রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়েই খুন করা হয়েছে জাফরুলকে। সোমবার এই দাবি করেন নিহত জাফরুলের স্ত্রী মালেকা বেওয়া। তিনি জানান, কয়েকজন এসে রাত ১০টা নাগাদ জাফরুলকে ডেকে নিয়ে যায়। তবে জাফরুল এরকম মাঝে মধ্যেই রাতে বেরিয়ে যেতেন বলে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী। রাত ১০টা পর্যন্ত বাড়িতে ছিলেন আমবাড়ির ঘটনায় নিহত জলিল মহম্মদও। এ কথা জানিয়েছেন তাঁর বন্ধু মহম্মদ জামিরুদ্দিনও। মঙ্গলবার মালেকা বলেন, “রবিবার রাতে সামাদ, মদন ও আরও কয়েকজন স্বামীকে ডেকে নিয়ে যায়। সকালে শুনি এই ঘটনা।” |
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর সামনে ক্ষোভ। সোমবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি। |
শুধু এই দু’জনই নয় বলরামপুর ও পাশের ভাণ্ডারিগছ এলাকার অনেকেই রাত বিরেতে বেরিয়ে যান বলে এলাকার বাসিন্দাদেরই একাংশ জানিয়েছেন। এলাকার বিধায়ক তৃণমূলের খগেশ্বর রায় থেকে সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য সকলেই স্বীকার করেছেন, এলাকাটি গরু পাচারকারীদের স্বর্গরাজ্য। যেখানে ওই চার জনকে পুড়িয়ে মারার ঘটনাটি ঘটেছে সেখান থেকে নিকটবর্তী ফুলবাড়ির বাংলাদেশ সীমান্তের দূরত্ব ৭ কিলোমিটার। গত ৬ মাসে শুধু আমবাড়ি ফাঁড়ি এলাকায় গরু পাচারের মামলা নথিভুক্ত হয়েছে ২০টিরও বেশি। এ ছাড়া নথিভুক্ত না হওয়া মামলা রয়েছে আরও অনেক বেশি। যদিও শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগ মোহন জানিয়েছেন তাঁর কাছে এই এলাকায় গরু পাচারের কোনও খবর নেই। তিনি বলেন, “এই এলাকায় গরু পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ নেই। তবে এই ঘটনায় কী ভাবে পাচারকারীরা জড়িয়ে পড়ল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এদিন নিহতদের বাড়িতে যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। তাঁকে গিরে বাসিন্দারা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। মন্ত্রীর সামনেই জাফরুলের স্ত্রী মালেকা বিবির অভিযোগ, রাতে কয়েকজন জাফরুলকে ডেকে নিয়ে যায়। মালেকা বিবি পুলিশকে সেই নাম জানিয়েছেন। এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই মন্ত্রীকে ঘিরে বলতে থাকেন, “তদন্তের আগেই কেন গরু পাচারকারী বলে নিহতদের বদনাম করার চেষ্টা হল?” এলাকার তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায় দাবি করেন, নিহতরা তাঁদের দলের সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। তাঁরা গরু পাচারকারী কোনও দলের সঙ্গে যুক্ত বলে কখনও পুলিশ অভিযোগ পায়নি। সকলেই দিনমজুর হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তা হলে কে বা কারা খুন করল? কেনই বা মৃতদেহগুলিকে পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করল? গৌতমবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নিজেও খোঁজখবর নিয়েছেন। তাঁর নির্দেশে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। খুনিদের যত দ্রুত সম্ভব ধরার জন্য পুলিশকে বলেছি।”
|