|
|
লোকসংখ্যা পর্যালোচনা |
|
|
|
অতীতে পল্লীঅঞ্চল হইতে কাজের খোঁজে শ্রমিকেরা কলিকাতায় আসিয়া ভীড় করিত। যদিও শিল্প-কারখানা ও বন্দর কর্মসংস্থানের সহায়ক ছিল তথাপি সর্বত্রই শ্রমিকদের অত্যন্ত দারিদ্র্যের মধ্যে দিনযাপন করিতে হইত।
১৯৬১ সালের আদমসুমারিতে দেখা যায় যে, কলিকাতার লোকসংখ্যা বৃদ্ধির হার ভীষণভাবে কমিয়া গিয়াছে। সুতরাং পরিকল্পনা এমনভাবে রচনা করিতে হইবে যাহাতে এই ধরণটি বজায় থাকে। শিল্প যেগুলি গড়া হইবে সেগুলি যাহাতে শহরের সীমানার বাহিরে গড়া হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখিতে হইবে।
বর্তমানে কলিকাতায় ভীতিজনকভাবে লোকসংখ্যা বাড়িয়াছে। বার্মিংহামে একর প্রতি লোকসংখ্যা ২৫ জন, চিকাগোতে ১৩ জন। কলিকাতার একর প্রতি লোকসংখ্যা হইতেছে ১২৫ জন। ১৯৫৮ সালে কলিকাতার বস্তি অঞ্চল সম্পর্কে যে অনুসন্ধান কাজ চালানো হয় তাহাতে দেখা যায় যে, বস্তি অঞ্চলে ঘর পিছু চার জনের বাস। ইহা সত্ত্বেও এই ভীড় কমাইবার মত খালি জমি কলিকাতায় নাই। মেট্রোপলিটন অঞ্চলের মধ্যে কর্মসংস্থান কেন্দ্রগুলি ছড়াইয়া না দেওয়া পর্যন্ত নগরীর উন্নতিসাধনের কাজ শুরু করা সম্ভব হইবে না। অবশ্য ইহার অর্থ এই নয় যে, জনকল্যানের কাজগুলির উন্নয়নসাধনের কাজ এখনই শুরু করা যাইবে না।
মেট্রোপলিটন অঞ্চল বলিতে সরাসরি কলিকাতার অর্থনৈতিক প্রভাবাধীন অঞ্চল বুঝাইবে। এই অঞ্চলের আয়তন চার হাজার বর্গমাইল হইবে।
সকল প্রকার নিয়োগ হইতে যাহাতে সর্বাধিক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় সেইজন্য ঐ এলাকার অভ্যন্তরে সরকারী ও বেসরকারী কার্যকলাপের সমন্বয় সাধনের প্রযোজনে পরিকল্পনা রচনার প্রস্তাব হইয়াছে। ঐ অঞ্চলে উক্ত পরিকল্পনাকে সফল করার জন্য যে ধরণের প্রশাসনিক পরিকল্পনা প্রয়োজন ‘প্ল্যানিং অর্গানিজেশন’ তাহা বিশেষভাবে বিবেচনা করিতেছেন।
গত ১৯৫১ সালের জনগণনার রিপোর্ট অনুযায়ী উত্তরে ত্রিবেণী ও কল্যাণী হইতে দক্ষিণে বজবজ ও উলুবেড়িয়া পর্যন্ত বর্তমান শিল্পাঞ্চলটিতে একাধিক শহর সংলগ্ন রহিয়াছে। ঐ শহরগুলি অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন শাসন ব্যবস্থার অধীনে থাকিলেও প্রকৃতির দিক দিয়া তাহাদের মধ্যে বিশেষ ইতরবিশেষ নেই।
জমির উন্নয়ন, কর্মক্ষেত্র স্থাপন প্রভৃতি সম্পর্কে পরিকল্পনা রচিত হইবে। আবাসিক অঞ্চলগুলিতে বিদ্যালয়, গ্রন্থাগার ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রভৃতি স্থাপিত হইবে। ভারতীয় পরিকল্পনার মূল সামাজিক ও আর্থিক লক্ষ্য যাহাতে পূর্ণ হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখিয়াই পরিকল্পনা সংস্থা যত্নসহকারে ঐ স্তরে নির্দিষ্ট প্রকল্পসমূহ প্রস্তুত করিবেন।
ঐ প্রকল্পগুলি কলিকাতা মেট্রোপলিটন এলাকায় জীবনযাত্রার পরিবেশ পরিবর্তিত করিবে, জীবনধারণের মান উন্নীত করিবে এবং সকলের জন্য স্বাস্থ্য ও কল্যাণ আনিয়া দিবে বলিয়া আশা করা যায়।
সংস্থা আশা করেন যে, এই পরিকল্পনা অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকার ক্ষেত্রে দিশারীর কাজ করিবে।
|
|
|