটরি’। যদিও পুরুষরাও এই ব্যাপারে এক্কেবারে পিছিয়ে নেই। রান্না সংক্রান্ত আপনার সমস্ত ‘এক্সপেরিমেন্ট’ ‘শেয়ার’ করার জন্য ‘আপনার রান্নাঘর’।


  নেভাডা, রেনো থেকে শ্রীমতি সান্ত্বশ্রী চক্রবর্তী
দই পাঁপড়
উপকরণ
(২ জনের জন্য)
হিং দেওয়া মশলা পাঁপড় ২ টেবল-চামচ টক দই ১ চা-চামচ রসুন বাটা
২ চা-চামচ কসৌরি মেথি শুকনো লঙ্কা গোটা ২টো শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো স্বাদমতো



প্রণালী
প্রথমে পাঁপড় ভেজে তুলে রাখতে হবে।
কড়ায় অল্প তেল দিয়ে রসুন ও গোটা শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিতে হবে।
ফুটে উঠলে দই অল্প জলে ভাল করে ফেটিয়ে ঢালতে হবে। ফেটানোর সময়ে এক চিমটে বেসন দিলে দই কড়াইতে কেটে যাবে না।
দই ফুটতে শুরু করলে পাঁপড়গুলো ভেঙে তার মধ্যে দিয়ে দিন।
নুন-মিষ্টি-লঙ্কাগুঁড়ো যোগ করতে হবে।
সব শেষে নামানোর আগে কসৌরি মেথি ছড়িয়ে দিন।

ছোটবেলা ও পড়াশোনা সবই কলকাতায়। স্বামীর কর্মসূত্রে এখন মার্কিন প্রদেশে বসবাস। সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা, বরাবর-ই বই তাই ভালবাসার বিষয়। রান্নায় উৎসাহটা যদিও নতুন। নিজে হাতে রান্নাঘর সামলাতে গিয়ে এখন ধীরেধীরে রান্নার প্রতি ভাল লাগাটা তৈরি হচ্ছে। নতুন নতুন ডিশ রান্না করতে বেশ ভাল লাগে।

টরেন্টো, কানাডা থেকে শ্রীমতি সঞ্চিতা মহান্তি
কলমি শাকের তরকারি   সরষে পুঁই

উপকরণ

কলমি শাক আলু বেগুন
নুন হলুদ তেল পাঁচফোড়ন
তেজপাতা পেঁয়াজ কুচি
কাঁচালঙ্কা জিরেগুঁড়ো


প্রণালী
কলমি শাক প্রথমে ছোট
ছোট করে কেটে ধুয়ে নিতে হবে।
এ বারে অল্প নুন দিয়ে সেদ্ধ করে জল ঝরিয়ে নিন।
আলু আর বেগুন ছোট করে কেটে
নুন হলুদ মাখিয়ে হাল্কা করে ভেজে নিন।
এ বারে কড়াইতে অল্প তেল দিতে হবে।
তেল গরম হলে ১/২ টেবল-চামচ পাঁচফোড়ন দিন।
এ ক্ষেত্রে তেজপাতাও দেওয়া যেতে পারে।
তার পর পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। চাইলে রসুন কুচিও দিতে পারেন।
এর পর ২-৩টি কাঁচালঙ্কা চিরে দিতে হবে।
অল্প ভাজা হলে ২ টেবল-চামচ জিরেগুঁড়ো দিন।
সব মশলা ভাল করে নেড়ে নিয়ে শাক সেদ্ধ
এবং ভাজা আলু-বেগুন দিয়ে দিন।
পরিমাণ মত নুন দিন।
এ বার ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে অর্দ্ধেক কাপ জল দিয়ে ঢাকা দিয়ে রাখুন।
সব সেদ্ধ হয়ে এলে ভাল করে নেড়েচেড়ে মিশিয়ে নিতে হবে।
কড়াই থেকে নামানোর আগে ভাজা জিরেগুঁড়ো ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে।
সাদা ভাতের সঙ্গে এই কলমি শাকের তরকারি খুবই ভাল লাগবে।



উপকরণ

কুচানো পুঁই শাক সরু ও লম্বা করে কাটা ২টি আলু
কালো জিরে ১/২ চা-চামচ একটা কুচানো পেঁয়াজ
কাঁচালঙ্কা ২টি সরষের তেল সরষে বাটা ১ চা-চামচ
হলুদ অল্প নুন পরিমাণ মতো


প্রণালী
প্রথমে শাক ধুয়ে নিয়ে জল ঝরিয়ে নিতে হবে।
শাকের ডাঁটাগুলো সরু করে কেটে রাখুন।
কড়াইতে তেল গরম করে শাক দিন।
পরিমাণ মতো নুন দিয়ে নেড়েচেড়ে ঢাকা দিয়ে দিন।
পুঁইয়ের জলেই শাক সেদ্ধ হয়ে যাবে।
জল শুকিয়ে গেলে ও শাক সেদ্ধ হয়ে গেলে ভাল করে নাড়তে হবে।

