|
|
‘ভোট ফর’: নির্বাচন-দ্বন্দ্বের দামামা-পর্ব
(বিশেষ প্রতিনিধি) |
|
|
|
|
২২শে গেছে মনোনয়নপত্র পরীক্ষার তথা কর্মীদের মনঃস্থির করবার শেষ দিন। যাঁর যা সন্দেহ, দ্বিধা বা জড়তা ছিল সেদিনই সব মিটে গেছে। ফলে, ২৩শে থেকে নবীন উদ্যোগে শুরু হয়েছে কলকাতার ভোটযুদ্ধের বিখ্যাত দামামা-পর্ব,পোস্টারের লড়াই। কালকের শহর দেখে জানা গেল, এতদিনে সত্যিই বাঁশী বুঝি সচল,আগমনী শুরু হল। আসল যুদ্ধের দিনঐ এল।
‘বিজ্ঞাপন মারিওনা’ বিজ্ঞপ্তি তুচ্ছ। পোষ্টারে পোষ্টারে গোটা শহরের দেওয়াল ছয়লাপ। ধনীর ঝকঝকে কুঠি গরীবের বসতি, হেন ফাঁকা দেওয়াল নেই যেখানে ‘ভোট ফর..’ নেই। কি গালি, কি বড় রাস্তা,এমন কোন জনপথ নেই গলায় যার কমসেকম তিন নরি চাটাইয়ের মালা নেই। এমনকি ট্রাফিক দ্বীপের দেহেও উজ্জ্বল হরফের পাদপ্রদীপ।
|

বামপন্থীদের কংগ্রেসবিরোধী প্রচারযুদ্ধের একটি রূপ। ফটো: আনন্দবাজার |
পুরানো খবরের কাগজ, কাগজের ছেঁড়া পাতা, নগদ দামে কেনা রঙ্গীন পোষ্টার পেপাররকমারী আকারের রং বেরঙের পোষ্টার, রকমারী তাদের হস্তাক্ষর, মুদ্রিত হরপ, রকমারী বক্তব্য,ভাষা। বাংলা, হিন্দী, ইংরাজী, উর্দু,সাধু, চলতি, নাটকীয়, সাদামাঠাএমন কোন ভাষা নেই যার পরীক্ষা নিরীক্ষা সেখানে না হয়েছে। আলতা থেকে আলকাতরা এমন কোন রঙ নেই যা সেখানে ব্যবহার করা হয়েছে। এক জায়গায় দেখা গেল পোষ্টার পড়েছে চৈনিক ভাষায়। অন্যত্র বহু দেওয়ালে দেখা গেছে, ভোট চাইছেন স্বয়ং নেতাজী, শ্যামাপ্রসাদ। নেহেরুও নিশ্চয় এতক্ষণে এলেন বোধহয়! তবে আশার কথা এই যে, এখন অবধি দেওয়ালে তাঁদের কারও সহাবস্থানে আপত্তি নেই। সিনেমা, থিয়েটার, স্কুল-কাগজে হেনস্থা হচ্ছে সন্দেহ নেই, কিন্তু যতদূর দেখেছি ভোটের পোষ্টার কোথাও অন্যকে অনধিকারী প্রমাণের চেষ্টায় নেই। বরং একজায়গায় চোখে পড়ল একই কাগজে দুই বিরোধী দলের দুজনের নাম। একজন লোকসভায় প্রার্থী, অন্যজন বিধানসভার। সম্ভবত, সেটি দলীয় নয়,‘নিরপেক্ষ’ কোন নির্বাচনমন্ডলীর সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত। কেননা, তাতে অনুরোধ ছিল,দল নয়, যোগ্য লোককে পাঠান।’
যোগ্য কে?যোগ্য কারা?তা নিয়েও পোষ্টারে পোষ্টারে এখন বিষম লড়াই। এক ছবি হাজার হরফের কথা বলে। সুতরাং, ভাষায় নয়,কার্টুনে এক দলের বক্তব্য‘এই দেখ, ওরা কিছু নয়।’ অন্য দলগ্র্যাফে চার্টে এবং ছবিতে বোঝাচ্ছে‘কিছু নয় তারাই, যারা এর পরও বলতে চায় আমরা কিছু নয়।’ মনে মনে সিদ্ধান্ত যাই হোক, যেখানেই ছবি আপাতত সেখানেই পথচারী। চিত্তরঞ্জন এভিন্যুতে দেখা গেল তারা একটা পুনর্মুদিত কার্টুনে ঘিরে রোদ পোহাচ্ছে। দেখে মনে হল,ভোটের বাজার এবার বোধহয় ছবিতেই মাৎ করবে। |
 |
 |
প্রচারযুদ্ধে কেউই কম যায় না—
কলকাতার রাজপথে এমন বহু দৃশ্যই
চোখে পড়ে। ফটো: আনন্দবাজার। |
কলকাতার রাজপথে ল্যাম্পপোস্টের
মাথায় কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রতীক।
ফটো:আনন্দবাজার। |
|
রীতিমত যুদ্ধ। সুতরাং বলা নিষ্প্রয়োজন, ব্যাপারটা শুধু তুলি কলমের মামলা নয়। ফলে, ইতিমধ্যেই পাড়ায় পাড়ায় কারুকর্মীদেরও ডাক পড়েছে। ওঁরা কাগজে টিনে, বেতে, বাঁশে, কার্ডবোর্ডে, কাপড়ে, তুলাতেনির্বাচনী প্রতীক বানাচ্ছেন। কোথাও রাস্তার মোড়ে বিজ্ঞাপনের ঢংয়ে নিওন জ্বলছে। কোথাও ট্রামের খামের মাথায় প্রকাণ্ড জোড়া বলদ ঝুলছে। নগর বলছে‘ভোট ফর....।’ |
ফিরে দেখা... |
|