|
|
পরলোকে জ্ঞানতপস্বী ডাঃ ক্ষিতীশচন্দ্র,
মণীষারক্ষেত্রে ভারতের অপূরণীয় ক্ষতি
|
|
|
|
ডঃ ক্ষিতীশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ডি-লিট্ করোনারি ত্রম্বোসিসে আক্রান্ত হইয়া ৮ই নভেম্বর বুধবার রাত্রি সাড়ে নয়টায় ৮, ভূপেন্দ্র বসু এভিন্যুস্থ তাঁহার নিজ বাস ভবনে ৬৭ বছর বয়সে পরলোকগমন করিয়াছেন।
ক্ষিতীশচন্দ্রের তিরোধানে কেবল ভারত আজ তাহার শিক্ষাজগৎ হইতে একটি বিশিষ্ট মণষ্যিকে হারাইল না, সঙ্গে সঙ্গে পাশ্চাত্য সাহিত্যও এই একনিষ্ঠ জ্ঞানতপস্বীর সাধনালব্ধ ফললাভ হইতে চিরদিনের জন্য বঞ্চিত হইল। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বিদ্যার সুপণ্ডিত, চিন্তাশীল দার্শনিক, প্রখ্যাত ভাষাতাত্ত্বিক ক্ষিতীশচন্দ্র তাঁহার মৌলিক গবেষণার জন্য ভারতে ও বিদেশে অকুণ্ঠ প্রশংসা অর্জন করিয়াছেন। সংস্কৃত সাহিত্য সম্বন্ধে গবেষণা করিয়া যে আলোকপাত করিয়াছেন, তা আধুনিক গবেষণাকারীদের চিন্তার ক্ষেত্রে প্রভূত সহায়ক হইবে।
দীর্ঘ ৩৫ বৎসরকাল ধরিয়া কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করিয়াছেন। পাণিনি ব্যাকরণ, বেদ, ভাষাতত্ত্বে তাঁহার জ্ঞানের গভীরতা ছাত্রসমাজকে অধ্যায়নে আকৃষ্ট করে। সংস্কৃত সাহিত্যের সকল বিভাগেই তাঁহার অগাধ পাণ্ডিত্য ছিল এবং কালিদাস, ভবভূতি, বাণ প্রভৃতি কবির কাব্য সম্বন্ধে তাঁহার যে আলোচনা তাহা সংস্কৃত সাহিত্যপাঠক ও সমালোচকদের ভৃয়সী প্রসংশা লাভ করিয়াছে। সংস্কৃত সাহিত্য বা দর্শন সম্বন্ধে কোন বিতর্ক দেখা দিলে প্রখ্যাত পণ্ডিতগণ তাহার সাধারণের জন্য তাঁহার শরণাপন্ন হইতে দ্বিধা করিতেন না। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ও নানা বিষয়ে তাঁহার সাহায্য লইতেন। তাঁহার তিরোধানে মণীষার ক্ষেত্রে ভারতের ক্ষতি অপূরণীয়।
তাঁহার রচিত গ্রন্থসমূহের মধ্যে ‘টেক্নিকাল টার্মস এ্যান্ড টেকনিক অব সংস্কৃত গ্রামার’ ‘মহাভাষ্যের’ অনুবাদ (আংশিক) সংস্কৃত-ইংরাজী অভিধান প্রভৃতি গ্রন্থ বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ‘ক্যালতাটা ওরিয়েন্টাল জার্নাল’ ও ‘সুরভারতীর’ তিনি প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এবং দীর্ঘদিন যাবৎ ওই দুই পত্রিকার সম্পাদনা করিয়াছেন। সংস্কৃত মাসিক পত্রিকা ‘মঞ্জুষার’ সম্পাদনার কাজ তিনি ১৬ বৎসর যাবৎ করিয়া গিয়াছেন। এই মাসিক পত্রিকাটি দেশ ও বিদেশের পণ্ডিতমহলে বিশেষ সমাদর লাভ করিয়াছে।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক পুত্র, এক কন্যা রাখিয়া গিয়াছেন।
|
|
|