শাকটা বেশ তেলতেলে দেখতে হলে উঠিয়ে অন্য একটা পাত্রে রাখুন।
এ বার কড়াইতে তেল গরম করে কালো জিরে দিতে হবে।
তার পর পেঁয়াজ হাল্কা করে ভাজার পর কাঁচালঙ্কা দিন।
এ বারে সরু করে কাটা আলু ও শাকের ডাঁটা দিতে হবে।
অল্প নুন ও হলুদ দিন।
মিশ্রণটা যখন সেদ্ধ হয়ে যাবে, তখন সেদ্ধ শাক দিয়ে দিন।
নেড়েচেড়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন।
অর্দ্ধেক কাপ জল মেশাতে হবে।
এ বারে সরষে বাটা দিয়ে ১-২ মিনিট ঢাকা দিয়ে রাখুন।
জল শুকিয়ে শাকটা মাখোমাখো হয়ে এলে
সামান্য সরষের তেল ছড়িয়ে নামিয়ে নিন।
ভাতের সঙ্গে এই সরষে পুঁই খুব ভাল লাগে।

পূর্ব মেদিনীপুরের মেয়ে। উদ্ভিদবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করলেও সাংবাদিকতা-উপস্থাপনা বিষয়ে এবং মাল্টিমিডিয়া নিয়েও করেছেন পড়াশোনা। তার পর পেশায় গ্রাফিক ডিজাইনার। স্বামীর রিসার্চের সুবাদে টরন্টোয় আসা। নানা ধরনের রান্না আর এক্সপেরিমেন্ট করাটা একটা নেশা। অবসর সময় কাটে ছবি এঁকে ও নানা ধরনের বই পড়ে। তবে গান এবং কবিতাও প্রাণ। ছবি তুলতেও ভাল লাগে।

ক্যালিফোর্নিয়া থেকে শ্রীমতি কথাকলি দাস ভৌমিক
মনোহারি মুগ ডাল

উপকরণ

এক কাপ মুগ ডাল ১/৪ চা-চামচ হলুদগুঁড়ো অল্প গোটা জিরে অর্ধেক টোম্যাটো কুচানো ১/৪ চা-চামচ আদা বাটা
১/৪ কাপ কড়াইশুঁটি সাদা তেল এক টেবল-চামচ নুন স্বাদ মতো চিনি স্বাদ মতো



প্রণালী
প্রথমে মুগ ডাল ভেজে নিতে হবে।
তার পর সেটাকে ধুয়ে নিয়ে হলুদ আর নুন দিয়ে সেদ্ধ করতে হবে।
প্যান কিংবা কড়াইতে সাদা তেল দিয়ে তার মধ্যে প্রথমে জিরে ফোড়ন
দিয়ে পরে কড়াইশুঁটি আর টোম্যাটো এক সঙ্গে দিয়ে কিছু ক্ষণ ভাজতে হবে।
যখন টোম্যাটো অনেকটা সেদ্ধ হয়ে আসবে তখন একটু নুন দিয়ে সেদ্ধ করে রাখা ডালটা মিশিয়ে দিন।
এর মধ্যে এ বার আদা বাটাটা দিয়ে ভাল করে নাড়তে হবে।
মুগ ডাল একটু ভারী বলে অনেক সময় কড়াইয়ের নীচের দিকে ধরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ডাল ভাল করে ফুটে উঠলে চিনি দিয়ে দিন।
এর পর চিনিটা ভাল করে মিশিয়ে নিয়েই ডাল নামিয়ে ফেলতে হবে।
শীতকালে দুপুর কিংবা রাতের মেনুতে ডালের এই পদটা বেশ লোভনীয় হতে পারে।

কলকাতার নাকতলায় বাড়ি হলেও, বিবাহসূত্রে এখন বাস লস এঞ্জেলসে। কলকাতা ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যথাক্রমে বি কম ও জনসংযোগ নিয়ে পড়াশোনা শেষ করে সংবাদপত্রে লেখালেখির কাজ। বাবার বদলির চাকরির জন্য ছোট থেকেই বিভিন্ন জায়গার সঙ্গে পরিচয়। মনের মতো রান্না করা আর ইচ্ছে মতো কলম চালানোটা ঘুরে বেড়ানোর অঙ্গও বটে।



আপনারাও পাঠাতে পারেন নতুন পুরনো ভিন্ন স্বাদের নানা রেসিপি, ছবি-সহ, নীচের ঠিকানায়
হাওয়াবদল, আপনার রান্নাঘর
আনন্দবাজার পত্রিকা, ইন্টারনেট সংস্করণ
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট
কলকাতা ৭০০০০১

ই-মেল করুন haoabadal@abp.in অথবা haoabadal@gmail.com

সংক্ষিপ্ত পরিচিতির সঙ্গে আপনার ছবি পাঠানো বাধ্যতামূলক।


রোজের আনন্দবাজার এ বারের সংখ্যা সংবাদের হাওয়াবদল আপনার রান্নাঘর স্বাদবদল চিঠি পুরনো সংস্করণ