ফেসবুকে সরস্বতী চ্যাট করবেন ব্রহ্মা ও মহেশ্বরের সঙ্গে। অনলাইনে থাকবেন দুর্গা, রাম, কৃষ্ণ, লক্ষ্মী ও গণেশ। সরস্বতীর ফেসবুক ‘পেজ’-এ ফুটে উঠবে মা সারদা, যদুভট্ট, রামকিঙ্করের মতো জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের ছবি-সহ সংক্ষিপ্ত পরিচয়ও। বাঁকুড়ার কলেজ মোড়ের রয়্যাল বেঙ্গল ক্লাবের সরস্বতী পুজোর থিমই এ বার ফেসবুক। হঠাৎ ফেসবুক কেন? ক্লাবের সভাপতি সম্রাট দাসের কথায়, “ফেসবুক এখন মানুষের জীবনের একটা অঙ্গ হয়ে উঠেছে। কলেজ ক্যান্টিন, ফাঁকা ক্লাসরুম এমনকী রকে বসেও অনেককে মোবাইল, ট্যাব, ল্যাপটপ নিয়ে চ্যাট করতে দেখে আমরা অভ্যস্ত। তাই এই ভাবনা। নতুন এই ভাবনা মানুষের মন টানবে।”
সরস্বতী পুজোয় বাঁকুড়ার কলেজমোড় টেন্ট-এর থিমে উঠে আসবে শিল্পী যামিনী রায়ের চিত্র কলা। শিল্পীর আঁকা মহাভারত, রামায়ণ, শিবপুরাণ, বিষ্ণুপুরাণের চিত্রগুলিকে পটচিত্রের আকারে ফুটিয়ে তুলেছেন শিল্পী সুখেন কর্মকার। মণ্ডপের গায়ে থাকবে এই পটচিত্রগুলি। পাটপুরের নিউস্টার ক্লাবের থিম এবার ছৌ মুখোশ। খড়ের চালার কুটিরের কুটিরের ভিতরে থাকবেন দেবী সরস্বতী। যোগেশপল্লি মোড়ে নজর কাড়বে ফ্রেন্ডস-৫০ এর লক্ষ্মী ভাঁড়ের আদলে গড়া পাটের মণ্ডপ। শুধু বাঁকুড়া শহরই নয়, সরস্বতী পুজো উপলক্ষে সেজে উঠছে বিষ্ণুপুর ও খাতড়া মহকুমা শহরও। বিষ্ণুপুরের সানরাইজ ক্লাবের পুজোর এ বার ৫০ বর্ষে পড়ল। দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরের আদলে বাঁশের চাঁচের মণ্ডপ গড়া হচ্ছে। পুজো উপলক্ষে দু’দিন চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ঠান্ডায় জমে বরফ হয়েছিল নায়াগ্রা জলপ্রপাত। এই দৃশ্যটিকেই বিষ্ণুপুরের পোকাবাঁধে উপস্থাপিত করবে চকবাজারের মনমিলো ক্লাব। রসিকগঞ্জের মিলনী ক্লাবের পুজোয় থাকছে বাহারি আলোকসজ্জা। বিষ্ণুপুরের মলডাঙার বৈশাখী সঙ্ঘের পুজো এ-বার রজত জয়ন্তী বর্ষ। সে জন্য এলাকার মুক্ত মঞ্চে ক্লাবের পক্ষ থেকে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সোনামুখীর রাধামোহনপুর বটতলা পুজো কমিটি এলাকার কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা দেবে।
থিম পুজোয় পিছিয়ে নেই পুরুলিয়াও। জেলা শহরে পুজোর উদ্যোক্তারা বাগদেবীর পুজো ঘিরে তেমন ভাবে থিম নিয়ে মাথা না ঘামালেও, মফস্সল এলাকার বিভিন্ন পুজো কমিটি এ বার নানা থিমের পুজো করছে। ঝালদা ১ ব্লকের ইলুর শতবর্ষ প্রাচীন সরস্বতী ক্লাবের এ বারের ভাবনায় মহাকাব্য মহাভারত। ক্লাবের সম্পাদক বনমালি মাহাতো জানালেন, মহাভারতের বিভিন্ন ঘটনা মণ্ডপে তুলে ধরা হচ্ছে। তা ছাড়া নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান তো রয়েইছে। এখানকারই ভবানী ক্লাবের ভাবনায় কেদারনাথ। পুরুলিয়া শহরের চকবাজার মেছোগলি এলাকার অমর সঙ্ঘের পুজো মণ্ডপে গেলে ঢোলকপুর রাজ্যের মধ্যে পৌঁছে যাবেন দর্শকেরা। সঙ্ঘের সম্পাদক বলরাম ঘোষ বললেন, “এই পুজোয় দর্শকদের বড় অংশই তো খুদেরা। তাদের কথা মাথায় রেখেই এই ভাবনা।” পুরুলিয়া জগন্নাথ কিশোর কলেজের পুজোর ভাবনায় মহাকবি কালীদাস। এর পাশাপাশি পুরুলিয়া শহরের বিশিষ্ট আলোকচিত্রীদের ছবি নিয়ে একটি প্রদর্শনীও করা হচ্ছে কলেজে। |